স্মৃতির গল স্টেডিয়ামে সেই মুশফিক, সামনে শততম টেস্টের হাতছানি

ব্যাটিংয়ে দেখা গেল এক চনমনে ও প্রাণবন্ত মুশফিক
ব্যাটিংয়ে দেখা গেল এক চনমনে ও প্রাণবন্ত মুশফিক  © ফাইল ফটো

গল আন্তর্জাতিক স্টেডিয়াম—সমুদ্রতট ঘেঁষা এই ভেন্যু বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে একটি আবেগঘন অধ্যায়ের নাম। ২০১৩ সালে এখানেই বাংলাদেশের টেস্ট ইতিহাসে লেখা হয়েছিল গর্বের একটি অধ্যায়। গলেই দেশের প্রথম ব্যাটার হিসেবে টেস্টে ডাবল সেঞ্চুরি করেছিলেন মুশফিকুর রহিম। লাল-সবুজের হয়ে ৬৩৮ রানের পাহাড়সম ইনিংস সেই সময় হয়ে উঠেছিল বিস্ময় ও গর্বের প্রতীক।

বাংলাদেশের ক্রিকেটের সঙ্গে জড়িয়ে যাওয়া সেই গল স্টেডিয়ামে শুরু হয়েছে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা প্রথম টেস্ট। প্রথম দিনে ৬৬ রানে ব্যাটিং করছেন মুশফিকুর রহিম, যখন তিনি ব্যাটিং করছেন, তখন ঠিকই স্মৃতিতে ভাসবে তার প্রথম ডাবল সেঞ্চুরির কথা। 

বছর পেরিয়ে গেছে এক যুগেরও বেশি। তবে গলের সেই স্মৃতি আজও টাটকা। আর সেই স্মৃতির শহরে আবার ফিরেছেন মুশফিক। বয়স এখন ৩৮। কিন্তু ব্যাটিংয়ে দেখা গেল এক চনমনে, প্রাণবন্ত মুশফিককে—যেন বয়সটা কেবল সংখ্যা।

তবে এবারের সফরে গলের নস্টালজিয়ার পাশাপাশি মুশফিকের সামনে দাঁড়িয়ে ক্যারিয়ারের এক নতুন চ্যালেঞ্জ—শততম টেস্ট ম্যাচের মাইলফলক। চলতি বছর নভেম্বরে ঘরের মাঠে আয়ারল্যান্ড সিরিজেই তার শততম টেস্ট খেলার সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু দলের এক সূত্র জানায়, এই অর্জন কেবল স্মৃতির ভরসায় পাওয়া যাবে না, প্রয়োজন নিয়মিত রান এবং ফর্ম ধরে রাখা।

মুশফিকুর রহিম বর্তমানে ৯৫টি টেস্ট ম্যাচ খেলেছেন এবং ১০০ টেস্ট খেলার মাইলফলক স্পর্শ করতে তার আর ৫টি টেস্ট ম্যাচ দরকার। আশা করা যায়, এ বছরই তিনি ফর্মে থাকলে মাইলফলক স্পর্শ করতে পারবেন।

দলের প্রধান কোচ ফিল সিমন্স জানালেন, তিনি মুশফিকের ওপর কোনো বাড়তি চাপ দিতে চান না। বরং খেলাটি যেন উপভোগ করেন, সেটিই চান এই ক্যারিবীয় কোচ। তিনি বলেন, “আমি চাই, ও যেন খেলা উপভোগ করে। ২০১৩ সালের ইনিংসটা দেখার সময়ও ওকে খুব উপভোগ করতে দেখেছি। এবারও ওকে সেরকম খেলতে দেখতে চাই—অতিরিক্ত কিছু চাই না।”

কিন্তু বাস্তবতা হলো, দলে তরুণদের উত্থান চোখে পড়ার মতো। আমিত হাসান, মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনদের মতো তরুণরা দলে জায়গা করে নেওয়ার জন্য শক্তভাবে লড়ছেন। এমন বাস্তবতায় শুধু পুরোনো কীর্তি নয়, চলমান ফর্মই হতে পারে মুশফিকের টিকিট শততম টেস্টের মাইলফলকে।

গল, যেখানে এক সময় শুরু হয়েছিল মুশফিকের কিংবদন্তি হয়ে ওঠার গল্প, এবার সেই গলেই শুরু হতে পারে তার ক্যারিয়ারের শেষ অধ্যায়ের সবচেয়ে মর্যাদার অধ্যায়। তবে সে অধ্যায়ের নাম লেখার দায়িত্ব এখন মুশফিকের ব্যাটের হাতে—স্মৃতি নয়, সাফল্য দিয়ে।

 

 


সর্বশেষ সংবাদ