ঘরের কয়েকটি সাধারণ জিনিস সরালেই মিলবে ওয়াই-ফাইয়ের দুর্দান্ত গতি

ওয়াই-ফাই রাউটার
ওয়াই-ফাই রাউটার  © সংগৃহীত

ধীরগতির ইন্টারনেট, ভিডিও স্ট্রিমিংয়ে বারবার বাফারিং, কিংবা ঘরের কোনাকাঞ্চিতে ‘ডেড জোন’ এসব সমস্যার জন্য আমরা সাধারণত দায়ী করি রাউটার কিংবা ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানকে। কিন্তু বাস্তবে অনেক সময় এসবের পেছনে দায়ী থাকে আমাদের ঘরের অতি সাধারণ কিছু দৈনন্দিন জিনিসপত্র। আয়না, ধাতব আসবাব, মাইক্রোওয়েভ ওভেন, ব্লুটুথ ডিভাইস কিংবা অ্যাকুয়ারিয়ামের মতো বস্তু ওয়াই-ফাই সিগনালকে প্রতিফলিত বা আটকে দিয়ে গতি কমিয়ে দিতে পারে, সংকেতের আওতা সংকুচিত করতে পারে।

সবচেয়ে আশ্চার্যের বিষয় হলো এই সমস্যা সমাধানে ব্যয়বহুল কোনো যন্ত্রের প্রয়োজন নেই। রাউটারটি ঘরের মাঝামাঝি খোলা জায়গায় এবং একটু উঁচু স্থানে সরিয়ে নিলেই সিগনালের গতি, আওতা ও স্থিতিশীলতায় দেখা যাবে চমৎকার পরিবর্তন। এমনকি ঘরের জঞ্জাল বা ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতির অবস্থান বদলালেও ইন্টারনেট পারফরম্যান্সে ইতিবাচক প্রভাব পড়ে।

এই সহজ কিছু পরিবর্তন এনে আপনি পেতে পারেন দ্রুততর ডাউনলোড, স্মুথ ভিডিও স্ট্রিমিং, নিরবিচারে ভিডিও কল এবং ল্যাগমুক্ত গেমিংয়ের অভিজ্ঞতা। কিছু টেকনিকটি অনুসরণ করলে চলবে তাহলে একেবারে বিনামূল্যে ও স্বল্প সময়ে সমাধান করতে পারবেন।

মাত্র কয়েক মিনিট সময় নিয়ে এই বিনামূল্যের পরিবর্তনগুলো করলেই মিলবে দুর্দান্ত ওয়াই-ফাই অভিজ্ঞতা। চলুন আলোচনা করি।

আয়না ও ধাতব বস্তু: সিগনালের নীরব শত্রু
ফাইলিং ক্যাবিনেট, ধাতব তাক কিংবা ঘরের শোভা বর্ধনকারী বড় আয়না ওয়াই-ফাই সিগনাল প্রতিফলিত কিংবা শোষণ করে ফেলতে পারে। ফলে সিগনাল সঠিক পথে না ছড়িয়ে দুর্বল হয়ে পড়ে। রাউটারকে আয়না বা ধাতব পৃষ্ঠের কাছ থেকে দূরে রাখাই বুদ্ধিমানের কাজ।

ব্লুটুথ ডিভাইস: লুকোনো বিঘ্নকারী
আমাজন অ্যালেক্সা, গুগল হোম কিংবা ব্লুটুথ চালিত অন্যান্য ডিভাইস ওয়াই-ফাইয়ের মতো একই ফ্রিকোয়েন্সিতে কাজ করে। যখন রাউটার এইসব ডিভাইসের খুব কাছে থাকে, তখন সিগনাল সংঘর্ষে ইন্টারনেটের গতি কমে যেতে পারে। তাই রাউটারকে এসব গ্যাজেট থেকে কিছুটা দূরে রাখা উচিত।

মাইক্রোওয়েভ ওভেন: রান্নাঘরের ‘ওয়াই-ফাই কিলার’
মাইক্রোওয়েভ ওভেন থেকে নিঃসৃত অতিউচ্চ ফ্রিকোয়েন্সির তরঙ্গ ওয়াই-ফাই সিগনালের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। রাউটার যদি রান্নাঘরের আশপাশে থাকে, তবে সেটি সরিয়ে অন্যত্র স্থাপন করাই ভালো। এতে সংযোগ আরও স্থিতিশীল হবে, এমনকি রান্নার সময়েও ইন্টারনেট গতিশীল থাকবে।

অ্যাকুয়ারিয়াম ও পানিভর্তি বস্তু: সিগনালের শোষক
পানি ওয়াই-ফাই তরঙ্গের জন্য প্রাকৃতিক প্রতিবন্ধক। বড়সড় অ্যাকুয়ারিয়াম বা পানিভর্তি ট্যাংক ওয়াই-ফাই সিগনাল শোষণ করে ফেলতে পারে, ফলে বাড়ির নানা কোণে সৃষ্টি হয় ‘ডেড জোন’। রাউটারকে এসব বস্তু থেকে দূরে রাখলে সিগনাল পুরো ঘরজুড়ে ছড়িয়ে পড়তে পারে।

ভারী আসবাব: রাউটারের পথের বাধা
ধাতব বা কাঠের ভারী আসবাবও সিগনাল আটকে দিতে পারে। অনেকেই সৌন্দর্যবোধে রাউটারকে ক্যাবিনেটের ভিতরে বা বড় আসবাবের পেছনে লুকিয়ে রাখেন, এতে সিগনালের প্রচার বিঘ্নিত হয়। রাউটারকে খোলা ও মাঝামাঝি স্থানে রাখলেই এই সমস্যা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব।

দেয়াল ও দরজা: অদৃশ্য ওয়াই-ফাই রোধক
মোটদাগে ঘরের মোটা দেয়াল ও বন্ধ দরজা অনেক সময় পুরো ঘরের সিগনাল একটানা পৌঁছাতে বাধা দেয়। এজন্য রাউটার এমন স্থানে বসানো উচিত, যেখানে কোনো দেয়াল বা মোটা বাধা নেই এবং যেখানে সিগনাল চারদিকে সমানভাবে ছড়াতে পারে।

এতসব সমস্যার সমাধানে নতুন কোনো ডিভাইস নয়, প্রয়োজন শুধুই রাউটারের অবস্থান বদল, কিছু বস্তু সরানো এবং সামান্য বিবেচনার। আয়না, ধাতব বস্তু, ব্লুটুথ ডিভাইস, মাইক্রোওয়েভ, অ্যাকুয়ারিয়াম কিংবা ভারী আসবাব—এসব সঠিকভাবে সরিয়ে রাখলেই ওয়াই-ফাইয়ের গতি ও স্থায়িত্বে আসে নজরকাড়া পরিবর্তন। রাউটারকে উঁচু, মাঝামাঝি এবং খোলা জায়গায় রাখলে কোনো ব্যয় ছাড়াই বাড়ির প্রতিটি কোণে পৌঁছাবে শক্তিশালী সিগনাল।

তথ্যসূত্র: দ্য টাইমস অফ ইন্ডিয়া


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence