৩ দফা দাবিতে ববি শিক্ষার্থীদের ফের ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ
- ববি প্রদায়ক
- প্রকাশ: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৬:২০ PM
অবকাঠামোগত উন্নয়ন, জমি অধিগ্রহণ ও পরিবহন সংকট নিরসনের দাবিতে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) শিক্ষার্থীরা ৩৬তম দিনের আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। আজ বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৫টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাউন্ড ফ্লোরে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন করেন শিক্ষার্থীরা। পরে বিক্ষোভ মিছিলটি ক্যাম্পাস-সংলগ্ন মহাসড়কগুলো প্রদক্ষিণ করে ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ করেন।
গত ২৮ জুলাই এই আন্দোলনের সূচনা হয় এবং ২৯ জুলাই শিক্ষার্থীরা সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ৩ দফা দাবি উত্থাপন করেন। এরপর ধারাবাহিকভাবে তাদের মানববন্ধন ও রাস্তা ব্লকেড কর্মসূচি পালিত হয়। সর্বশেষ আজও (৩ সেপ্টেম্বর) একই দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয় এবং ক্যাম্পাসের ৩ নং গেটের সামনের মহাসড়কটি অবরোধ করা হয়। এ সময় বিশেষ করে আবাসন, পরিবহন ও শ্রেণিকক্ষ সংকটের মতো মৌলিক সমস্যার সমাধানে প্রশাসনের নীরব ভূমিকায় শিক্ষার্থীরা তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
সমাবেশ ও মিছিলে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন স্লোগানে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ক্যাম্পাস। এ সময় তারা ‘বাজেট নিয়ে টালবাহানা চলবে না, চলবে না’, ‘৫৩ একরে হবে না আর, ২০০ একর চাই এবার’, ‘মুলা ঝুলানো বন্ধ কর, জমি অধিগ্রহণ দ্রুত কর’-সহ নানা স্লোগান দেন।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, প্রতিষ্ঠার এক যুগ পেরোলেও বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন হয়নি।
শিক্ষার্থীদের ৩ দফা দাবি হলো দ্রুততম সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত উন্নয়ন; ক্যাম্পাসের আয়তন বৃদ্ধি ও সব শিক্ষার্থীর জন্য শতভাগ পরিবহন সুবিধা নিশ্চিতকরণ।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘৫ আগস্ট পর আমরা ভেবেছিলাম বৈষম্যহীন বাংলাদেশে প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় সমানভাবে সুবিধা পাবে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও হাতে গোনা কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে অবহেলা করা হচ্ছে। ১৫ বছরেও বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় যে প্রাধান্য পাওয়ার কথা ছিল, তা পায়নি। আমরা আর বঞ্চিত থাকতে চাই না, আমাদের ন্যায্য অধিকার চাই। আমরা এত দিন ধরে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করে আসছিলাম, দীর্ঘদিন বঞ্চিত থাকলেও প্রশাসনের কোনো পদক্ষেপ আমরা দেখছি না। এ সমস্যা অতি দ্রুত সমাধান না করা হলে আমরা অনির্দিষ্টকালের দক্ষিণ বঙ্গ ব্লকেড করতে বাধ্য হব।’
এ সময় অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী ভূমিকা সরকার বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন সময় আল্টিমেটাম দিয়েছিলাম, কিন্তু সব কিছু আশ্বাসেই আটকে আছে, প্রশাসন থেকে শুরু করে রাষ্ট্র কেউই আমাদের এ সংকটে ভ্রুক্ষেপ করছে না। জনদু্র্ভোগ হলেও আমরা রাষ্ট্রের দৃষ্টি আকর্ষণে এই কর্মসূচি দিতে বাধ্য হচ্ছি। এ সংকটগুলো সমাধানে লিখিত আশ্বাস না পাওয়া পর্যন্ত আমাদের এই আন্দোলন চলবে।’
এ সময় শিক্ষার্থীরা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, সরকার যদি দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ না নেয়, তবে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দেওয়া এবং দক্ষিণবঙ্গ অচল করার মতো কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে।