‘বিএমইউতে এআই প্রযুক্তি কাজে লাগানোর বিরাট সুযোগ রয়েছে’

বিএমইউতে এই সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়
বিএমইউতে এই সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়  © সংগৃহীত

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এখন আর ভবিষ্যৎ নয়, বর্তমানের চিকিৎসা ব্যবস্থাকে নতুন স্তরে উন্নীত করার শক্তিশালী মাধ্যম। বাংলাদেশে এর প্রয়োগ বাড়াতে গবেষণা সহযোগিতা ও নীতি-সমন্বয় জরুরি। বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) বিদ্যমান জনবলের উন্নয়ন ও দক্ষতা বৃদ্ধি এবং সম্পদের সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে এআই প্রযুক্তি কাজে লাগানোর বিরাট সুযোগ রয়েছে। বুধবার (৩ ডিসেম্বর) বিএমইউয়ে ‘এ আই: উদ্ভাবন এবং ভবিষ্যতের দিকনির্দেশনা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান বক্তার বক্তব্যে পাকিস্তানের কমস্যাটস ইউনিভার্সিটি ইসলামাবাদের একাডেমিক অ্যাডমিনিস্ট্র্রেটর ড. হাম্মাদ ওমর এসব কথা বলেছেন।

সেমিনারে আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানে এআইয়ের ভূমিকা, সম্ভাবনা, অগ্রগতি, উন্নয়ন, এআই উদ্ভাবনে গবেষণার অগ্রাধিকার, সহযোগিতামূলক পথ চিহ্নিতকরণ, ভবিষ্যৎ গবেষণার ক্ষেত্র, প্রযুক্তি-সমন্বিত স্বাস্থ্যসেবা গঠনের রূপরেখাসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিশদ আলোচনা করা হয়। এ ছাড়া দেশীয় গবেষকদের জন্য প্রয়োজনীয় বিশেষায়িত প্রশিক্ষণ, স্বাস্থ্য ডেটা ম্যানেজমেন্ট ও রোগ-ব্যবস্থাপনা, চিকিৎসা গবেষণায় মেশিন-লার্নিং প্ল্যাটফর্ম, রোবোটিক সাপোর্টসহ বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরা হয়। বক্তারা এআইয়ের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে আঞ্চলিক-আন্তর্জাতিক সহযোগিতার উপর গুরুত্বারোপ করেন। 

আন্তর্জাতিক এআই গবেষক ও প্রযুক্তি উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ ড. হাম্মাদ ওমর তার বক্তব্যে বিশ্বব্যাপী চিকিৎসা গবেষণা, বায়োমেডিকেল ডেটা বিশ্লেষণ, রোগ-নির্ণয়ের স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তি এবং জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় এআইয়ের দ্রুত অগ্রগতির বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। তিনি বলেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এখন আর ভবিষ্যৎ নয়, এটি বর্তমানের চিকিৎসা ব্যবস্থাকে নতুন স্তরে উন্নীত করার শক্তিশালী মাধ্যম। বাংলাদেশে এর প্রয়োগ বাড়াতে গবেষণা সহযোগিতা ও নীতি-সমন্বয় জরুরি। চিকিৎসা-শিক্ষা, গবেষণা ও রোগীসেবায় এআই-সমর্থিত প্রযুক্তি অন্তর্ভুক্ত করা সময়েরই দাবি।

ড. হাম্মাদ ওমর বলেন, বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদ্যমান জনবলের উন্নয়ন ও দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে মানবসম্পদ তৈরি, সম্পদের সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে এআই প্রযুক্তি কাজে লাগানোর বিরাট সুযোগ রয়েছে। অনুষ্ঠানে তিনি অংশগ্রহণকারী সম্মানিত ফ্যাকাল্টি ও রেসিডেন্টবৃন্দের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।

সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএমইউর ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলম বলেন, স্বাস্থ্যখাতের সকল ক্ষেত্রেই এআই অবদান রাখতে পারে। এআইয়ের ব্যবহারের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবাখাতের উন্নয়নে বাংলাদেশে বিএমইউ নেতৃত্ব দেবে এটাই কাম্য।

তিনি বলেন, বিএমইউতে রোগীর সংখ্যা অনেক, প্রচুর ডাটা রয়েছে। যার মাধ্যমে প্রচুর গবেষণার সুযোগ রয়েছে। বিএমইউর সম্পদকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশে স্বাস্থ্য বিষয়ক গবেষণা, চিকিৎসাসেবা ও উচ্চতর মেডিকেল শিক্ষায় প্রধান নেতৃত্ব দেওয়া সম্ভব। দেশের প্রথম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে সে লক্ষ্য পূরণে সংশ্লিষ্ট সকলকে কাজ করতে হবে। দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও বিশেষজ্ঞদের পারস্পারিক সহযোগিতা এই লক্ষ্যে পৌঁছানোকে সহজতর করবে।

প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, এআই বিষয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণের মাধ্যমে এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় জ্ঞান আহরণ করা জরুরি। অনকোলজি, রেডিওলজিসহ বিভিন্ন বিষয়ে এআই প্রযুক্তির গুরুত্ব অপরিসীম। আগে-ভাগে রোগ নির্ণয়, দ্রুত নির্ভুল রোগ নির্ণয়ে এআই অবদান রাখতে পারে। তাই এই বিষয়ে চিকিৎসকদেরও প্রয়োজনীয় জ্ঞান ও দক্ষতা থাকা আবশ্যক।

অন্ষ্ঠুানে আরও বক্তব্য রাখেন মেডিসিন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মো. শামীম আহমেদ, সার্জারি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মো. ইব্রাহীম সিদ্দিক, প্রিভেনটিভ অ্যান্ড সোশ্যাল মেডিসিন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মো. আতিকুল হক। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন পাবলিক হেলথ ইনফরমেটিকস বিভাগের ডা. ফারজানা ইসলাম ও ডা. এসএম শহীদুল হক রাহাত। এতে নিউনেটোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল মান্নান, পাবলিক হেলথ ইনফরমেটিকস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. রাসেল আহমেদসহ বিভাগের শিক্ষক ও রেসিডেন্টরা উপস্থিত ছিলেন।


সর্বশেষ সংবাদ