বিশ্ববিদ্যালয়ে দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার তরুণী, গ্রেপ্তার ২
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:৪২ AM
আসামের গুয়াহাটির কাছে অবস্থিত একটি নামকরা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ত্রিপুরার এক তরুণীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্তরা সবাই বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থী এবং মণিপুরের বাসিন্দা। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ, বাকি তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসার পর আসাম ও ত্রিপুরা—দুই রাজ্যজুড়েই তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গত ১৩ সেপ্টেম্বর রাতে গুয়াহাটি থেকে প্রায় ৫৫ কিলোমিটার দূরের পানিখাইটি এলাকায় পার্টিতে অংশ নেয় ভুক্তভোগী তরুণী ও পাঁচজন ছাত্র। ওই পার্টি শেষে মেয়েটি নিজের কামরায় ফিরে যায় এবং সেখানে মাদক সেবন করে বলে জানায় পুলিশ। পরদিন সকালে জ্ঞান ফিরলে সে বুঝতে পারে, তার এক পরিচিত সহপাঠী তাকে ধর্ষণ করেছে।
ঘটনার খবর জানতে পেরে ১৭ সেপ্টেম্বর মামলা গ্রহণ করে সেন্ট্রাল পুলিশ কমিশনারেট। কমিশনারেটের ডেপুটি কমিশনার অব পুলিশ (ডিসিপি) অমিতাভ বসুমতারি সাংবাদিকদের জানান, ঘটনাটি জানার পরপরই তদন্ত শুরু হয় এবং অভিযুক্তদের শনাক্ত করা হয়। তিনি বলেন, ‘ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের মধ্যে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা নাবালক হওয়ায় তাদের কামরূপ মেট্রো জেলার জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডের সামনে হাজির করা হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে আমরা অভিযুক্তদের নাম প্রকাশ করছি না।’
ডিসিপি বসুমতারি আরও জানান, বাকি তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও প্রাথমিকভাবে তাদের বিরুদ্ধে কোনো প্রমাণ না পাওয়ায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে এবং প্রয়োজন হলে তাদের পুনরায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হতে পারে।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পাঁচজনকেই সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে বলে জানানো হয়েছে। যদিও পুলিশ নাবালকদের পরিচয় গোপন রাখছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বিভাগ পাঁচ অভিযুক্ত ছাত্রের নাম প্রকাশ করেছে, যা আরও বিতর্ক তৈরি করেছে।
ঘটনার পর শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভ ও আতঙ্ক আরও বাড়তে শুরু করেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। ত্রিপুরার টিপরা মোথা জনজাতির নেতা প্রদ্যোৎ বিক্রম মানিক্য দেববর্মা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স (পূর্বতন টুইটার)-এ লিখেছেন, ‘ত্রিপুরার এক নারী গুয়াহাটিতে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। আমি ভুক্তভোগীর সঙ্গে কথা বলেছি এবং তাঁকে সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দিয়েছি। আমরা নিশ্চিত করব, তিনি ন্যায়বিচার পান।’
ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত শুরু হয়েছে এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।