রোকেয়াকে ‘মুরতাদ’ বলায় রাবি শিক্ষকের অপসারণ দাবি মানবাধিকার সংগঠনগুলোর
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:৪৬ PM
নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনকে ‘মুরতাদ-কাফির’ আখ্যায়িত করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের দেওয়া বিদ্বেষমূলক মন্তব্যের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক), বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ ও নারীপক্ষসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন। বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) আলাদা বিবৃতিতে সংগঠনগুলো বলেন, উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একজন শিক্ষক দ্বারা এ ধরনের ঘৃণা–উসকানিমূলক বক্তব্য রাষ্ট্রীয় আইন, মানবাধিকার মানদণ্ড ও পেশাগত নীতিবোধের চরম লঙ্ঘন।
৯ ডিসেম্বর রোকেয়া দিবসে রাবির পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মাহমুদুল হাসান তার ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে সমাজসংস্কারক রোকেয়াকে ‘মুরতাদ-কাফির’ বলে আখ্যা দেন। এর পরপরই ব্যাপক ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
আসক তাদের বিবৃতিতে উল্লেখ করে, বেগম রোকেয়া শুধু ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্ব নন, বরং বাঙালি নারী জাগরণের ভিত্তি। তাঁকে নিয়ে বিদ্বেষপূর্ণ মন্তব্য নারীর মর্যাদায় আঘাত এবং সমাজে বিভাজন সৃষ্টির এক অপচেষ্টা। একজন শিক্ষক হিসেবে দায়িত্বজ্ঞানহীন ও নারীবিদ্বেষী বক্তব্য দেওয়া একাডেমিক নৈতিকতার পরিপন্থী বলেও মন্তব্য করেছে সংগঠনটি।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ তাদের বিবৃতিতে অবিলম্বে ওই শিক্ষকের অপসারণের দাবি জানায়। তারা বলেন, রোকেয়ার প্রগতিশীল আদর্শ আজও নারীর অগ্রযাত্রার প্রেরণা। তাই নারী–প্রগতিবিরোধী গোষ্ঠী তাকে ভয় পায়। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক পরিচয়ের আড়ালে এমন অপপ্রচার তুলে ধরছেন, তিনি শিক্ষকতার নৈতিক যোগ্যতা হারিয়েছেন।
সংগঠনটি আরও জানায়, রাষ্ট্র যখন রোকেয়াকে সম্মান জানিয়ে রোকেয়া দিবস পালন ও রোকেয়া পদক প্রদান করছে, তখন এমন বক্তব্য রাষ্ট্রীয় নীতির বিরোধী এবং নারী অগ্রযাত্রা ব্যাহত করার ষড়যন্ত্র।
নারী অধিকার সংগঠন নারীপক্ষ তাদের বিবৃতিতে বলেন, বেগম রোকেয়া কখনোই ধর্মবিদ্বেষী ছিলেন না; বরং কুসংস্কার, বৈষম্য ও অজ্ঞতার বিরুদ্ধে আজীবন লড়েছেন। কাউকে হেয় করার জন্য ধর্মীয় শব্দ ব্যবহার করা সংকীর্ণ মানসিকতার পরিচয় বলে মন্তব্য করে তারা।
নারীপক্ষ আরও জানায়, নারী–পুরুষ নির্বিশেষে যে কারও প্রতি অসম্মানজনক বক্তব্য গ্রহণযোগ্য নয় এবং এই মন্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায় সংগঠনটি।