বাংলাদেশের প্রাণসম্পদ কী, এ প্রশ্নের জবাবে অনেকে বলবেন তরুণ সমাজের কথা। এ দেশের কোটি কোটি তরুণ-তরুণীই আমাদের প্রাণসম্পাদ। কেননা, তরুণরাই শক্তি, স্বপ্ন, সংগ্রাম এবং ভবিষ্যৎ গড়ার অদম্য এক সাহসের নাম। পৃথিবীর যেকোনো দেশের উন্নয়নের পেছনে তরুণদের অবদান সবচেয়ে বেশি। বাংলাদেশও ব্যতিক্রম নয়। পরিসংখ্যান বলছে, দেশে মোট জনসংখ্যার প্রায় এক-তৃতীয়াংশই তরুণ। সংখ্যায় তা ৫ কোটিরও বেশি।
বাংলাদেশে অধিকাংশ তরুণের পথ সবসময় মসৃণ নয়। অনেক তরুণই বেকারত্ব, আর্থিক চাপ, সামাজিক বাধা, পরিবারিক সমস্যাসহ নানা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হোন। বিশ্ববিদ্যালয় শেষে চাকরি পাওয়া অনেকের জন্য কঠিন বাস্তবতা। কেউ হতাশ হোন, কেউ সংগ্রাম করে আবার উঠে দাঁড়ান। তারপরও তরুণরাই সবচেয়ে বেশি স্বপ্ন দেখেন, সবচেয়ে বেশি পরিশ্রম করেন, আর সবচেয়ে বেশি সংগ্রামও করেন। তাদের স্বপ্ন নানা রঙের। কেউ সরকারি চাকরিজীবী হতে চান, কেউ বিজ্ঞানী হতে চান, কেউ ভালো সাংবাদিক, কেউ উদ্যোক্তা, কেউ শিক্ষক, কেউ শিল্পী, কেউ আবার বিশ্বমঞ্চে দেশের নাম উজ্জ্বল করতে চান। প্রযুক্তি, বিজ্ঞান, সাহিত্য, ক্রীড়া, উদ্যোক্তা উন্নয়ন সব ক্ষেত্রেই বাংলাদেশি তরুণদের চোখে আজ নতুন আলো, নতুন আশার দিগন্ত।
বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে পড়া তরুণদের ভাবনাচিন্তা আজ আরও পরিণত। তারা জানেন, বিশ্ব বদলে যাচ্ছে খুব দ্রুত। নতুন প্রযুক্তি, উদ্ভাবন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সবকিছুর সঙ্গে তাল মিলিয়ে নিজেকে দক্ষ ও যোগ্য করে তোলার চাপও আছে তাদের ওপর। পড়াশোনার পাশাপাশি তারা বিতর্ক, রোবটিক্স, গবেষণা, স্টার্টআপ, সামাজিক উদ্যোগ, পরিবেশ রক্ষা এসব নিয়েও ভাবছেন। অনেকে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনেই উদ্যোগ গ্রহণ করছেন, নতুন ব্যবসা শুরু করছেন, অ্যাপ তৈরি করছেন, গবেষণা প্রবন্ধ লিখছেন।
তরুণদের আবিষ্কার ও সাফল্যের গল্পও অনুপ্রেরণাদায়ী। কেউ বানাচ্ছেন কম খরচের সোলার গাড়ি, কেউ তৈরি করছেন স্মার্ট হুইলচেয়ার, কেউ আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি প্রতিযোগিতায় জিতে দেশের নাম তুলে ধরছেন। আবার কেউ সাহিত্য, সংগীত বা চিত্রকলায় নতুন ধারার কাজ করছেন। তাদের সৃজনশীলতা ও শ্রম আজ বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শক্তি।
বাংলাদেশের বিপুল সংখ্যক তরুণ-তরুণী মধ্যপ্রাচ্যসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন কাজ করছেন। বিদেশে কর্মরত শ্রমিকদের বা নাগরিকরা বাংলাদেশে বিপুল পরিমাণ রেমিট্যান্স পাঠান। এ অর্থ বাংলাদেশের অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ তাদের রেমিট্যান্সের ওপর অনেকখানি নির্ভরশলী।
সবমিলিয়ে, তরুণদের মধ্যে রয়েছে অসাধারণ মানবিকতা ও উদারতা। প্রাকৃতিক দুর্যোগে সহায়তা, রক্তদান, সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের পড়ানো, দেশের আন্দোলন-সংগ্রাম সব ক্ষেত্রেই তরুণদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তারুণ্য একটি দেশের সবচেয়ে বড় আশ্রয়, সবচেয়ে বড় শক্তি। বাংলাদেশের তরুণরা জ্বলে ওঠার জন্য প্রস্তুত। প্রয়োজন শুধু সঠিক দিকনির্দেশনা, মানসম্মত শিক্ষা, গবেষণার সুযোগ, কর্মসংস্থান এবং স্বাধীনভাবে চিন্তা-ভাবনার পরিবেশ।
দ্য ডেইলি ক্যাম্পাস যেন তারুণ্যেরই মুখচ্ছবি। দেশের তরুণ-তরুণীদের নানা সংবাদ, ফিচার, সাক্ষাৎকার এখানে গুরুত্বসহকারে প্রকাশ করা হয়। তুলে ধরা হয় তাদের সাফল্য ও সংগ্রামগাথাও। এ বিভাগের অন্যান্য উপবিভাগগুলো হলো ‘প্রতিযোগিতা ও পদক’, ‘সাফল্য’ ‘সংগ্রাম’, ‘স্বীকৃতি’, ‘পর্যটন ও ভ্রমণ’, ‘বিতর্ক’ ‘কুইজ’।