বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য যেন এক স্বপ্নের দরজা খুলে দেয় ‘বিদেশে শিক্ষা’। আমাদের দেশে অসংখ্য প্রতিভাবান তরুণ–তরুণী আছেন, তারা জানেন, বৈশ্বিক মানের শিক্ষা, আধুনিক গবেষণা, প্রযুক্তিনির্ভর পরিবেশ এবং বহুসাংস্কৃতিক অভিজ্ঞতা অর্জনের সবচেয়ে কার্যকর উপায় হলো বিদেশে পড়াশোনা। দেশ-বিদেশের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের কাছে এটি শুধুই ডিগ্রি নয়। এটি স্বপ্ন, সম্ভাবনা এবং নিজের সীমানা প্রসারিত করার এক যাত্রা।
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, জার্মানি, নেদারল্যান্ডস, সুইডেন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, চীন, মালয়েশিয়া ইত্যাদি দেশ বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য বিস্তৃত সুযোগ তৈরি করেছে। এসব দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বিশ্ব র্যাংকিংয়ে শীর্ষে এবং গবেষণা, উদ্ভাবন ও প্রযুক্তিতে নেতৃত্ব দিয়ে আসছে। MIT, হার্ভার্ড, অক্সফোর্ড, কেমব্রিজ, টরন্টো, মেলবোর্ন, টোকিও, সিউল ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি কিংবা জার্মানির বিভিন্ন টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্ন দেখা আজ আর অবাস্তব নয়। বাংলাদেশের তরুণদের কাছে তা প্রতিদিনের বাস্তবে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশের অসংখ্য শিক্ষার্থী বিদেশে পড়াশোনা করছেন, অনেকেই তার প্রতিভার স্বাক্ষর রাখছেন।
বিদেশে উচ্চশিক্ষার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আকর্ষণ হলো স্কলারশিপ ও ফেলোশিপের সুযোগ। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা Fulbright, Chevening, Commonwealth, DAAD, MEXT, Orange Knowledge Program, SI Scholarship, Erasmus Mundus, Global Korea Scholarship, CSC (China), Australia Awards—এসব মর্যাদাপূর্ণ বৃত্তি নিয়মিতই অর্জন করছেন। এসব স্কলারশিপ শুধু টিউশন ফি নয়, বাসস্থান, স্বাস্থ্যবিমা, মাসিক ভাতা এবং গবেষণা সুবিধাও প্রদান করে। যার ফলে আর্থিক সীমাবদ্ধতা থাকা শিক্ষার্থীদের জন্য এক নতুন দিগন্ত খুলে দেয়।
বিদেশে পড়াশোনার ক্ষেত্রে সবচেয়ে জনপ্রিয় ধাপ হলো মাস্টার্স প্রোগ্রাম। এক থেকে দুই বছর মেয়াদি এসব প্রোগ্রামে গবেষণা, থিসিস ও উন্নতমানের কোর্সওয়ার্ক শিক্ষার্থীদের একাডেমিক ভিত্তিকে আরও দৃঢ় করে। যারা গবেষণাকে ভবিষ্যৎ জীবনের অংশ হিসেবে দেখতে চান, তাদের কাছে সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত পথ হলো পিএইচডি। যেখানে নতুন জ্ঞান সৃষ্টি, প্রকাশনা, ল্যাব–ভিত্তিক গবেষণা এবং বৈশ্বিক একাডেমিক নেটওয়ার্কের সুযোগ তৈরি হয়।
শুধু তাই নয়, কিছু বিশ্ববিদ্যালয় ফেলোশিপ ও রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্টশিপ-ও প্রদান করে, শিক্ষার্থীদের তা পড়ালেখার পাশাপাশি গবেষণা বা শিক্ষাদানে সম্পৃক্ত হওয়ার সুযোগ দেয়। এ অভিজ্ঞতা ভবিষ্যতে একাডেমিক, গবেষণা বা উচ্চপ্রযুক্তিখাতের পেশায় প্রতিষ্ঠা পেতে সাহায্য করে।
বিদেশে শিক্ষা একজন মানুষের দৃষ্টিভঙ্গিকে যেমন প্রসারিত করে, তেমনই তাকে বৈশ্বিক অঙ্গনের সঙ্গে সংযুক্ত করে। শিক্ষার্থীরা সেখানে বিভিন্ন দেশের মানুষের সঙ্গে দেখা করেন, নতুন সংস্কৃতি শেখেন, নিজের সক্ষমতা আবিষ্কার করেন এবং এক ধরনের আত্মবিশ্বাস তৈরি হয়। পরবর্তী জীবনে তা গভীরভাবে কাজে লাগে।
বাংলাদেশের তরুণরা এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি সচেতন, তথ্যপ্রবাহে দক্ষ এবং পরিকল্পনাবদ্ধ। ভিসা প্রসেস, ভর্তি–নিয়ম, আবেদন–কৌশল, IELTS–TOEFL প্রস্তুতি সবকিছু নিয়েই তারা আন্তরিক। বিদেশে শিক্ষা যেন তাদের জন্য এক আলোকিত দরজা, এ দরজা খুলে দেয় নতুন জীবন, নতুন জ্ঞান ও নতুন পৃথিবীর সম্ভাবনা।
বিদেশে পড়াশোনা মানে শুধু দূরের কোনো দেশে যাওয়া নয় বরং নিজের ভবিষ্যৎকে একটু বেশি বড় করে ভাবার সাহস। এ সাহসই আজ হাজারো তরুণের প্রেরণা হয়ে উঠেছে। দ্য ডেইলি ক্যাম্পাস তারুণ্যের স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে সাহস ও অনুপ্রেরণা দেয়; তথ্য দেয় ও পরামর্শও দেয়। ‘বিদেশে শিক্ষা’ বিভাগে একজন শিক্ষার্থী বিদেশে পড়াশোনার নানা তথ্য সহজেই পেতে পারেন।