কোটা বাতিলের দাবিতে নোবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ

কোটা বাতিলের দাবিতে নোবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ
কোটা বাতিলের দাবিতে নোবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ  © সংগৃহীত

সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল এবং সড়ক অবরোধ করেছেন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) সাধারণ শিক্ষার্থীরা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা।

শনিবার (৬ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির পিছনের রাস্তা দিয়ে আবাসিক চারটি হলের সামনে রাস্তা হয়ে পুরো ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে গোল চত্বরে এসে এসে শেষ হয়। এরপর কোটাব্যবস্থা বাতিল চেয়ে বক্তব্য প্রদান শেষে সড়ক অবরোধ করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭ তম ব্যাচের সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের নারী শিক্ষার্থী ময়ূরী নূর বলেন, ‘আমি একজন নারী হয়ে আমি কোটা প্রথার বিপক্ষে অবস্থান করছি। আমি চাই পুরুষের মতো মেধা ও পরিশ্রমের মাধ্যমে আমার যোগ্যতা প্রমাণ করতে।’

আরেক আন্দোলনকারী বলেন, ‘পাকিস্তানিরা যেভাবে বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে দেশকে মেধাশূন্য করতে চেয়েছিল তেমনি বর্তমান সময়ে কিছু লোক কোটার মাধ্যমে দেশের মেধাবী শিক্ষার্থীদের মানসিকভাবে হত্যা করছে। আমরা চাই অচিরেই কোটা সংস্কার করা হোক। দেশের মেধাবীদের মূল্যানয়ন করা হোক।’

সফটওয়্যার ইন্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৬ ব্যাচের শিক্ষার্থী ইশতিয়াক জামিল জানান, ২০১৮ সালের আগে কোটা প্রথা প্রযোজ্য ছিল যা পরবর্তীতে স্থগিত করা এবং সম্প্রতি কোটা প্রথা পুনর্বহাল করার কারণে আমরা এখানে উপস্থিত হয়েছি। কোটা যে কারণে প্রয়োজন হতো তা হচ্ছে, সমাজে সুবিধাবঞ্চিত যারা আছে তাদের সুবিধা দেয়ার জন্য কোটা প্রয়োজন ছিল। কিন্তু বর্তমানে দেখা যাচ্ছে সুবিধাবঞ্চিত যারা আছে তাদের পাশাপাশি আরো বিভিন্ন ক্ষেত্রে কোটাকে এমন ভাবে প্রচার করা হচ্ছে বা আমাদের বিভিন্ন চাকরির ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা  প্রতিযোগিতায়  পিছিয়ে পড়ছে।

নোবিপ্রবির ১৫ তম ব্যাচের এক আন্দোলনরত  শিক্ষার্থী বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলার গঠনে সবচেয়ে বড় বাধা হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে কোটা পদ্ধতি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মেধাবীরাই চালাবে বাংলাদেশ। মেধাবীদের হাত ধরে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ। কিন্তু স্বাধীনতার ৫৩ বছর পর এসেও কোটা পদ্ধতির মাধ্যমে মেধাবীদের সঙ্গে বৈষম্য করা হয়েছে। বিসিএসে ৫৬ শতাংশ কোটা,  রেলওয়েতে ৮১ শতাংশ কোটা সহ বিভিন্ন চাকরির বৈষম্য তৈরি করে মেধাবীশূন্য বাংলাদেশ তৈরি করা হচ্ছে।

বক্তব্য প্রদান শেষে  বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে অবস্থান নেন তারা কিছু সময় পর মূল ফটকের সামনের রাস্তা আটকে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে রাস্তা অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা।এতে করে চলাচলকারী একমাত্র  রাস্তায় দীর্ঘ লাইনের জট সৃষ্টি হয়ে আধা ঘণ্টার মতো সকল গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

উল্লেখ, গত ৯ জুন মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের রায় স্থগিত না করে আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠিয়ে দেন চেম্বার আদালত। ওইদিন আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোতাহার হোসেন সাজু। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। এরপরই নতুন করে দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু হয় কোটাবিরোধী আন্দোলন।

 

সর্বশেষ সংবাদ