হামফ্রে ফেলোশিপ: যুক্তরাষ্ট্রে সম্পূর্ণ বিনা মূল্যে ১০ মাস পড়াশোনার সুযোগ

পেশাজীবীরা যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চতর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে চাইলে আবেদন করুন হিউবার্ট এইচ হামফ্রে ফেলোশিপে
পেশাজীবীরা যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চতর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে চাইলে আবেদন করুন হিউবার্ট এইচ হামফ্রে ফেলোশিপে  © সংগৃহীত

বিদেশি পেশাজীবীদের জন্য যুক্তরাষ্ট্র সরকারের উদ্যোগে পরিচালিত হিউবার্ট এইচ হামফ্রে ফেলোশিপ কর্মসূচির ২০২৬-২৭ শিক্ষাবর্ষে আবেদন গ্রহণ শুরু হয়েছে। ১০ মাসের এ কর্মসূচিতে বেসরকারি সংস্থাসহ সরকারি ও বেসরকারি খাতের পেশাজীবীরা আবেদন করতে পারবেন। আবেদনের শেষ সময় ৩১ জুলাই ২০২৫।

ঢাকার আমেরিকান দূতাবাসের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, হামফ্রে কর্মসূচি প্রয়াত মার্কিন সিনেটর ও ভাইস প্রেসিডেন্ট হিউবা‍র্ট এইচ হামফ্রের স্মৃতি ও কৃতিত্বের প্রতি সম্মান জানাতে ১৯৭৮ সাল থেকে চালু করা হয়। হিউবার্ট এইচ হামফ্রে ফেলোশিপ কর্মসূচি যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অন্যতম ফুলব্রাইট কার্যক্রম। এর মাধ্যমে মেধাবী তরুণ ও মধ্য পর্যায়ের পেশাজীবীরা যুক্তরাষ্ট্রে ডিগ্রিবিহীন ১০ মাসের স্নাতক স্তরের শিক্ষা গ্রহণ, নেতৃত্বের উন্নয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে কাজের মাধ্যমে পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির সুযোগ পাবেন। এই কর্মসূচি ভবিষ্যতের নেতৃত্ব ও নীতিনির্ধারকদের যুক্তরাষ্ট্রের সমাজ, সংস্কৃতি ও পেশাগত ক্ষেত্রগুলোর সঙ্গে পরিচিত করার মাধ্যমে আমেরিকানদের সঙ্গে বিদেশি পেশাজীবীদের একটি স্থায়ী ও ফলপ্রসূ সম্পর্ক গড়ে তোলার ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।

এই ফেলোশিপের জন্য জনসেবায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ সরকারি কিংবা বেসরকারি খাতে কর্মরত পেশাজীবী প্রার্থীদের প্রতিযোগিতামূলক পদ্ধতিতে বাছাই করা হয়। ফেলোশিপ দেওয়া হচ্ছে মানব ও প্রাতিষ্ঠানিক সামর্থ্য, অধিকার ও স্বাধীনতা, টেকসই ভূমি ও সমৃদ্ধিশালী সম্প্রদায়—যার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে জনস্বাস্থ্য, ছোঁয়াচে রোগ ও শিক্ষা ব্যবস্থাপনায়।

সুযোগ-সুবিধা—

*সম্পূর্ণ টিউশন ফি প্রদান করবে;

*প্রয়োজন হলে প্রাক্‌-অ্যাকাডেমিক ইংরেজি ভাষা প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে;

*জীবনযাত্রার ব্যয় ভাতা;

*এককালীন সেটলিং ভাতা দেবে;

*দুর্ঘটনা ও অসুস্থতাজনিত ব্যয় ভাতা;

*বই কেনার খরচ প্রদান করবে;

*কম্পিউটার কেনার জন্য এককালীন ভাতা;

*বিমান ভ্রমণ ভাতা (প্রোগ্রামের জন্য যুক্তরাষ্ট্র থেকে আন্তর্জাতিক ভ্রমণ ও প্রয়োজনীয় প্রোগ্রাম ইভেন্টে অভ্যন্তরীণ ভ্রমণ); 

*ফেলোশিপের জন্য প্রয়োজনীয় পেশাদার উন্নয়ন ভাতা যেমন ফিল্ড ট্রিপ, পেশাদার পরিদর্শন ও সম্মেলন;

আরও পড়ুন: ফুলব্রাইট স্কলারশিপে শিক্ষকতার সুযোগ যুক্তরাষ্ট্রে, আবেদন করুন দ্রুতই

আবেদনের যোগ্যতা—

*আবেদনকারীকে বাংলাদেশি নাগরিক এবং আবেদন করা ও আবেদনপত্র বাছাইপ্রক্রিয়া চলাকালে বাংলাদেশে অবস্থান করতে হবে;

*দ্বৈত নাগরিক (বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র) কিংবা যুক্তরাষ্ট্রের স্থায়ী বাসিন্দা হওয়া যাবে না;

*আবেদনের সময় মেয়াদসহ বৈধ পাসপোর্ট থাকতে হবে;

*আবেদনকারীকে অবশ্যই তরুণ ও মধ্য পর্যায়ের নেতৃত্বশীল পদে থাকা পেশাজীবী হতে হবে, যার জনসেবায় দৃষ্টান্তমূলক কাজ ও পেশাগত জীবনে অগ্রগতির সম্ভাবনা রয়েছে;

*সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি সম্পন্ন করেছেন, এমন কেউ আবেদন করতে পারবেন না;

*পূর্ণকালীন শিক্ষার্থী হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কমপক্ষে চার বছরের শিক্ষা কার্যক্রম শেষ করার সনদ থাকতে হবে;

*বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি অর্জনের পর সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে ন্যূনতম পাঁচ বছর পূর্ণকালীন কাজ করার পেশাগত অভিজ্ঞতা থাকতে হবে (২০২৫ সালের আগস্টের আগে) এবং তাদের শিক্ষা ও কাজসংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রের নীতিগত দিকগুলোয় আগ্রহ থাকতে হবে; 

*শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কিংবা অ্যাকাডেমিক গবেষক এই ফেলোশিপের জন্য বিবেচিত হবেন না। তাদের অবশ্যই ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে (ব্যতিক্রম হিসেবে বিবেচিত হবেন যদি কেউ বিদেশি ভাষা হিসেবে ইংরেজি শেখানোর দায়িত্ব পালন করেন);

*২০২৬ সালের আগস্টের আগে সাত বছরের মধ্যে আবেদনকারী যুক্তরাষ্ট্রের কোনো স্নাতক স্কুলে এক শিক্ষাবর্ষ বা তার বেশি সময়ের জন্য লেখাপড়ায় অংশ নিয়ে থাকলে তিনি এই ফেলোশিপের জন্য অযোগ্য হবেন;

*২০২৬ সালের আগস্টের আগে পাঁচ বছরের মধ্যে ছয় মাসের বেশি সময় ধরে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করার অভিজ্ঞতা থাকলে তিনি এই ফেলোশিপের জন্য যোগ্য হবেন না;

*ইংরেজি লেখা ও কথা বলা উভয় ক্ষেত্রে দক্ষ হতে হবে এবং টোয়েফল স্কোর (ইন্টারনেটভিত্তিক) হতে হবে। প্রার্থীদের যাদের টোয়েফল স্কোরের বৈধ মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, তাদের নির্বাচনপ্রক্রিয়া শেষে টোয়েফল পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে (আমেরিকান সেন্টার কেবল নির্বাচিত প্রার্থীদের জন্য টোয়েফল পরীক্ষার ব্যবস্থা করবে। অত্যন্ত প্রতিশ্রুতিশীল প্রার্থীরা যদি টোয়েফলে কম স্কোর পান, তাহলে তাদের দীর্ঘমেয়াদি ইংরেজি প্রশিক্ষণের (এলটিই) জন্য মনোনীত করা হতে পারে);

*আবেদনকারীকে অবশ্যই ফেলোশিপের জন্য নির্ধারিত প্রয়োজনীয় অভিজ্ঞতা, দক্ষতা ও প্রতিশ্রুতি দেখানোর পাশাপাশি এ কথাও জানাতে হবে যে তিনি কীভাবে এই ফেলোশিপ থেকে উপকৃত হবেন, যা তিনি আগে কখনো হননি এবং হামফ্রে কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া ছাড়া এমন অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ তার নেই;

*ফেলোশিপ শেষ হওয়ার পর বাংলাদেশে ফিরে আসতে হবে;

আরও পড়ুন: স্কলারশিপে স্নাতকোত্তর-পিএইচডির সুযোগ অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে, বছরে উপবৃত্তি মিলবে ২৯ লাখ টাকা

আবেদন করবেন যেভাবে—

*হামফ্রে ফেলোশিপ কর্মসূচির জন্য একটি অনলাইন অ্যাপ্লিকেশন সিস্টেম ব্যবহার করা হয়। আগ্রহী প্রার্থীরা এখানে ক্লিক করে আবেদন করতে পারবেন। এই কর্মসূচি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে এখানে ক্লিক করুন।

*হিউবা‍র্ট এইচ হামফ্রে ফেলোশিপ প্রোগ্রামের আবেদনপত্র ব্যবহারের অনুমতি পেতে একজন আবেদনকারীকে অবশ্যই প্রথমে একটি আইআইই (IIE) অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে হবে। আবেদনকারীকে আবেদনপত্র পূরণের সব নির্দেশনা মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে।

*ফেলোশিপ সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে ই-মেইলে যোগাযোগ করা যেতে পারে। ই-মেইল dhakausexchanges@state.gov.


সর্বশেষ সংবাদ