ফেনীর ফুলগাজীতে একমাত্র জিপিএ-৫ পাওয়া তানজিলীনা হতে চান আইনজীবী
- ফেনী প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১৮ অক্টোবর ২০২৫, ০১:৫৩ PM
ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার খালেদা জিয়া মহিলা কলেজের মেধাবী শিক্ষার্থী তানজিলীনা বিনতে তাজুল কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে অনুষ্ঠিত এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ অর্জন করে কৃতিত্বের সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়েছেন। জানা গেছে, উপজেলার মোট ৮২৯ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে তিনিই একমাত্র শিক্ষার্থী যিনি জিপিএ-৫ পেয়েছেন। মানবিক বিভাগের এ শিক্ষার্থী ভবিষ্যতে একজন সফল আইনজীবী হয়ে দেশের সেবা করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসের সঙ্গে আলাপকালে।
তানজিলীনার সাথে কথা বলে জানা গেছে, ফুলগাজীর মুন্সীরহাট আলী আজম স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এসএসসি পাস করেছিলেন। তখন প্রত্যাশিত ফল না পাওয়ায় আরও মনোযোগী হয়ে এইচএসসি পরীক্ষায় ভালো ফলের লক্ষ্য স্থির করেন। পারিবারিকভাবে মা-বাবার পূর্ণ সহযোগিতা পেয়েছেন তিনি, ছিল না গৃহস্থালির কোনো কাজের চাপ।
নিজের অনুভূতি প্রকাশ করে তানজিলীনা বলেন, এই ফলাফল আমার একার নয়, এর পেছনে মা-বাবা ও শিক্ষকদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও দোয়া রয়েছে। তাদের সহযোগিতাই আমাকে আজকের এই সাফল্যে পৌঁছে দিয়েছে।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা জানিয়ে তিনি আরও বলেন, এখন আমার লক্ষ্য একটি ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে সফল আইনজীবী হওয়া। ন্যায়ের পক্ষে থেকে দেশের মানুষের পাশে দাঁড়াতে চাই।
নারী শিক্ষার প্রসারে সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে এই শিক্ষার্থী বলেন, নারী শিক্ষার পথ সুগম করতে সমাজের প্রতিটি মানুষকে সচেতন হতে হবে। পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের সম্মিলিত প্রচেষ্টাতেই নারীরা শিক্ষার মূলধারায় আরও শক্তভাবে যুক্ত হতে পারবে। সরকার চাইলে নারী শিক্ষার সুযোগ ও সুবিধা আরও সম্প্রসারণের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নিতে পারে।
নিজের প্রতিষ্ঠানের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, খালেদা জিয়া মহিলা কলেজে ভর্তি হতে পেরে নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করি। নারী শিক্ষার অগ্রযাত্রায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার অবদানও অনস্বীকার্য।
তানজিলীনার বাবা সৈয়দ তাজুল ইসলাম স্বপন দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, মেয়ের সাফল্যে আমরা গর্বিত। আমি প্রবাসে থাকলেও তার পড়াশোনার প্রতি সবসময় মনোযোগ ছিল। তার ইচ্ছাশক্তি ও পরিশ্রমই এ সাফল্যের মূল চাবিকাঠি। আমার মেয়ে ন্যায় ও সত্যের পথে থেকে সমাজের জন্য কাজ করবে এমটিই চাই।
মা রাশেদা আক্তার দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, তানজিলীনাকে কখনো ঘরের কাজের জন্য চাপ দিইনি। পড়াশোনা যেন কোনোভাবে ব্যাহত না হয় সেটিই দেখেছি। সে নিয়মিত রাত ১২টা পর্যন্ত পড়াশোনা করেছে। মেয়েদের সুযোগ দিলে পারে—এ ফলাফল তারই প্রমাণ। সকলের কাছে আমার মেয়ের ভবিষ্যৎ জীবনের জন্য দোয়া চাই।
তানজিলীনার ছোট বোন তানজিম বলেন, আপু সবসময় খুব পরিশ্রমী ও মনোযোগী। ওর সাফল্যে আমরা সবাই গর্বিত। আপুর এই অর্জন আমাকে আরও অনুপ্রাণিত করেছে ভালোভাবে পড়াশোনা করতে। আমিও একদিন আপুর মতো ভালো ফল করে পরিবার ও শিক্ষকদের মুখ উজ্জ্বল করতে চাই।
আরও পড়ুন : কালো পতাকা হাতে নিয়ে শিক্ষকদের বিক্ষোভ মিছিল শুরু
এ বিষয়ে খালেদা জিয়া মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ আশিষ কুমার লোধ দ্য ডেইলি ক্যাম্পসকে বলেন, তানজিলীনা একজন মেধাবী ও পরিশ্রমী ছাত্রী। সে নিয়মিত ক্লাসে উপস্থিত থেকেছে এবং প্রতিটি পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করেছে। তার এই সাফল্যে আমরা গর্বিত। আশা করি, ভবিষ্যতে সে উচ্চশিক্ষা অর্জন করে সমাজ ও দেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।