অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসনের অধীনে পরীক্ষা নেওয়ার দাবি সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের
- ঢাকা কলেজ প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১১ আগস্ট ২০২৫, ০৫:০৬ PM , আপডেট: ১৪ আগস্ট ২০২৫, ০৭:৪৫ AM
ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তবর্তীকালীন প্রশাসকের অধীনে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ সহ ৯ দফা দাবি জানিয়েছে সাত কলেজের ২০২৩-২৪ সেশনের শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা প্রস্তাবিত ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী প্রশাসক অধ্যাপক এ কে এম ইলিয়াসের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেন।
সোমবার (১১ আগস্ট) দুপুর ১২টায় ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসক ও ঢাকা কলেজ অধ্যক্ষের কার্যালয়ে এ স্মারকলিপি দেন। দাবি আদায়ে প্রশাসকের কার্যালয়ে কিছু সময়ের জন্য অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন সাত কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা।
এর আগে গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনের সাত কলেজের ২০২৩-২৪ সেশনের শিক্ষার্থীদের ইয়ার ফাইনাল পরীক্ষার ফর্ম পূরণের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। ঢাবির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক হিমাদ্রী শেখর চক্রবর্তী স্বাক্ষরিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে আগামী ১৭ আগস্ট থেকে ফরম পূরণের তারিখ ঘোষণা করা হয়। তবে এতে সাত কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। এসময় শিক্ষার্থীদের একাংশ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে পরীক্ষার বিরোধিতা করেন।
শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে পরীক্ষা দেব না। আমাদের নিজ নিজ ক্যাম্পাসে এবং অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসকের অধীনে পরীক্ষা বাস্তবায়ন করতে হবে। যে সকল শিক্ষক আমাদের ক্লাস নেয় সেই শিক্ষকরাই আমাদের পরীক্ষার খাতা দেখবে।
ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী ফাহাদ বলেন, অন্তর্বর্তী প্রশাসনকে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এই প্রশাসকের একজন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও রেজিস্টার থাকার কথা। কিন্তু অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসকের প্রধান নিয়োগ দেয়নি। এমনকি লোকবল নিয়োগ দিলে বাজেট দেওয়ার কথাও বলেছে ইউজিসি। অন্তর্বর্তী প্রশাসন ইচ্ছা করে নিয়োগ দেয়নি।
এ বিষয়ে অধ্যাপক এ কে এম ইলিয়াস বলেন, আজকের মধ্যে আমি কেন রাষ্ট্রপতিরও করার ক্ষমতা নাই। আমার কর্তৃপক্ষ ইউজিসি। ইউজিসিকে জানালে সরাসরি সিদ্ধান্ত নিবে। আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নিয়মের বাহিরে যাবে না। আমাদের পক্ষ থেকে যতটুকু বলা সম্ভব ততটা বলেছি। আমরা তাদের বলেছি নন প্রমোশনের বিষয়টি তুলে দিলে অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
পরীক্ষা পিছিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা ব্যক্ত করে তিনি আরও বলেন, এরা যদি পরীক্ষা না দেয় ৮ মাস পিছিয়ে যাবে। ফেব্রুয়ারির আগে কিছু হবে না। অধ্যাদেশ জারি না হওয়া পর্যন্ত কোথাও নেওয়ার জায়গায় নাই। আমি রেজিস্ট্রেশন কার্ড নিয়ে পরীক্ষা দিতে বলেছি। ফি কমানোর যৌক্তিকতা থাকলে অবশ্যই কমবে।
নিজ ক্যাম্পাসে পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে অধ্যাপক ইলিয়াস বলেন, একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া কোথাও পরীক্ষার কেন্দ্র পরিবর্তন হয় না। যখন নিজ নিজ ক্যাম্পাসে পরীক্ষা নেওয়া হবে তখন ছাত্র- শিক্ষক প্রতিপক্ষ হয়ে যাবে। হঠাৎ করে সিস্টেম ব্রেক করলে কেউ পরীক্ষা নিতে পারবে না।
স্মারকলিপিতে সাত কলেজের ২০২৩-২৪ সেশনের শিক্ষার্থীদের দাবি সমূহ হলো- অন্তবর্তীকালীন প্রশাসক দ্বারা পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে; রেজিস্ট্রেশনের সকল টাকা ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে জমা করতে হবে; নিজ নিজ ক্যাম্পাসে পরীক্ষা গ্রহণ করতে হবে; প্রশ্ন কাঠামো সাত কলেজের শিক্ষক দ্বারা প্রস্তুত করতে হবে এবং পরীক্ষার খাতা সাত কলেজের শিক্ষক দ্বারা মূল্যায়ন করতে হবে; পরীক্ষার ফলাফল ৪০ কর্মদিবসের মধ্যে প্রকাশ করতে হবে। নন-প্রমোটেড শিক্ষার্থীদের জন্য সাপি-মেন্টারি পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে এবং সিজিপিএ শর্ত বাতিল করতে হবে।
এছাড়াও ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির প্রশাসন (ভিসি) নিয়োগের সাথে সাথেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনকে ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের সকল ডেটা হস্তান্তর করতে হবে; উপরোক্ত সকল দাবি ইউজিসি বা অন্তভর্তীকালীন প্রশাসন মেনে নিলেই আমরা ২০২৩-২৪ শিক্ষাবষের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশ গ্রহণে রাজি থাকবো; বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত সকল তথ্য, বিজ্ঞপ্তি ও নির্দেশনা একমাত্র অফিসিয়াল ওয়েবসাইট ও ফেসবুক পেইজে প্রকাশ করতে হবে, যাতে বিভ্রান্তি ও গুজব রোধ করা যায় ও অধ্যাদেশ জারির পর দ্রুত সকল শিক্ষার্থীর তথ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব সার্ভারে স্থানান্তর করে নির্ধারিত ডিজাইনের আইডি কার্ড প্রদান নিশ্চিত করতে হবে বলেও দাবি জানান তারা।