যুক্তরাষ্ট্র-জার্মানি থেকে ১৪ কার্গো বিমানে অস্ত্র এলো ইসরায়েলে
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ২১ জুন ২০২৫, ১০:৪৩ AM , আপডেট: ২১ জুন ২০২৫, ০৮:১৮ PM
ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের সাম্প্রতিক সামরিক অভিযানের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানি থেকে নতুন করে আরও ১৪টি সামরিক কার্গো বিমান পৌঁছেছে দেশটিতে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। এসব কার্গো বিমানে রয়েছে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা জোরদারের জন্য অত্যাধুনিক সামরিক সরঞ্জাম, এটি মূলত ইরানের পাল্টা ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা প্রতিরোধে ব্যবহৃত হচ্ছে।
তবে নতুন এই চালান কেবল সাম্প্রতিক যুদ্ধের প্রতিক্রিয়া নয়। গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর থেকেই যুক্তরাষ্ট্রসহ মিত্র দেশগুলো থেকে ধারাবাহিকভাবে বিপুল পরিমাণে অস্ত্রশস্ত্র সরবরাহ করা হচ্ছে। মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, অক্টোবর ২০২৩ থেকে এ পর্যন্ত মোট ৮০০টিরও বেশি সামরিক কার্গো বিমান ইসরায়েলে অবতরণ করেছে।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, ‘এই চালানগুলো যুদ্ধের লক্ষ্য অর্জন এবং ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর প্রস্তুতি ও মজুদ শক্তিশালী করার উদ্দেশ্যে পাঠানো হয়েছে।’ এসব চালানের অধিকাংশই এসেছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে, কিছু অংশ এসেছে জার্মানি থেকে।
আরও পড়ুন: ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে কোন দেশ কার পক্ষে?
সবচেয়ে সাম্প্রতিক চালানটি পৌঁছেছে ১৯ জুন। এতে রয়েছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি ব্যবস্থার জন্য গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ। মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই সামরিক সরঞ্জামগুলো সংগ্রহ ও বিতরণের প্রক্রিয়ায় কাজ করছে যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানিতে অবস্থিত ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা ক্রয় দল, সেনাবাহিনীর পরিকল্পনা ও গঠন বিভাগ এবং ইসরায়েলি বিমানবাহিনী।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র এরই মধ্যে ইসরায়েলকে সহযোগিতা করতে অঞ্চলজুড়ে যুদ্ধজাহাজ, ফাইটার জেটসহ নানা রকম সামরিক সহায়তা পাঠিয়েছে।
মিডিলিস্ট আই এক প্রতিবেদনে জানায়, ১৪ জুন ইরানে হামলার আগে যুক্তরাষ্ট্র গোপনে প্রায় ৩০০টি হেলফায়ার ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করে ইসরায়েলকে। গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যা শুরুর পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সরবরাহ করা অস্ত্র ও সামরিক উপকরণের পরিমাণ ইতোমধ্যেই ৯০,০০০ টন ছাড়িয়েছে।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি ২০ জুন এক বক্তব্যে বলেন, ‘ইসরায়েলের এই আগ্রাসনে যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি না থাকলেও, তারা কার্যত অংশীদার।’ এর মধ্যে নতুন করে আলোচনায় এসেছে যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, ইরানের সঙ্গে সম্ভাব্য আলোচনার উপর নির্ভর করে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে তিনি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।
তবে হিব্রু গণমাধ্যমগুলোর দাবি, ট্রাম্প হয়তো ইরানকে বিভ্রান্ত করার কৌশল হিসেবে সময়ক্ষেপণের কথা বলছেন। এমনকি তিনি সরাসরি যুদ্ধে নামার প্রস্তুতিও নিতে পারেন। ট্রাম্পের লক্ষ্য হতে পারে ইরানের গুরুত্বপূর্ণ পরমাণু স্থাপনাগুলো।
এদিকে, জাতিসংঘে ইরানের স্থায়ী প্রতিনিধি ১৮ জুন এক বিবৃতিতে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি সরাসরি যুদ্ধে নামে, তবে ইরানও কঠোর প্রতিক্রিয়া জানাবে। তিনি হুঁশিয়ার করেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যে অবস্থিত সব মার্কিন ঘাঁটিই ইরানের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হবে।’