রেডিও টেলিস্কোপে মিল্কিওয়ের হাইড্রোজেন লাইন শনাক্ত ববি শিক্ষার্থীর
- ববি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ২৯ আগস্ট ২০২৫, ০৯:২৫ PM , আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০১:০২ PM
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) শিক্ষার্থী ইফতেদা তাসিন ইফতি নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি রেডিও টেলিস্কোপ ব্যবহার করে মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির ২১ সেন্টিমিটার হাইড্রোজেন লাইন শনাক্ত করেছেন। ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের এ শিক্ষার্থীর সঙ্গে ছিলেন গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আসিবুল করিম। কোনো Low Noise Amplifier (LNA) ছাড়াই পরীক্ষামূলক পর্যায়েই সিগন্যাল ধরা পড়ায় গবেষণাটি বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এক উল্লেখযোগ্য সাফল্য হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
জানা যায়, রেডিও টেলিস্কোপ ব্যবহার করে আমাদের মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সিতে (আমাদের ছায়াপথ) থাকা হাইড্রোজেন গ্যাসের উপস্থিতি শনাক্ত করা যায়, যা ২১ সেমি হাইড্রোজেন লাইন নামে পরিচিত। এই দীর্ঘ তরঙ্গদৈর্ঘ্যের রেডিও সংকেতটি মহাকাশে সবচেয়ে বেশি থাকা উপাদান হাইড্রোজেন থেকে নির্গত হয় এবং মহাকাশের মেঘে ঢেকে থাকা গ্যাস, যা অপটিক্যাল টেলিস্কোপ দিয়ে দেখা যায় না, তা দেখতে সাহায্য করে। রেডিও টেলিস্কোপের মাধ্যমে এই সংকেত শনাক্ত করে বিজ্ঞানীরা গ্যালাক্সির কেন্দ্র থেকে হাইড্রোজেন গ্যাসের গতি ও অন্যান্য উপাদান শনাক্ত করতে পারেন।
ইফতি জানান, শুরুতে তার লক্ষ্য ছিল একটি অপটিকাল টেলিস্কোপ তৈরি করা। এ জন্য দীর্ঘদিন অবতল আয়না খুঁজলেও সাশ্রয়ী দামে পাননি। নিজে মিরর বানানোর চেষ্টা করলেও অবতল কাচের অভাবে তা সম্ভব হয়নি। পরে রেডিও টেলিস্কোপ সম্পর্কে জানতে পেরে নতুন উদ্যোগ নেন এবং সেটিই হয়ে ওঠে তার গবেষণার মূল ক্ষেত্র।
আরও পড়ুন: জাকসু নির্বাচনে চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ, প্রার্থী ১৭৯ জন
প্রথমে কেবল সূর্য ও আশপাশের সিগন্যাল শনাক্ত করাই উদ্দেশ্য ছিল। তবে অপ্রত্যাশিতভাবে সেটআপটি শুরুতেই মিল্কিওয়ের হাইড্রোজেন লাইন ধরতে সক্ষম হয়। ইফাতির ভাষায়, ‘নিউট্রাল হাইড্রোজেন তার স্পিন ফ্লিপ ট্রানজিশনের সময় ১৪২০.৪ মেগাহার্টজে রেডিও ওয়েভ উৎপন্ন করে। এই সিগন্যাল অত্যন্ত দুর্বল হওয়ায় শনাক্ত করা কঠিন। এজন্য আমরা DISC ও Helix দুটি এন্টেনা একত্র করে বিশেষ ধরনের এন্টেনা বানিয়েছি। এত দ্রুত হাইড্রোজেন লাইন শনাক্ত হবে, তা আশা করিনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘যদিও এ ধরনের গবেষণা বহু আগেই উন্নত দেশে হয়েছে, বাংলাদেশে এ বিষয়ে আগ্রহ এখনো সীমিত। তবে আমাদের এ উদ্যোগ দেখিয়েছে সীমিত সম্পদ দিয়েও সাফল্য অর্জন করা সম্ভব।’