হাসপাতালে সংক্রমণ প্রতিরোধে বিএমইউকে সহায়তা দেবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠান
সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠান  © সংগৃহীত

সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়কে (বিএমইউ) প্রয়োজনীয় কারিগরি সহায়তা দেবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। মাল্টিমোডাল ইনফেকশন প্রিভেনশন অ্যান্ড কন্ট্রোল (আইপিসি) কৌশল বাস্তবায়নের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা সম্পর্কিত সংক্রমণ হ্রাস করা এবং রোগী ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তা উন্নত করতে এই সহায়তা দেওয়া হবে। এ লক্ষ্যে আজ বুধবার (২২ অক্টোবর) সমঝোতা স্মারক সই করেছে প্রতিষ্ঠান দুটি।

সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলমের কক্ষে এই স্মারক সই হয়। এতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষে স্বাক্ষর করেন সংস্থাটির বাংলাদেশ প্রতিনিধি ডা. আহমেদ জামশেদ মোহাম্মদ।

বিএমইউ জানিয়েছে, এই স্বাক্ষরের ফলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বিএমইউয়ের  ইনফেকশন প্রিভেনশন ও কন্ট্রোলের জন্য বা সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় টেকনিক্যাল সাপোর্ট দিবে। এই চুক্তির লক্ষ্য হল একটি মাল্টিমোডাল ইনফেকশন প্রিভেনশন ও কন্ট্রোল (আইপিসি) কৌশল বাস্তবায়নের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা সম্পর্কিত সংক্রমণ হ্রাস করা এবং রোগী ও স্বাস্থ্য কর্মীদের নিরাপত্তা উন্নত করা। এর সামগ্রিক উদ্দেশ্য হল স্বাস্থ্যসেবা সম্পর্কিত সংক্রমণ হ্রাস করার জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাথে প্রযুক্তিগত সহযোগিতার মাধ্যমে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সিস্টেমের মধ্যে সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ অনুশীলনগুলিকে শক্তিশালী করা। বিশেষ করে কারিগরি সহায়তা প্রদান, সক্ষমতা বৃদ্ধি ও প্রশিক্ষণ, পর্যবেক্ষণ, মূল্যায়ন, জ্ঞান ভাগাভাগি, প্রযুক্তিগত দক্ষতা বৃদ্ধি ও তদারকিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সহায়তা দেবে।

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বিএমইউ ভিসি অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলম বলেন, বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে অত্যন্ত সচেতন এবং কার্যকরী পদক্ষেপ নিয়েছে। সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে বিএমইউর একটি উচ্চ পর্যায়ে কমিটি রয়েছে, বার্ষিক বাজেটেও আলাদভাবে বরাদ্দ রাখা হয়েছে। সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে বিএমইউর শুধু এই বিশ্ববিদ্যালয়েই নয়; বরং দেশব্যাপী এই কার্যক্রমে একটি মডেল প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করতে প্রস্তুত।

তিনি বলেন, বর্তমানে বিএমইউ স্বাস্থ্যখাতে বিশেষ করে উচ্চতর মেডিকেল শিক্ষার গুণগত পরিবর্তনে অসামান্য অবদান রাখছে। ক্যান্সার চিকিৎসা, প্রতিস্থাপন চিকিৎসা কার্যক্রম, এনআইসিইউ সেবাসহ সামগ্রিক চিকিৎসাসেবায় বিরাট উন্নতি লাভ করছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে দেওয়া সম্ভাব্য সকল সুযোগ-সুবিধা বিএমইউকে দিলে এই বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা শিক্ষা, চিকিৎসাসেবা ও গবেষণায় আরো এগিয়ে যাবে।

অনুষ্ঠানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বাংলাদেশ প্রতিনিধি ডা. আহমেদ জামশেদ মোহাম্মদ বলেন, বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়কে সংক্রমণ প্রতিরোধ নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করা হবে। একই সাথে সেবার গুণগতমান বৃদ্ধিসহ বিএমইউকে সেন্টার ও অফ এক্সিলেন্স প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিদ্যমান সুযোগ সুবিধাসহ প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানেও সংস্থাটি আগ্রহী বলে তিনি উল্লেখ করেন।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, এই চুক্তির ফলে সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণে সহায়তা পাওয়া, বিশ্বব্যাপী ইনফেকশন প্রিভেনশন ও কন্ট্রোল মানদন্ডের সাথে সামঞ্জ্যপূর্ণ অভিজ্ঞতা লাভ করাসহ এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনফেকশন প্রিভেনশন ও কন্ট্রোল কার্যক্রমকে মডেল হিসেবে উন্নীত করা সম্ভব হবে এবং এই মডেল দেশের অন্যান্য মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালসহ স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানগুলিতেও অনুসরণযোগ্য হবে। অন্যকথায় বিএমইউ সংক্রমণ ও প্রতিরোধ নিয়ন্ত্রণে দেশব্যাপী নেতৃত্ব দেবে।

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বিএমইউর প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) ও ইনফেকশন কন্ট্রোল কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মো. আবুল কালাম আজাদ, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. মুজিবুর রহমান হাওলাদার, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. নাহরীন আখতার, বেসিক সায়েন্স ও প্যারাক্লিনিক্যাল সায়েন্স অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. সাইফ উল্লাহ মুন্সী, প্রিভেনটিভ অ্যান্ড সোশ্যাল মেডিসিন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মো. আতিকুল হক, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. মো. নজরুল ইসলাম, পরিচালক (হাসপাতাল) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবু নোমান মোহাম্মদ মোছলেহ উদ্দীন ও ইনফেকশন কন্ট্রোল কমিটির সদস্য সচিব ডা. কাজী আলী আফতাব প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।


সর্বশেষ সংবাদ