‘ব্যর্থতা, হতাশা অন্ধকারে নিয়ে যায়’—মৃত্যুর আগে চিরকুটে চবি শিক্ষার্থী
- চবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০১:০৬ AM
চট্টগ্রাম নগরীর খুলশী এলাকায় একটি বাসা থেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) এক শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (০৪ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে আটটার দিকে সিলিং ফ্যানের জন্য রাখা হুকের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
মৃত্যুবরণকারী ওই শিক্ষার্থীর নাম ওমর ফারুক সুমন। তিনি আরবি বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার মরদেহের পাশে কিছু চিরকুট পাওয়া গেছে। যেগুলোতে হতাশামূলক কয়েকটি বাক্য লেখা ছিল।
স্থানীয় সূত্র ও পারিবারিক সদস্যদের বরাতে জানা যায়, সুমন খুলশীর ৫ নম্বর লেনের ১৭ নম্বর বাসায় তার মামার বাসায় থাকতেন। তার সঙ্গে সেখানে থাকতেন তার বড় ভাইও। দুই দিন আগে সুমনের মামা পুরো পরিবার নিয়ে তুরস্কে বেড়াতে যান। বাসায় সুমন এবং তার বড় ভাই—এই দুজনই ছিলেন। বিকেল ৪টার দিকে তিনি বড় ভাইকে ফোন দিয়ে জানতে চান—‘তুমি কোথায়, বাসায় আসতে কতক্ষণ লাগবে?’
বড় ভাই জানান, তার আসতে একটু দেরি হবে। এর কিছুক্ষণ পর বড় ভাই সুমনকে ফোন করলে তিনি আর ফোন রিসিভ করেননি। পরে বাড়ি থেকে তার মা ফোন দিয়ে যোগাযোগ করতে না পেরে বিষয়টি বড় ভাইকে জানান। এতে উদ্বেগ দেখা দিলে বড় ভাই বিল্ডিংয়ের দারোয়ানকে দিয়ে বাসা চেক করান। দারোয়ান কলিংবেল বাজিয়েও কোনো সাড়া না পেয়ে বড় ভাইকে জানালে তিনি দ্রুত বাসায় এসে দরজা খুলে সুমনকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। ঘটনার পর পুলিশ এসে দড়ি কেটে মরদেহ নিচে নামায়।
এদিকে, সুমনের মরদেহের পাশে দুইটি চিরকুট ও ডায়েরিতে লেখা বার্তা পাওয়া গেছে। একটি চিরকুটে তিনি লিখেছেন, ‘আমি সুমন, ওমর ফারুক সুমন। আমার কোনো আশা–আকাঙ্ক্ষা নেই। আর আমার কারো প্রতি কোনো অভিযোগ নেই। সবাই ভালো থাকবেন’।
আরেকটি চিরকুটে তিনি লেখেন, আমার সব অভিযোগ আমার নিজের প্রতি। তাই, আমার ব্যাপারে জানার চেষ্টা না করাটাই ভালো হবে।
এর আগে, গত ১ ডিসেম্বর (সোমবার) এক ডায়েরিতে সুমন লেখেন, 'আশাই জীবন আশাই মরণ, ব্যর্থতা, হতাশা- অন্ধকারে নিয়ে যায়'।
পুলিশ প্রাথমিকভাবে এ ঘটনাকে আত্মহত্যা বলে ধারণা করছে বলে জানা গেছে। ময়না তদন্তের জন্য পুলিশ মরাদেহটি চট্টগ্রাম মেডিকেলে কলেজ (চমেক) হাসপাতালে প্রেরণ করেছে বলে জানা গেছে।