এয়ার এ্যাম্বুলেন্স বদল, জানা গেল বাংলাদেশে আসার সময়

কাতারের আমিরের পাঠানো বিশেষ এ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে গত ৭ জানুয়ারি রাতে লন্ডন গিয়েছিলেন খালেদা জিয়া
কাতারের আমিরের পাঠানো বিশেষ এ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে গত ৭ জানুয়ারি রাতে লন্ডন গিয়েছিলেন খালেদা জিয়া  © ফাইল ছবি

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য লন্ডনে নিয়ে যেতে কাতার সরকারের দেয়া এয়ার এ্যাম্বুলেন্স শনিবার বিকাল ৫টায় ঢাকায় এসে পৌছাবে বলে জানা গেছে। নির্ধারিত এয়ার এ্যাম্বুলেন্সটিতে যান্ত্রিক ত্রুটি ধরা পড়ায় জার্মানি থেকে কাতার সরকার আরেকটি এয়ার এ্যাম্বুলেন্স পাঠাচ্ছে। 
ঢাকায় কাতার দূতাবাসের জনসংযোগ কর্মকর্তা আসাদুর রহমান আসাদ শুক্রবার বিকালে গণমাধ্যমকে বলেন, কাতার সরকারের ব্যবস্থাপনায় এই এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি জার্মানি থেকে ঢাকায় আসবে।

শনিবার (৬ ডিসেম্বর) বিকাল ৫টায় ওই এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ঢাকায় পৌঁছাবে বলে বিএনপির মিডিয়া সেল থেকে জানানো হলেও একটি সূত্র জানিয়েছে, বিষয়টি আরও বিলম্বিত হতে পারে। 

কাতার দূতাবাস কর্মকর্তা আসাদ বলেন, এয়ার অ্যাম্বুলেন্স শনিবার আসার জন্য যে প্রস্তুতি, সেটা এখনো নেওয়া হয়নি। খালেদা জিয়ার মেডিকেল টিমের ওপর বিষয়টা নির্ভর করছে। তবে সেটা শনিবার আসছে না এ বিষয়টি মোটামুটি নিশ্চিত।

কাতারের এয়ার অ্যাম্বুলেন্স যে শুক্রবার আসছে না, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও তা সকালে জানিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের ‘কারিগরি ত্রুটির কারণে’ এই জটিলতা তৈরি হয়েছে। সব ঠিক থাকলে সেটা শনিবার পৌঁছাতে পারে। 

ফখরুল বলেন, ম্যাডামের শরীর যদি যাত্রার উপযুক্ত থাকে এবং মেডিকেল বোর্ড যদি সিদ্ধান্ত দেয়, তাহলে ইনশাল্লাহ ৭ তারিখ (রবিবার) ফ্লাই করবেন।
মহাসচিব বলেন, খালেদা জিয়ার মেডিকেল বোর্ড বৃহস্পতিবার তাকে বিদেশে নেওয়ার অনুমতি দিয়েছিল। কিন্তু রাতে তার শারীরিক অবস্থার কিছুটা অবনতি ঘটে। যাত্রা পিছিয়ে যাওয়ার এটাও একটি কারণ।

এখন এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা হলেও খালেদা জিয়াকে ১৩ ঘণ্টা বিমানে রেখে লন্ডনে নেওয়া সম্ভব হবে কি না, তা পুরোপুরি তার শারীরিক অবস্থা এবং মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করবে।

বিএনপি চেয়ারপরসন খালেদা জিয়া গত ২৩ নভেম্বর থেকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ড বৃহস্পতিবার সিদ্ধান্ত নেয়, উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে যুক্তরাজ্যে নিয়ে যাওয়া হবে। তখনই কাতারের আমীরের এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের কথা বলা হয়।
বিএনপির একটি সূত্র জানিয়েছিল, খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য চীনে নেয়ার একটি প্রস্তাব সে দেশ থেকে এসেছিল। তাকে বিদেশে নেওয়ার জন্য চীন এয়ার অ্যাম্বুলেস পাঠাতেও আগ্রহী ছিল।

কিন্তু খালেদা জিয়ার যুক্তরাজ্য প্রবাসী বড় ছেলে তারেক রহমান তার মাকে লন্ডনে নেওয়ার এবং সেজন্য কাতার আমীরের এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহারের পক্ষেই মত দেন, কারণ ওই উড়োজাহাজটি ঢাকা থেকে সরাসরি লন্ডনে পৌঁছাতে পারে, জ্বালানি নিতে মাঝে কোথাও নামতে হয় না।

কাতারের আামীর শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করেই চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি চিকিৎসার জন্য লন্ডনে গিয়েছিলেন খালেদা জিয়া। সেখানে লন্ডন ক্লিনিকে ভর্তি রেখে কিছুদিন তার চিকিৎসা চলে। পরিস্থিতির উন্নতি হলে কিছুদিন লন্ডনে তারেকের বাসায় থেকে চিকিৎসা নেন। অনেকটা সুস্থ হয়ে গত ৬ মে একই এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তিনি দেশে ফিরেছিলেন।

বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান বলেন, কাতার রাজপরিবারের এয়ারঅ্যাম্বুলেন্সটিতে কারিগরি ত্রুটি থাকায় কাতারের আমীর তার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী অন্য একটি এয়ারঅ্যাম্বুলেন্স পাঠাচ্ছেন, যা শনিবার বিকাল ৫টায় ঢাকায় অবতরণ করবে। এখন যে এয়ারঅ্যাম্বুলেন্সটি আসছে, সেটিও কাতারের এয়ারঅ্যাম্বুলেন্স কিন্তু জার্মান কোম্পানির তৈরি। কাতার জার্মানী থেকে কোন এয়ারঅ্যাম্বুলেন্স বাংলাদেশে পাঠাচ্ছে না।


সর্বশেষ সংবাদ