শুধু নারী নয়, পুরুষরাও নিজের জন্যে সাজে

পোশাকের স্বাধীনতা নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে আয়োজিত অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেয়া মোস্তাফিজুর রহমান প্রত্যয়কে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ কয়েকদিন থেকেই আলোচনা-সমালোচনা চলছে
পোশাকের স্বাধীনতা নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে আয়োজিত অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেয়া মোস্তাফিজুর রহমান প্রত্যয়কে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ কয়েকদিন থেকেই আলোচনা-সমালোচনা চলছে  © সংগৃহীত

পুরুষের কপালে টিপ বেমানান তা কিন্তু না। আপনি হয়তো দেখেননি কিন্তু ভারতীয় উপমহাদেশের পুরুষদের কপালে টিপ কখনো খড়িমাটি কখনো ছাইভস্ম, চন্দন কিংবা সিঁদুরের ফোঁটায় অঙ্কিত হয়েছে, এখনও হয়। টিপ পরাকে মেয়েলিপনা বলেও আপনি আখ্যা দিতে পারেন না কারণ টিপ কখনো পুরুষের ললাটে বীরত্ব কখনো স্নেহের প্রতীকে উজ্জ্বল হয়ে উঠে।

পুরাকালে রাজারা অভিষেকের সময় কপালে রাজটিকা পরিধান করতো, যুদ্ধে গমনের সময়ও রাজচিহ্ন কপালে বহন করতো বীর সেনানীরা। ভাইফোঁটাতে ভাইয়ের কপালে বোনেরা কাজলের ফোঁটায় স্নেহধারা রেখে যায়। মৃত্যুর পর পুরুষরা চন্দনের তিলক ললাটে ধারণ করেই চিতায় যায়। তাই পুরুষের টিপ/তিলক পরার বিষয়টিকে হাস্যরসে উড়িয়ে দেয়া নিতান্তই বোকামি।

মফস্বলের কীর্তনের আসরে বাপ-দাদার বয়সী মানুষদের ভক্তিভরে তিলকের ফোঁটা কপালে নিতে দেখি, হয়তো ধর্মভীরুতার জন্য কিন্তু পুরুষালি ইগো তাদের মাঝে দেখিনি। আমি নিজেও দুর্গাপূজার বিজয়া দশমীতে কপালে সিঁদুরের ফোঁটা নেবার লোভ সামলাতে পারিনা। এটা ধর্মভীরুতা নয়, নিজস্ব ভাললাগা।

কেননা বছরের ৩৬৪ দিন শেষে এই একটা দিন নিজেকে অন্যরকম লাগে, ব্যক্তিগত ভাললাগা বলা চলে। আমার ভাললাগাকে আপনি সম্মান নাই করতে পারেন তবে অসম্মান করতে পারেন না।

আরও পড়ুন: শাড়ি-লুঙ্গিসহ পাঁচটি জাতীয় পোশাক ঘোষণার দাবি

একবার আমাকে একজন বলেছিল, তোমরা যে ভাবো মেয়েরা তোমাদের দেখানোর জন্য সাজে, তোমাদের চিন্তা ভুল। মেয়েরা নিজের জন্য সাজে। কথাটা সত্য, শুধু মেয়েরা না, বেশিরভাগ মানুষ নিজের অজান্তেই নিজের জন্য সাজে, পুরুষ-নারী উভয়ই।

পছন্দের টিশার্টটা পুরনো হয়ে গেলেও আমরা পরি, লোকে কি ভাববে সে ব্যাপারে মোটেও কনসার্ন থাকে না। কারণ আমরা নিজের জন্য সাজি।

তেমনি মোস্তাফিজুর রহমান প্রত্যয় নামে যে ছেলেটা কপালে টিপ আর কানে ফুল পরেছে বলে এত সমালোচিত হচ্ছে সে হয়তো নিজের জন্যই সাজে। নিজের ভালোলাগাকে প্রাধান্য দেয়াতে কোনো ভুল নেই। নিজেকে সুখী রাখতে পারা একপ্রকার আর্ট।

আর সবকিছুই আপনার-আমার মর্জিমতো হতে হবে এমন কোনো বিধান নেই। আপনার চোখে কোনকিছু অস্বাভাবিক লাগলেই ব্যাপারটা ভুল/দৃষ্টিকটু এমন ভাবনা বাদ দিন। বৈচিত্র্যে সৌন্দর্য আছে, তারচেয়ে বেশি সৌন্দর্য ব্যক্তিস্বাধীনতায়। আসুন নিজের দৃষ্টিভঙ্গিকে আরেকটু প্রসারিত করি, বৃত্তের বাইরে বেরিয়ে ভাবার প্র্যাকটিস করি। দেখবেন একদিন সমাজটা সুন্দর হয়ে যাবে। [ফেসবুক থেকে সংগৃহীত]

লেখক: সভাপতি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ফটোগ্রাফিক সোসাইটি


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence