স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির ৪র্থ সমাবর্তন অনুষ্ঠিত

বসুন্ধরা আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টারে ৪র্থ সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়
বসুন্ধরা আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টারে ৪র্থ সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়  © টিডিসি ফটো

স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের ৪র্থ সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (২২ নভেম্বর) দিনব্যাপী ১৪০৫ জন শিক্ষার্থীর প্রাণবন্ত উপস্থিতিতে বসুন্ধরা আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টারে এই আয়োজন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় মোট ৪০ জনকে স্বর্ণপদক তুলে দেওয়া হয়েছে।

বেলা সাড়ে ১০টার দিকে জাতীয় সঙ্গীত গেয়ে শুরু হয় এ অনুষ্ঠান। বিভিন্ন ধর্মীয় গ্রন্থ পাঠের পর ছিল অতিথিদের বক্তব্য। পরে স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের হাতে সনদ ও পদক তুলে দেওয়া হয়। এ সময় ১০ জন চ্যান্সেলর’স গোল্ড মেডেল ও আরও ৩০ জনকে ভাইস চ্যান্সেলর’স গোল্ড মেডেল পান। বিকেলে জমজমাট আয়োজনে হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। এতে সমাবর্তন বক্তা ছিলেন বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. মো. ইউনুস মিয়া। এতে আরও বক্তব্য দেন এমেরিটাস প্রফেসর এম ফিরোজ আহমেদ, স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. ফারহানাজ ফিরোজ ও রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ আব্দুল মতিন।

আরও পড়ুন: প্রথাগত রাজনীতি সমর্থনযোগ্য হলে জুলাই অভ্যুত্থান হত না: পরিবেশ উপদেষ্টা

সভাপতির বক্তব্যে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, সবচেয়ে বড় জিনিস হল দেশ ও দেশের নাগরিকদের প্রতি তোমাদের কর্তব্য। মানুষের প্রতি দরদ থাকতে হবে। এখন দিনদিন মানুষের প্রতি সহানুভূতি কমে যাচ্ছে। কিন্তু দরদ, সহানুভূতি এবং পরার্থপরতা সবচেয়ে জরুরি।

182
স্বর্ণপদক পাওয়া এক শিক্ষার্থী

তিনি বলেন, ডিসিপ্লিন আর পরিশ্রম লাগবে। একই সাথে স্বপ্ন দেখতে হবে। স্বপ্ন দেখতে হবে ভবিষ্যতে আমি কী করব। স্বপ্ন ছাড়া তোমরা এগোতে পারবে না। সর্বশেষ মানবতার সেবা করতে হবে। একটিমাত্র পৃথিবী, এটিকে যদি আমরা সাসটেইন না করি, তাহলে মানবজাতি এগোতে পারবে না।

সমাবর্তন বক্তব্যে পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, জুলাই অভ্যুত্থান আমাদের দেখিয়েছে, সমাজের প্রচলিত রীতিনীতির সাথে এ প্রজন্মের সম্পর্ক নেই। এই প্রজন্ম আগের রাজনীতির ধরণ-ধারণ থেকে মুক্তি চায়, পরিবর্তন চায়। তবে এই পরিবর্তনটা বিশ্বের কোথাও সহজ নয়। কারণ ক্ষমতাবানরা পরিবর্তন-ইচ্ছুক শক্তিটাকে আঘাত করতে থাকে, নেতিবাচক প্রচারণা চালাতে থাকে। এই নেতিবাচক প্রচারণায় পা দিবেন না। আপনারা কী চান তা ঢাকা শহরের দেয়ালে দেয়ালে যেমন লিখে রেখেছেন, তেমনি নিজের হৃদয়েও লিখে রাখেন।

তবে বৈষম্যহীন সমাজ তৈরি করতে প্রজন্মকে অনেক আত্মত্যাগ করতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, যে পরিবর্তন চান, সে পরিবর্তন আগে নিজের মধ্যে আনতে হবে। নিজে পরিবর্তন হবেন না, আশা করবেন যে কোন একটা শক্তি এসে আপনাকে পরিবর্তন করে দিয়ে যাবে, তা হবে না।

স্বাগত বক্তব্যে স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির ভিসি (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. মো. ইউনুস মিয়া শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমরা তোমাদের সমাবর্তন আয়োজন করতে পেরে আনন্দিত। আমাদের প্রত্যাশা, তোমরা তোমাদের দক্ষতা ও যোগ্যতা দিয়ে সমাজে অবদান রাখবে। এ সময় স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশকে প্লাস্টিকমুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ঘোষণা করেন উপাচার্য।

183
আনন্দ-উদযাপনের মধ্য দিয়ে সমাবর্তনে অংশ নেন শিক্ষার্থীরা

বক্তারা আরও বলেন, এই অনুষ্ঠান কেবল শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা শেষ করার উদযাপন নয়, এটি তাদের দীর্ঘ পরিশ্রম ও অর্জনের স্মারক। তবে এই শিক্ষার্থীরা এখন নতুন চ্যালেঞ্জের একটি জগতে প্রবেশ করতে যাচ্ছে। এই জগতে নিজেদের যোগ্যতা ও দক্ষতা দিয়ে টিকে থাকতে হবে।

স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের বক্তৃতায় মাইক্রোবায়োলজির শিক্ষার্থী জান্নাত আক্তার বলেন, এই অর্জন আমাদের যতটুকু, ঠিক ততটুকুই আমাদের শিক্ষকদের। আজ আমরা এই মাইলফলক উদযাপন করছি, তখন আমাদের মনে রাখতে হবে ডিগ্রি আর টাইটেল দিয়ে সব অর্জন হয় না। আমরা আমাদের সমাজ ও জাতির জন্য অবদান রাখতে চাই। আমরা পরিবর্তনের সাহস রাখি।


সর্বশেষ সংবাদ