সাজিদের মৃত্যুতে আবারও উত্তাল ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ডাক

প্রধান ফটকে তালা লাগিয়ে আন্দোলন করেন শিক্ষার্থীরা
প্রধান ফটকে তালা লাগিয়ে আন্দোলন করেন শিক্ষার্থীরা  © সংগৃহীত

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আল কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাজিদ আব্দুল্লাহর মৃত্যুর আবারও উত্তাল হয়ে উঠেছে ক্যাম্পাস। সাজিদের ময়নাতদন্তের প্রাথমিক প্রতিবেদনে গত ১৬ জুলাই (বুধবার) দিবাগত রাত আনুমানিক সাড়ে তিনটার দিকে তার মৃত্যুর তথ্য ছড়িয়ে পড়ার পর একে হত্যা বলে অভিহিত করে প্রশাসনের প্রহসনের প্রতিবাদে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন ও প্রশাসন ভবনের সামনে অবস্থানের ডাক দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। 

সোমবার (২১ জুলাই) বেলা সাড়ে তিনটার দিকে প্রধান ফটকে তালা লাগিয়ে আন্দোলন করেন শিক্ষার্থীরা। এতে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ছাত্রশিবির, ছাত্র ইউনিয়ন, জমিয়তে তালাবায়ে আরাবা, ছাত্র আন্দোলনসহ সব ক্রিয়াশীল সংগঠন সংহতি জানিয়েছে।

সন্ধ্যা সাতটায় সাজিদের রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনা হত্যা দাবি করে অতিদ্রুত দ্রুত তদন্ত ও বিচারের দাবিসহ ৯ দফা দাবি পেশ করে আন্দোলন থেকে সরে যান শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে আগামীকাল বেলা ১১টায় আবারও আন্দোলনের ডাক দেন এবং সব শিক্ষার্থীকে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন ও আন্দোলনে অংশগ্রহণের অনুরোধ করেন তারা।

আরও পড়ুন: বিমানটি স্কুল ভবনের এক পাশ দিয়ে ঢুকে অন্য পাশ দিয়ে বেরিয়ে যায়

এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘তুমি কে আমি কে, সাজিদ সাজিদ’, ‘প্রশাসনের টালবাহানা, চলবে না চলবে না’, ‘আমার ভাই মরলো কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘বাজেট নাই বাজেট নাই, বাজেট কী তোর বাপে খায়’, ‘সাজিদ ভাইয়ের বিচার চাই’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন।

শিক্ষার্থীদের পেশকৃত দাবিগুলো হলো ট্রাইবুনালের মাধ্যমে দ্রুত ও দৃষ্টান্তমূলক বিচার সম্পন্ন করতে হবে, ক্যাম্পাস বাদী হয়ে মামলা করবে এবং সাজিদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিবে, মামালার তদন্তের ভার পিবিআইকে দিতে হবে,অধিকতর তদন্ত ও সাজিদ হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত অন্যান্য প্রশ্নের সমাধানের জন্য বিচার বিভাগীয় তদন্ত করতে হবে, সম্পূর্ণ ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে এবং ক্যাম্পাসের আনাচেকানাচে ও প্রতি হলের প্রতি ফ্লোরে সিসি ক্যামেরা লাগাতে হবে, নিরাপত্তা প্রশাসনের পরিপূর্ণ নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে স্পষ্ট বিবৃতি দিবে এবং ক্ষমাপ্রার্থনা করতে হবে ও ভিসেরা রিপোর্ট দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রদানের তাগিদ দিতে হবে।

আরও পড়ুন: দগ্ধ হয়ে মৃত্যুর মিছিল, হতাহতের সংখ্যা বাড়ার আশঙ্কা

উপাচার্যের রুটিন দায়িত্বে থাকা উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এয়াকুব আলী বলেন, ‘তদন্তের বিষয়টি পুলিশের ওপর বর্তায়। আর যেহেতু তার বাবা একটি মামলা করেছে। তাই এ বিষয়ে পুনরায় মামলা করার পরিকল্পনা নেই। আমরা তার পরিবারের করা মামলায় সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবো। অন্যান্য বিষয়গুলো নিয়েও আমরা বসে সিদ্ধান্ত নেব।’

প্রসঙ্গত, গত ১৭ জুলাই (বৃহস্পতিবার) বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে শাহ আজিজুর রহমান হলসংলগ্ন পুকুরে সাজিদ আব্দুল্লাহর মরদেহ ভেসে থাকতে দেখে শিক্ষার্থীরা। পরে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় নিরাপত্তা কর্মকর্তা ও ইবি থানা পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতিতে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। সাজিদ বিশ্ববিদ্যালয়ের আল কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি শহীদ জিয়াউর রহমান হলের ১০৯ নম্বর রুমে থাকতেন। তার বাড়ি টাঙ্গাইল জেলার ঘাটাইল উপজেলায়।


সর্বশেষ সংবাদ