গাড়ি নয়, ১ কোটি ১৭ লাখ টাকা দিয়ে নম্বর প্লেট কিনলেন সুধীর
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ২৯ নভেম্বর ২০২৫, ১০:২৩ AM
শুধু ভাল লেগেছিল বলে ১ কোটি ১৭ লাখ টাকা দিয়ে গাড়ির নম্বর প্লেট কিনেছেন! কী করেন হরিয়ানার ৩০ বছর বয়সি সুধীর কুমার? কোটি টাকা দিয়ে গাড়ির নম্বর প্লেট কেনার ক্ষমতা দেশের বেশির ভাগ মানুষেরই নেই। তাই স্বাভাবিক ভাবেই অনেক মানুষের মনে প্রশ্ন, কী করেন সুধীর? জানা গিয়েছে, হিসারের বাসিন্দা ৩০ বছর বয়সি সুধীর নামে এক জন ব্যবসায়ী।
গাড়ির একটি নম্বর মাত্র। আর তার দাম কিনা এক কোটি ১৭ লাখ টাকা! শুধু তা-ই নয়, সেটি ভারতের সবচেয়ে দামি নম্বর প্লেটও বটে। অবিশ্বাস্য মনে হলেও ভারতের সবচেয়ে দামি সেই রেজিস্ট্রেশন নম্বর বিক্রি করে নজির গড়েছে হরিয়ানা। নজির গড়েছেন সেই রেজিস্ট্রেশন নম্বরের ক্রেতাও।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে, ভারতের সবচেয়ে দামি নম্বর প্লেটটি কিনেছেন সুধীর কুমার নামে এক ব্যক্তি। হরিয়ানার হিসারের বাসিন্দা তিনি। এর আগে ভারতে এত দামে গাড়ির কোনও নম্বর বিক্রি হয়নি। ইতিহাস তৈরি করা সেই রেজিস্ট্রেশন নম্বরটি ‘এইচআর৮৮বি৮৮৮৮’।
ভিআইপি গাড়ির জন্য নিলামে উঠেছিল এই রেজিস্ট্রেশন নম্বরটি। বিক্রি হয়েছে ১.১৭ কোটি টাকায়। এর পরই ভারতে নথিভুক্ত গাড়ির সবচেয়ে দামি নম্বরের তকমা পায় সেটি।
হরিয়ানায় প্রতি সপ্তাহে ভিআইপি বা অভিনব নম্বর প্লেটের নিলাম হয়। শুক্রবার বিকেল ৫টায় দরপত্র শুরু হয় এবং সোমবার সকাল ৯টা পর্যন্ত অফিসিয়াল পোর্টালের মাধ্যমে নিলাম চলে। ফলাফল সাধারণত বুধবার বিকাল ৫টায় ঘোষণা করা হয়।
‘এইচআর৮৮বি৮৮৮৮’ নম্বরটির জন্যও নিলাম শুরু হয়েছিল হরিয়ানার সরকারি ভিআইপি নম্বর পোর্টালে। ৫০,০০০ টাকা দিয়ে নিলাম শুরু হয়। বুধবার দুপুরের মধ্যে নিলামের দর পৌঁছোয় ৮৮ লাখ টাকায়। বিকেল ৫টা নাগাদ দাম ১.১৭ কোটি টাকার রেকর্ড ছুঁয়েছিল।
অনেক দর হাঁকাহাঁকির পর বুধবার সন্ধ্যা নাগাদ নিলামের ফলাফল ঘোষণা হয়। দেখা যায় গাড়ির ওই নম্বরটি বিক্রি হয়েছে ১.১৭ কোটি টাকায়। কিনেছেন, সুধীর।
কিন্তু কেন এত দাম উঠল নম্বর প্লেটটির? জ্যোতিষশাস্ত্র অনুযায়ী, ৮৮ সংখ্যাটি অত্যন্ত মূল্যবান। প্রাচুর্য এবং সমৃদ্ধির সঙ্গে যুক্ত এই সংখ্যা। এটিকে কেবল অর্থের ক্ষেত্রে নয়, আধ্যাত্মিক বৃদ্ধির ক্ষেত্রেও সৌভাগ্যের প্রতীক হিসাবে দেখা হয়।
অনেকের মতে, জীবনে ভারসাম্য রক্ষাতেও নাকি গুরুত্বপূর্ণ এই নম্বর। আর সে কারণেই ওই নম্বরের প্লেটটি অত দামে বিক্রি হয়েছে।
আবার অনেকের দাবি, নম্বরটি যে অনন্য, তাতে সন্দেহ নেই। তা ছাড়া ইংরেজি বর্ণমালার ‘বি’ বর্ণ অনেকটা ইংরেজি ‘৮’-এর মতো দেখতে। তাই দূর থেকে দেখলে মনে হতেই পারে, এইচআর-এর পর, একাধিক ৮ সংখ্যা দিয়ে নম্বরটি তৈরি হয়েছে। আর সে কারণেও অনেকে নম্বর প্লেটটি কিনতে অত আগ্রহ দেখিয়েছিলেন বলে মনে করেছেন তারা।
কিন্তু যিনি এই নম্বরটি কিনেছেন, তার কী মত? সুধীরের কথায়, ‘‘আমি টাকার কথা চিন্তা করে ওই গাড়ির নম্বর কিনিনি। নির্দিষ্ট কোনও কারণেও কিনিনি। নম্বরটি পছন্দ হয়ে যায় আর আমি দর হাঁকাতেই থাকি।’’
তিনি কোন গাড়িতে ওই নম্বর প্লেটটি বসাবেন, তা-ও এখনও পর্যন্ত ঠিক করেননি বলেই জানিয়েছেন সুধীর। তবে শীঘ্রই তিনি বিষয়টি নিয়ে ভাবনাচিন্তা করবেন বলে জানিয়েছেন।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে এ-ও উঠে এসেছে যে, ১ কোটি ১৭ লাখ টাকা দিয়ে গাড়ির নম্বর প্লেট কিনলেও এখনও পুরো টাকা জমা দেননি সুধীর। মাত্র ১১,০০০ টাকা জমা দিয়েছেন। এর মধ্যে ১০০০ টাকা রেজিস্ট্রেশন ফি এবং বাকি ১০,০০০ টাকা নিরাপত্তা আমানত হিসাবে জমা দেওয়া হয়েছে।
পুরো টাকা জমা দিলে তার পরেই ওই অনন্য নম্বরের মালিকানা পাবেন সুধীর। পুরো টাকা জমা করার জন্য কর্তৃপক্ষের তরফে সুধীরকে পাঁচ দিন সময় দেওয়া হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে।
কোটি টাকা দিয়ে গাড়ির নম্বর প্লেট কেনার ক্ষমতা দেশের বেশির ভাগ মানুষেরই নেই। তাই স্বাভাবিক ভাবেই অনেক মানুষের মনে প্রশ্ন, কী করেন সুধীর? জানা গিয়েছে, হিসারের বাসিন্দা ৩০ বছর বয়সি সুধীর এক জন ব্যবসায়ী।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, একাধিক ব্যবসা রয়েছে সুধীরের। পরিবহন ব্যবসা এবং একটি সফ্টঅয়্যার সংস্থা ছাড়াও বাণিজ্যিক পরিবহণের জন্য একটি মোবাইল অ্যাপেরও মালিক তিনি।
সুধীরের কথায়, ‘‘আমি আশা করিনি যে এই নিলাম এত হইচই ফেলবে। আমরা পরিবহণ ব্যবসায় আছি। একটি সফ্টঅয়্যার সংস্থাও রয়েছে আমাদের। সম্প্রতি আমরা বাণিজ্যিক পরিবহণের জন্য একটি পরিবহণ সংক্রান্ত মোবাইল অ্যাপও তৈরি করছি।’’
সেই সুধীরই আপাতত ভারতের সবচেয়ে দামি নম্বর প্লেটের মালিক। তবে এর আগেও বহু টাকায় বিকোতে দেখা গিয়েছে গাড়ির রেজিস্ট্রেশন নম্বর। এর আগে চলতি বছরের অগস্টে চণ্ডীগড়ের এক বাসিন্দা ৩৬.৪ লাখ টাকা দিয়ে একটি ইনোভা গাড়ির নম্বর প্লেট ‘সিএইচ ০১ডিএ ০০০১’ কিনেছিলেন।
কেরলের প্রযুক্তিবিদ তথা ধনকুবের ভেনু গোপালকৃষ্ণণ তার ল্যাম্বরঘিনি উরুস পারফর্ম্যান্ট গাড়ির জন্য ৪৫.৯৯ লাখ টাকায় ‘কেএল ০৭ডিজি ০০০৭’ নম্বরটি কিনেছিলেন। জেমস বন্ডের ভক্ত গোপালকৃষ্ণণ, ০০৭ সংখ্যার প্রতি ভালবাসা থেকেই অত দামে কিনেছিলেন নম্বর প্লেটটি।
তথ্য সূত্র: আনন্দবাজার।