তথ্যপ্রযুক্তির সহজলভ্যতায় মানুষের তথ্যপ্রাপ্তি যেমন সহজ হয়েছে, তেমনই বেড়েছে গুজব, ভুয়া তথ্য ও বিভ্রান্তিকর খবরের বিস্তার। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কোনো তথ্য সত্যি না মিথ্যা তা যাচাই না করেই অনেকেই শেয়ার করেন। এতে ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, এমনকি একটি দেশের সামাজিক স্থিতি ও নিরাপত্তা পর্যন্ত হুমকির মুখে পড়তে পারে। এ অবস্থায় সত্য ও মিথ্যার ব্যবধান নির্ধারণে সবচেয়ে কার্যকর ভূমিকা রাখে ফ্যাক্টচেক বা তথ্য যাচাই।
ফ্যাক্টচেক হলো এমন একটি সাংবাদিকতাগত প্রক্রিয়া, যেখানে কোনো দাবির সত্যতা প্রমাণের জন্য নিরপেক্ষভাবে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ, বিশ্লেষণ ও যাচাই করা হয়। এটি শুধু একটি নিউজ স্টাইল নয়, বরং আধুনিক গণমাধ্যমের নৈতিক দায়িত্বের অংশ। রাজনৈতিক বক্তব্য, ভাইরাল পোস্ট, ছবি-ভিডিও, বিজ্ঞাপন বা জনস্বার্থসংশ্লিষ্ট যেকোনো তথ্য যাচাইয়ের প্রয়োজন হলে ফ্যাক্টচেক সাংবাদিকতা সেখানে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।
ভুয়া তথ্য কেন বিপজ্জনক? কারণ, মিথ্যা বা গুজবভিত্তিক তথ্য মানুষের মাঝে ভীতি, ঘৃণা, সহিংসতা ও বিভাজন সৃষ্টি করতে পারে। নির্বাচন, মহামারি, অর্থনীতি বা আন্তর্জাতিক সম্পর্কের মতো সংবেদনশীল ক্ষেত্রে ভুয়া তথ্য জাতীয় নিরাপত্তাকেও ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। এজন্য উন্নত বিশ্বের গণমাধ্যম, গবেষণা সংস্থা ও সামাজিক প্ল্যাটফর্মগুলো ফ্যাক্টচেক ইউনিট পরিচালনা করে তথ্যকে বিশ্বস্ত রাখার চেষ্টা চালায়।
দ্য ডেইলি ক্যাম্পাস অনলাইন সাংবাদিকতার একটি দায়িত্বশীল প্ল্যাটফর্ম হিসেবে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ফ্যাক্টচেক বিভাগ পরিচালনা করে। এ বিভাগ ভাইরাল ভিডিও, ছবি, রাজনৈতিক বিবৃতি, ভর্তি-পরীক্ষা সংক্রান্ত গুজব, শিক্ষা–কর্মসংস্থান বিষয়ে ভুয়া সার্টিফিকেট বা প্রতারণামূলক বিজ্ঞপ্তি ইত্যাদি সব ধরনের তথ্য যাচাই করে পাঠকের কাছে নির্ভুল সত্য তুলে ধরতে কাজ করে।
ফ্যাক্টচেক প্রক্রিয়ার কিছু গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হলো: তথ্যের উৎস শনাক্ত ও যাচাই, সরকারি নথি, ডেটাবেস, গবেষণা বা নির্ভরযোগ্য সংবাদসূত্র মিলিয়ে দেখা, বিশেষজ্ঞ মতামত গ্রহণ (প্রয়োজনে), ছবি বা ভিডিওর ডিজিটাল ফরেনসিক বিশ্লেষণ, যাচাই–বাছাই শেষে পাঠকের কাছে স্পষ্ট সিদ্ধান্ত উপস্থাপন ইত্যাদি।
ফ্যাক্টচেক প্রক্রিয়ার ফলে পাঠকের মধ্যে তথ্যবোধ, সমালোচনামূলক চিন্তা ও সচেতনতা বৃদ্ধি পায়। শিক্ষার্থী, গবেষক, শিক্ষক, নীতিনির্ধারক—সবাই সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে নির্ভরযোগ্য তথ্য পেতে পারেন। তথ্যযুদ্ধের সময়ে ফ্যাক্টচেক শুধু সাংবাদিকতার একটি শাখা নয়; এটি সত্যের পক্ষে গণতান্ত্রিক অবস্থান। দ্য ডেইলি ক্যাম্পাস বিশ্বাস করে ভুয়া তথ্য প্রতিহত করা মানেই সামাজিক স্থিতি, নিরাপত্তা এবং সত্যের জয় নিশ্চিত করা। এজন্য ফ্যাক্টচেক বিভাগকে আরও গবেষণাধর্মী, প্রযুক্তিনির্ভর ও শক্তিশালী করার লক্ষ্য নিয়ে নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।