বিএমইউতে প্রেসক্রিপশনে অননুমোদিত ওষুধ লিখলে শাস্তির বিধান রেখে নীতিমালা প্রণয়নের সুপারিশ
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৬ নভেম্বর ২০২৫, ০৪:৫২ PM
বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) চিকিৎসকদের ব্যবস্থাপত্রে অনিবন্ধিত এবং অননুমোদিত ওষুধ লিখলে শাস্তির বিধান রেখে নীতিমালা প্রণয়নের সুপারিশ করেছে সংশ্লিষ্ট কমিটি। আজ বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) বিএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলমের কাছে দেওয়া এক প্রতিবেদনে এই সুপারিশ করা হয়েছে।
বিএমইউ সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের বহু চিকিৎসক তাদের ব্যবস্থাপত্রে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর (ডিজিডিএ) কর্তৃক অননুমোদিত ও অনিবন্ধিত ওষুধ লিখে আসছেন। ফলে রোগীদের জীবন ঝুঁকির মুখে পড়ছে। এ সমস্যা নিরসনে মেডিকেল টেকনোলজি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আবু হেনা চৌধুরীকে প্রধান করে সম্প্রতি একটি কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কমিটিতে সদস্য হিসেবে আছেন ফার্মাকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান ডা. ইলোরা শারমিন, উপ-রেজিসন্ট্রার (আইন) ডা. আবু হেনা হেলাল উদ্দিন আহমেদ। কমিটির সদস্য সচিব সহকারী পরিচালক (আইন) অ্যাডভোকেট তানিয়া আক্তার।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসকদের ব্যবস্থাপত্রে অনিবন্ধিত ওষুধের অস্তিত্ব বিদ্যমান আছে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। এক্ষেত্রে কোনো ওষুধ, ভিটামিন, মিনারেল, সাপ্লিমেন্স ব্যবস্থাপত্রে প্রদান করা হলে আইনের ব্যত্যয় হয় কি-না, হলে আইনি প্রতিকার/শাস্তির বিধানসমূহ কি কি তা নির্ণয় করে প্রচলিত আইনের সামঞ্জস্য রেখে শাস্তির বিধানসহ নীতিমালা প্রণয়ন করার জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। প্রামাণ্য আইন হিসেবে ঔষধ ও কসমেটিকস আইন-২০২৩ এবং বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল আইন-২০১০ এর কথা উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
অন্যান্য সুপারিশের মধ্যে আরও রয়েছে- যে সকল ভিটামিন, মিনারেল সাপ্লিমেন্ট, হেলথ কেয়ার প্রোডাক্ট বিভিন্ন কোম্পানির মাধ্যমে বিদেশ থেকে বাংলাদেশে আমদানি হয়, সেসব পণ্য ডিজিডিএ ও বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) কোন প্রক্রিয়ায় যাচাই-বাছাই করে বাংলাদেশে ব্যবহারের বা বিক্রির পরামর্শ দিয়ে থাকে বা আদৌ এ ধরণের অনুমতি দেয় কিনা সেটা নিশ্চিত হতে পদক্ষেপ নেওয়া। এতে আরও বলা হয়, ডিজিডিএর ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে যে কোন চিকিৎসক সহজেই নিবন্ধিত ওষুধের তালিকা পেতে পারেন, সেই বিষয়ে আইটি সেকশনের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
প্রতিকার হিসেবে বিএমইউ বা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসকগণ ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর কর্তৃক অনুমোদিত নয় এমন অনিবন্ধিত ঔষধ রোগীদের প্রেসক্রিপশনে যেন না দেন, সে বিষয়ে সমগ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে লিফলেট ছাপিয়ে সকলের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির উদ্যোগ নেওয়া, সেমিনার, সিম্পোজিয়ামের মাধ্যমে সচেতনতা তৈরি করা, অনিবন্ধিত ঔষধ ব্যবস্থাপত্রে লিখলে শাস্তিসমূহ কি হতে পারে এই বিষয়ে প্রত্যেক চিকিৎসকগণকে সজাগ ও সচেতন করার সুপারিশও করা হয়।
এ ছাড়া বিএমইউ হাসপাতালের ইনডোর, আউটডোর, বিশ্ববিদ্যালয়ের সব প্রবেশদ্বারে বড় করে সাইনবোর্ড লাগানো, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেক বিভাগে চেয়ারম্যান বরাবর চিঠি প্রেরণ করা এবং ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর ও বিএসটিআই কর্তৃক নিবন্ধিত ঔষধের তালিকা প্রত্যেক বিভাগে ও আউটডোরে সরবরাহের বাবস্থা করার সুপারিশ করা হয়েছে।