‘গরিব রাষ্ট্র থেকে ধনী রাষ্ট্রে প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে স্থূলতা ঝুঁকি ১৪ শতাংশ বেশি’

ছবি
ছবি  © সংগৃহীত

বিশ্বজুড়ে স্থূলতা এবং অতিরিক্ত ওজনের সমস্যা প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে, এবং এটি কেবল শারীরিক স্বাস্থ্যের জন্য নয়, সামগ্রিক জনস্বাস্থ্য এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্যও বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে। সম্প্রতি প্রকাশিত একটি গবেষণায় অর্থনৈতিক অবস্থার সাথে স্থূলতার সম্পর্ক নিয়ে বিশদ বিশ্লেষণ করা হয়েছে, যেখানে উদ্বেগজনক কিছু তথ্য উঠে এসেছে। গবেষণাটি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার স্টেপস্ (STEPs) জরিপের তথ্যের ভিত্তিতে পরিচালিত হয়।

গবেষণায় দেখা গেছে, বিশ্বব্যাপী অতিরিক্ত ওজন ও স্থূলতার গড় প্রাদুর্ভাব প্রায় ৩৭ শতাংশ। তবে উচ্চ আয়ের দেশগুলোতে এই হার উদ্বেগজনকভাবে ৬০ শতাংশের বেশি, যেখানে নিম্ন আয়ের দেশগুলোতে তুলনামূলকভাবে কম।

গবেষকরা বলছেন, অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি এবং জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধির সাথে মানুষের খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আসে, যা অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতার ঝুঁকি বাড়ায়। গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে, অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতির সাথে অতিরিক্ত ওজন ও স্থূলতার ঝুঁকি প্রায় ১৪% বৃদ্ধি পায়। এটি পরিষ্কারভাবে ইঙ্গিত দেয় যে উন্নত জীবনযাত্রার সুযোগ থাকা সত্ত্বেও অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস এবং শারীরিক পরিশ্রমের অভাব স্থূলতার মূল কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম।

গবেষণার ফলাফলে দেখা যায়, আমেরিকান সামোয়া স্থূলতার সর্বাধিক হারের (৯৩.৫%) দেশ হিসেবে শীর্ষে রয়েছে, যেখানে উত্তর কোরিয়ায় স্থূলতার হার সবচেয়ে কম (৪.৪%)। অর্থনৈতিক অবস্থার পার্থক্যই এই বৈষম্যের মূল কারণ হিসেবে দেখা যাচ্ছে। বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে সুলভ ও উচ্চ-ক্যালোরি খাবারের সহজলভ্যতা এবং প্রযুক্তিগত উন্নয়নের কারণে শারীরিক পরিশ্রমের অভাবও স্থূলতার সমস্যা বাড়িয়ে তুলেছে। অন্যদিকে, নিম্ন আয়ের দেশগুলোতে স্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণের হার তুলনামূলকভাবে বেশি হলেও অর্থনৈতিক সংকটের কারণে খাদ্য নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যসেবার অপ্রতুলতাও লক্ষণীয়।

জনস্বাস্থ্য গবেষক মোহাম্মদ মেসবাহউর রহমান বলেন, স্থূলতা এবং অতিরিক্ত ওজনের সমস্যা সমাধানে বৈশ্বিক সচেতনতা বৃদ্ধি ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি। সঠিক খাদ্যাভ্যাস, শারীরিক কার্যকলাপ এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা কার্যক্রমের মাধ্যমে এই সমস্যা প্রতিরোধ করা যেতে পারে।

তিনি আরও বলেন, অর্থনৈতিক উন্নয়ন কেবল স্থূলতা বৃদ্ধি নয়, বরং স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রার সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে, যদি সঠিক পরিকল্পনা এবং কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়।

আরও পড়ুন: ঢাবির সুফিয়া কামাল হলে তিলোত্তমাসহ ছাত্রলীগের সাত নেত্রীর প্রবেশ ‘নিষিদ্ধ’

গবেষণাপত্রটি "দ্যা গ্লোবাল বার্ডেন অব ওভারওয়েট-ওবেসিটি অ্যান্ড ইটস অ্যাসোসিয়েশন উইথ ইকোনমিক স্ট্যাটাস, বেনিফিটিং ফ্রম ‘স্টেপস’ সার্ভে অব ডব্লিউএইচও মেম্বার স্টেটস: অ্যা মেটা অ্যানালাইসিস" শিরোনামে 'প্রিভেন্টিভ মেডিসিন্স রিপোর্ট' এ সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে। 

মোহাম্মদ মেসবাহউর রহমানের তত্ত্বাবধানে এই গবেষণায় অবদান রেখেছেন নিপসমের শিক্ষক ডাক্তার শামসুল ইসলাম, ডাক্তার হাফিজা সুলতানা, ডাক্তার নাজমুল হাসান রিফাত এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী পরিচালক জাকি ফারহানা।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence