আলিম পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে রুটিনে বৈষম্য: ক্ষুব্ধ মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা

আলিম পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে রুটিনে বৈষম্য
আলিম পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে রুটিনে বৈষম্য  © সংগৃহীত

আগামী ২৬ জুন শুরু হচ্ছে দেশের উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ পাবলিক পরীক্ষা—এইচএসসি ও আলিম। কিন্তু পরীক্ষার রুটিন প্রকাশের পর থেকেই ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করছেন আলিম বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা। তাদের অভিযোগ, পরীক্ষার রুটিনে উচ্চ মাধ্যমিক (এইচএসসি) শিক্ষার্থীদের তুলনায় তাদের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করা হয়েছে।
 
রুটিন পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, এইচএসসি বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ বিজ্ঞান বিষয়ের পরীক্ষা যেমন জীববিজ্ঞান, উচ্চতর গণিত ইত্যাদির আগে পর্যাপ্ত প্রস্তুতির সময় পাচ্ছেন, যেখানে জীববিজ্ঞান প্রথম পত্রের আগে রয়েছে পাঁচদিন এবং দ্বিতীয় পত্রের আগে একদিনের বিরতি। অপরদিকে, আলিম বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা জীববিজ্ঞান প্রথম পত্রের আগে পাচ্ছেন মাত্র দুইদিন এবং দ্বিতীয় পত্রের আগে নেই কোনো ছুটিই।
 
এছাড়াও, উচ্চতর গণিত প্রথম পত্রের আগে এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা পাচ্ছেন চারদিন, আর আলিম শিক্ষার্থীদের জন্য বরাদ্দ মাত্র দুইদিন। অথচ আলিম শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার বিষয় সংখ্যা তুলনামূলকভাবে বেশি—তারা বিজ্ঞান বিভাগের বিষয় গুলো সহ মোট ১৭টি বিষয়ে পরীক্ষা দেন, যেখানে এইচএসসি শিক্ষার্থীদের জন্য বিষয় সংখ্যা ১৩টি।
 
এই বৈষম্যমূলক রুটিনে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন গাজীপুরের তা'মীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থীরা। তারা বলছেন, একদিকে বেশি সংখ্যক বিষয়ের চাপ, অন্যদিকে প্রস্তুতির জন্য পর্যাপ্ত সময় না থাকা এই দুইয়ের চাপে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত তারা।
 
শিক্ষার্থী হাসান মাহমুদ বলেন, “আমরা আলিম বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী হিসেবে দিনে দিনে প্রমাণ করছি আমাদের যোগ্যতা, কিন্তু পরীক্ষার রুটিনে বারবার বৈষম্যের শিকার হচ্ছি। এটা খুবই হতাশাজনক।”
 
শিক্ষার্থী হাসান আল বান্না বলেন, “বিজ্ঞান বিভাগে আমরা এইচএসসি শিক্ষার্থীদের চেয়েও বেশি বিষয় পড়ি, অথচ পরীক্ষার রুটিনে আমাদের জন্য প্রস্তুতির সময় কম বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এটা সম্পূর্ণ অনায্য।”
 
আরেক শিক্ষার্থী জুবায়ের আব্দুল্লা বলেন, “একটা পরীক্ষার পরপরই আরেকটা পরীক্ষায় বসতে হচ্ছে। কোনো বিশ্রাম নেই, প্রস্তুতির জন্য পর্যাপ্ত সময় নেই। এটা কেমন বিচার?”
 
শিক্ষার্থীরা দ্রুত এই বৈষম্যের নিরসন চান এবং রুটিন পুনর্বিন্যাসের মাধ্যমে সকল শিক্ষার্থীর জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করার দাবি জানান। তাদের মতে, মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের প্রতি দীর্ঘদিন ধরে চলা নীতিগত অবহেলা এই রুটিনেও প্রতিফলিত হয়েছে।
 
আলিম বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড যেন অবিলম্বে এই বৈষম্যের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করেন, যাতে দেশের বিজ্ঞানমনস্ক মেধাবী শিক্ষার্থীরা বৈষম্যহীন পরিবেশে তাদের ভবিষ্যৎ গড়তে পারে।


সর্বশেষ সংবাদ