ঢাবির স্টুডেন্ট সাপোর্ট ইউনিট
তিন বছরে মাত্র ৩৪৫ শিক্ষার্থীর অন-ক্যাম্পাস খণ্ডকালীন চাকরির ব্যবস্থা
- ২-৩ মাসের জন্য চাকরির সুযোগ পান তারা।
- ৩৭ হাজার শিক্ষার্থীর শতবর্ষী বিশ্ববিদ্যালয়ে পর্যাপ্ত সুবিধা নিয়ে সাপোর্ট ইউনিট গড়ে না উঠা দুঃখজনক বলে অভিমত অংশীজনদের।
- মো. জাফর আলী
- প্রকাশ: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০১:২৩ PM , আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০২:০৪ PM
ছুটির দিনে শিক্ষার্থীদেরকে বিভিন্ন খণ্ডকালীন কাজের সুযোগ দিতে ২০২২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্টুডেন্ট প্রমোশন অ্যান্ড সাপোর্ট ইউনিট। লক্ষ্য ছিল- শিক্ষার্থীদের বাস্তব কর্মক্ষেত্রের সাথে সংযোগ ঘটিয়ে ও প্রশিক্ষণ দেওয়া। যার ফলে শিক্ষার্থীরা হয়ে উঠবেন জাতীয়-আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিয়োগযোগ্য দক্ষ ও অভিজ্ঞ মানবসম্পদ।
এ ইউনিটের মাধ্যমে পড়াশোনার পাশাপাশি কাজ করতে পেরে নির্দিষ্টসংখ্যক শিক্ষার্থী খানেকটা সুফলও পেয়েছেন। তবে এ সুফলকে ৩৭ হাজার শিক্ষার্থীর বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ‘অপর্যাপ্ত’ বলছেন সংশ্লিষ্টরা। কারণ, শিক্ষার্থীদের বিরাট একটা অংশই মধ্যবিত্ত বা নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে আসা।
আর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন, ৮৩ বিভাগ, ১৩ ইনস্টিটিউট ও ৫৬টি রিসার্স সেন্টারসহ নানা অফিসে সুযোগ থাকলেও এক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতা দেখা যাচ্ছে। অন্যদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ে অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের সংখ্যা বিবেচনায় সম্মানী বৃদ্ধি, ইউনিটের ফান্ডিং এবং পরিধি বাড়িয়ে আরও পর্যাপ্তসংখ্যক শিক্ষার্থীকে অন্তর্ভুক্ত করার জোর দাবি উঠেছে।
তাছাড়া, শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যেই পার্ট টাইম জবের বিষয়টিতে সীমাবদ্ধ না থেকে গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন হওয়ার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদেরকে যোগ্যতাসম্পন্ন করে গড়ে তুলে বিভিন্ন দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠানে স্থায়ী চাকরির ব্যবস্থার দাবিও জানাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।
তবে স্টুডেন্ট প্রমোশন অ্যান্ড সাপোর্ট ইউনিটের পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতার কথা জানানো হয়েছে। তারা বলছেন, নানা সীমাবদ্ধতার কারণে চাইলেই বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থীকে তাদের প্রজেক্টে যুক্ত করা যাচ্ছে না। তবে তারা সাধ্যের মধ্যে এর কার্যক্রম ও পরিধি আরও বাড়ানোর চেষ্টা করছেন।
‘পড়াশোনা করাবস্থায় শিক্ষার্থীদেরকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ করে গড়ে তুলে গ্র্যাজুয়েশন কমপ্লিট হওয়ার পর তাদের যোগ্যতা অনুযায়ী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরি নিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করলে আরও ভাল হত। তাছাড়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের এতবেশি শিক্ষার্থীর জন্য এমন স্বল্প পরিসরের কাজ অপর্যাপ্ত বলে মনে করি।’ - শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতিষ্ঠার পর থেকে তিন বছরে এ পর্যন্ত স্টুডেন্ট প্রমোশন অ্যান্ড সাপোর্ট ইউনিটের মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগীয় সেমিনার লাইব্রেরি এবং বিভিন্ন অফিসে মোট ৩৪৫ জন শিক্ষার্থী (২-৩ মাসের মেয়াদে ৫০-৬০ জন করে) খণ্ডকালীন কাজ করার সুযোগ পেয়েছেন। এক্ষেত্রে বিভাগ বা ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান বা পরিচালকের সুপারিশের মাধ্যমে যেসব শিক্ষার্থীদের নামের তালিকা আসে তাদেরকে শুধু বিভাগীয় সেমিনার লাইব্রেরিতে খণ্ডকালীন কাজের জন্য নির্ধারণ করা হয়।
অন্যদিকে, ইউনিট অফিসে সরাসরি যারা আবেদন করেন তাদেরকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরেই অন্যান্য অফিসের জন্য নির্ধারণ করা হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ পর্যন্ত ইউনিটে সরাসরি আবেদন করেছেন প্রায় ৭০০ শিক্ষার্থী। যাদের অধিকাংশকে সুযোগ দিতে পারেনি এ ইউনিট।
আর নির্বাচিত শিক্ষার্থীরা ২ থেকে ৩ মাসের মেয়াদে ও দৈনিক ৫০০ টাকা সম্মানীর বিনিময়ে সেমিনার লাইব্রেরি ছাড়া সংশ্লিষ্ট কিছু অফিসে সুবিধা অনুযায়ী সময়ে কাজ করে থাকেন। এসব অফিসের মধ্যে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের অফিস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ন্যানোপ্রযুক্তি সেন্টার, অফিস অফ দ্যা ইন্টারন্যাশনাল এ্যাফেয়ার্স, স্টুডেন্ট প্রমোশন অ্যান্ড সাপোর্ট ইউনিট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রিসার্চ কো-অর্ডিনেশন অ্যান্ড মনিটরিং সেল (ডিইউআরসিএমসি), রেজিস্ট্রার, জনসংযোগ এবং কোষাধ্যক্ষ অফিস উল্লেখযোগ্য।
আরও জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদেরকে দক্ষ করে গড়ে তোলার জন্য ইফেক্টিভ কমিউনিকেশন স্কিলস, ইফেক্টিভ কমিউনিকেশন স্কিলস অ্যান্ড ক্যারিয়ার এক্সপ্লোরেশন, স্কিল ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড ক্যারিয়ার প্লানিং এবং ক্যারিয়ার প্লানিং বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করছে স্টুডেন্ট প্রমোশন অ্যান্ড সাপোর্ট ইউনিট।
আরও পড়ুন: ব্যালট ছাপানোর স্থান বা সংখ্যা সুষ্ঠু নির্বাচনকে প্রভাবিত করে না: ঢাবি উপাচার্য
এর আগে, ২০২২ সালে প্রতিষ্ঠিত হলেও ২০২৩ সালের ৪ অক্টোবর টিএসসিতে স্টুডেন্ট প্রমোশন অ্যান্ড সাপোর্ট ইউনিটের উদ্বোধন করা হয়। এদিন এর সাথে ৪টি কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। প্রতিষ্ঠানগুলো হল- ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ডিপিডিসি), সীমান্ত ব্যাংক লিমিটেড, এক্সপো হোল্ডিংস্ (বিডি) লিমিটেড এবং এসইবিপিও সার্ভিকইঞ্জিন লিমিটেড। এ সমঝোতা অনুযায়ী ঢাবির মেধাবী ও আর্থিকভাবে অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের বৃত্তি ও প্রশিক্ষণ প্রদান, খণ্ডকালীন কাজের সুযোগসহ বিভিন্ন ধরনের সহায়তা দেয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করা হয়। কিন্তু সেটা শুধু অঙ্গীকারেই সীমাবদ্ধ রয়েছে, বাস্তবতার দেখা মেলেনি।
‘ইউনিট প্রতিষ্ঠার শুরু থেকে প্রথম ৭-৮ মাস আমি উপদেষ্টা হিসেবে ছিলাম। এক পর্যায়ে ফান্ডিং সমস্যাসহ বেশকিছু কারণে আমি উপাচার্য স্যারকে জানালাম যে, আমি থাকতে পারছি না। তখন শরীয়ত স্যারকে দায়িত্ব দেওয়া হল’ - সাবেক উপদেষ্টা, স্টুডেন্ট প্রমোশন অ্যান্ড সাপোর্ট ইউনিট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
নিজের মতামত জানিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী আব্দুল খালেক দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমি শুনেছি শিক্ষার্থীদের পার্টটাইম জব দেওয়া এবং স্কিল বাড়ানোর জন্য টিএসসিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা ইউনিট কাজ করছে। এ উদ্যোগকে আমার কাছে ইতিবাচকই মনে হচ্ছে। তবে পড়াশোনা করাবস্থায় শিক্ষার্থীদেরকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ করে গড়ে তুলে গ্র্যাজুয়েশন কমপ্লিট হওয়ার পর তাদের যোগ্যতা অনুযায়ী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরি নিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করলে আরও ভাল হত। তাছাড়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের এতবেশি শিক্ষার্থীর জন্য এমন স্বল্প পরিসরের কাজ অপর্যাপ্ত বলে মনে করি। আর যারা এ ইউনিটে যুক্ত হয়ে কাজ করছেন বা করবেন তাদের সম্মানী বাড়ালে এবং আরও প্রয়োজনীয়সংখ্যক শিক্ষার্থীকে অন্তর্ভুক্ত করলে পুরোপুরি সুফল পাওয়া যেত বলে মনে হয়।
তবে সুফলভোগী শিক্ষার্থীরা স্টুডেন্ট প্রমোশন অ্যান্ড সাপোর্ট ইউনিটে যুক্ত হয়ে বেশ সন্তোষ্ট। তাদের মধ্যে একজন হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি বিভাগের শিক্ষার্থী আশীষ পাল। তিনি সাপোর্ট ইউনিটের প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থী হিসেবে খণ্ডকালীন চাকরির সুযোগ পেয়েছিলেন। আশীষ অনুভূতি প্রকাশ করে দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমার কাজ ছিল রেজিস্টার বিল্ডিংয়ের ট্রান্সক্রিপ্ট শাখায় প্রুফ রিডিং করা। এ সময় কাজের পাশাপাশি আমি পাবলিক হ্যান্ডেল করেছি আবার ক্লাসের সময় ক্লাসও করেছি, এ ব্যাপারে অফিস সংশ্লিষ্টরা খুবই আন্তরিক ছিলেন। অভিজ্ঞতার সঙ্গে কিছু সম্মানীও এসেছে। সার্টিফিকেটও পাব। সার্বিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগটি আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছে।
‘বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠানগুলোতে পার্ট টাইম জবের চাহিদা অন্যান্য দেশের তুলনায় কম। তবে পড়াশোনা শেষে ফুল টাইম জব নিয়ে কাজ করার পরিকল্পনা ভবিষ্যতে নেওয়া যেতে পারে। আপাতত আমরা চেষ্টা করছি শিক্ষার্থীদের জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ইন্টার্নশিপ এবং তাদের মাধ্যমে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা’ - উপদেষ্টা, স্টুডেন্ট প্রমোশন অ্যান্ড সাপোর্ট ইউনিট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
মোস্তাফিজুর রহমান নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, আমার দায়িত্ব ছিল সাপোর্ট ইউনিটে শিক্ষার্থীদের যুক্ত হওয়া সংক্রান্ত তথ্যাদির ডাটাবেজ এবং এ সংবলিত একটি পোর্টাল তৈরিতে কাজ করা। আমাদের সুযোগ বা সময় যখন থাকত তখন কাজ করতে পেরেছি এটা আমাদের জন্য বড় একটা অ্যাডভান্টেজ ছিল। কিন্তু সম্মানীর পরিমাণটা বাড়ালে ভাল হত। প্রতি ঘণ্টা কাজ করলে মাত্র ১২৫ টাকা পাওয়া যায়, বিষয়টা একটু দৃষ্টিকটু।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের ২০২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী রুহুল আমিন সজীব বলেন, আমার আবাসিক হল সূর্য সেন। এ হল থেকে রেজিস্টার বিল্ডিং কাছে হওয়ায় সেখানে গিয়ে কাজ করতে আমার জন্য সহজ হয়েছে। আমি কাজের ফাঁকে ক্লাসও করেছি। আমার কাজ ছিল শিক্ষকদের পরীক্ষার খাতা দেখা বা গার্ড দেওয়ার বিলসমূহ হিসেব করে অডিটে উল্লেখ করা। এক্ষেত্রে আমার অভিজ্ঞতা অর্জনের পাশাপাশি অনেক শিক্ষকের সঙ্গে পরিচয় হয়েছে। তারা আমার পড়াশোনা ও ক্যারিয়ারের ব্যাপারে বিভিন্ন পরামর্শ দিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক অসচ্ছল শিক্ষার্থী রয়েছে। তারা টিউশন ও পার্টটাইম জব খোঁজে বেড়ায়। তারা যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরেই একটা সাপোর্ট পায় তাহলে অনেক ভাল হয়। এজন্য সাপোর্ট ইউনিটে ফান্ডিং বাড়িয়ে এর পরিধি আরও বাড়ালে ভাল হত।
আরও পড়ুন: পদ্ধতিগত প্রশ্ন তুলে ডাকসু নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা চলছে: ঢাবি উপাচার্য
স্টুডেন্ট প্রমোশন অ্যান্ড সাপোর্ট ইউনিট যখন প্রতিষ্ঠিত হয় তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউটের (আইবিএ) অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল কবিরকে এর উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। তিনি দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ইউনিট প্রতিষ্ঠার শুরু থেকে প্রথম ৭-৮ মাস আমি উপদেষ্টা হিসেবে ছিলাম। পরে শরীয়ত উল্লাহ স্যার দায়িত্ব গ্রহণ করেন। আমি থাকাবস্থায় ইউনিটের জন্য একটা অনলাইন পোর্টালের কাজ প্রায় ফাংশনের পর্যায়ে গিয়েছিল। অনেক দৌড়াদৌড়ি করে একটা অফিস এবং পরে আসবাবপত্রের ব্যবস্থা করা হয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের জন্য একটি ওয়ার্কশপ আয়োজন করেছিলাম। প্রতিটি বিভাগ ও ইনস্টিটিউটে চিঠি দিয়ে সেমিনার লাইব্রেরিগুলোতে কিছু শিক্ষার্থীর জন্য কাজের ব্যবস্থা করেছিলাম। তখন ফান্ডিং সমস্যাসহ বেশকিছু কারণে আমি উপাচার্য স্যারকে জানালাম যে, আমি থাকতে পারছি না। তখন শরীয়ত স্যারকে দায়িত্ব দেওয়া হল।
সাপোর্ট ইউনিটে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ডেপুটি রেজিস্টার) মঞ্জুর হোসেন বলেন, আমি এই অফিসে সাত মাস ধরে যুক্ত হয়েছি। এ সময়ের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে শুধু শিক্ষার্থীদের জন্য কাজ ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বাহিরের কোনো প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের জব দেওয়ার ব্যাপারে আপাতত কাজ হয়নি।
স্টুডেন্ট প্রমোশন অ্যান্ড সাপোর্ট ইউনিটের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শরীয়ত উল্লাহ দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সেমিনার লাইব্রেরিতে ছুটির দিনে শিক্ষার্থীরা তাদের সুবিধা অনুযায়ী কাজ করে। তাছাড়াও ক্যাম্পাসের বিভিন্ন পয়েন্টে আমরা কাজের সুযোগ তৈরি করার চেষ্টা করছি। সেমিনার লাইব্রেরির পাশাপাশি আরও ৮/৯ টি অফিসে আমরা শিক্ষার্থীদের জন্য কাজের সুযোগ তৈরি করতে পেরেছি।
তিনি বলেন, আরও বেশি শিক্ষার্থীদেরকে কীভাবে এ প্রোগ্রামে যুক্ত করা যায় সেটা বিবেচনার মধ্যে রয়েছে। এতে করে শিক্ষার্থীদের পেশাদারিত্ব ডেভেলপ হবে, কাজের পরিবেশ উন্নত হবে, কাজের প্রতি তাদের মনোভাবেরও উন্নয়ন ঘটবে। তাছাড়া, আর্থিক সম্মানী ও সার্টিফিকেট তো থাকছেই। যা কর্মজীবনে তাদের জন্য সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। কর্পোরেট বিশ্ব এ ধরনের কাজকে খুব গুরুত্ব সহকারে মূল্যায়ন করে।
কাজের পরিধি বাড়ানোর ব্যাপারে জানিয়ে শরীয়ত উল্লাহ বলেন, শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করার পাশাপাশি কর্পোরেট জগতে যারা ক্যারিয়ার কাউন্সেলিং করিয়ে থাকেন বা অ্যাডভাইজিং করেন তাদের সঙ্গেও ফিজিক্যালি বা ভার্চুয়ালি কানেক্ট করানোর কাজটি সম্প্রসারণ ঘটানোর চেষ্টা আমরা করছি। বর্তমানে আমরা সর্বোচ্চ ৫০ থেকে ৬০ জনকে সুযোগ দিতে পারছি।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে যারা ইউনিট থেকে সুযোগ পেয়েছেন তারা ছুটির দিনে অর্থাৎ শুক্রবারে ৪ ঘণ্টা ও শনিবারে ৫ ঘণ্টা কাজ করে ৫০০ টাকা করে সম্মানী পায়। এতে তারা মাসে ৮-১০ দিন কাজ করে ৪০০০ থেকে ৫০০০ টাকা পেতে পারেন। ভবিষ্যতে এ বিষয়ে আরও বিবেচনা করা হবে বলে আশা রাখছি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের জন্য চাকরির ব্যবস্থা করার প্রসঙ্গে অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শরীয়ত উল্লাহ বলেন, বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠানগুলোতে পার্ট টাইম জবের চাহিদা অন্যান্য দেশের তুলনায় কম। তবে পড়াশোনা শেষে ফুল টাইম জব নিয়ে কাজ করার পরিকল্পনা ভবিষ্যতে নেওয়া যেতে পারে। আপাতত আমরা চেষ্টা করছি শিক্ষার্থীদের জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ইন্টার্নশিপ এবং তাদের মাধ্যমে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা।