চট্টগ্রাম রয়্যালস সরে যাওয়ার নেপথ্যে কী, যা বলছে বিসিবি

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের দল চট্টগ্রাম রয়্যালস খেলোয়াড়দের অনুশীলন
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের দল চট্টগ্রাম রয়্যালস খেলোয়াড়দের অনুশীলন  © সংগৃহীত

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) দ্বাদশ আসর মাঠে গড়াতে আর মাত্র ২৪ ঘণ্টা বাকি। তবে বল ২২ গজে গড়ানোর আগেই বারবার আলোচনার কেন্দ্রে উঠে আসছে চট্টগ্রাম রয়্যালস। কখনো মালিকানা ইস্যু, কখনো দল পরিচালনা—সব মিলিয়ে অনিশ্চয়তার ছায়া শুরু থেকেই ছিল। এবার টুর্নামেন্ট শুরুর ঠিক আগের দিন নতুন করে বড় ধাক্কা খেল ঘরোয়া এই টুর্নামেন্ট।

বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) কাছে আনুষ্ঠানিক চিঠি পাঠিয়ে চট্টগ্রাম ফ্র্যাঞ্চাইজির মালিক কাইয়ুম রশিদ জানিয়েছেন, আর্থিক সংকটের কারণে বিপিএলে আর থাকতে চান না তিনি। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিপিএলের গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য সচিব ইফতেখার রহমান মিঠু। 

তার ভাষ্যমতে, ‘আমরা সকালে চিঠি পেয়েছি, এটা নিয়েই আলাপ করছি সভাপতির (আমিনুল ইসলাম বুলবুল) সঙ্গে। এখন সিদ্ধান্ত তো নিতেই হবে, সব ম্যানেজ করতে খেলোয়াড়দের সঙ্গে বসতে হবে। চিঠিতে অনেক লম্বা কথা বলেছে (চট্টগ্রাম ফ্র্যাঞ্চাইজি), এর মধ্যে মূল কথা আর্থিক সমস্যা।’

অবশ্য, চট্টগ্রাম রয়্যালসকে ঘিরে সাম্প্রতিক সংকট হঠাৎ তৈরি হয়নি; এর পেছনে ছিল একাধিক ধাপে জমে ওঠা জটিলতা। এর আগে বিসিবির পক্ষ থেকে চট্টগ্রাম ফ্র্যাঞ্চাইজির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কয়েকজন ব্যক্তিকে দায়িত্ব থেকে বাদ দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। পাশাপাশি দলটির স্পন্সর প্রতিষ্ঠান নিয়েও প্রশ্ন তোলে বোর্ড। এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা চলার মধ্যেই এবার সরাসরি দল প্রত্যাহারের আবেদন করেন ফ্র্যাঞ্চাইজিটির মালিক।

এদিকে গত আসরে ক্রিকেটার ও সাপোর্ট স্টাফদের বেতন বকেয়া রাখা নিয়ে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছিল চট্টগ্রাম ফ্র্যাঞ্চাইজি। সেই অভিজ্ঞতার পর এবারের আসরের আগে মালিকানাও বদল হয়। নতুন মালিকানার অধীনেও দলটি বিপিএলের আর্থিক ও প্রশাসনিক শর্ত পূরণ করতে পারবে কি না, এ নিয়ে শুরু থেকেই প্রশ্ন ছিল।

আরও পড়ুন: থাকছে না চট্টগ্রাম রয়্যালস, দায়িত্ব নেওয়ার জন্য বিসিবিকে চিঠি

এরই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি আলোচনায় আসে চট্টগ্রাম রয়্যালস ফি ও ব্যাংক গ্যারান্টি বাবদ বিসিবির সব পাওনা পরিশোধ করেছে কি না। এই প্রেক্ষাপটে বিসিবির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, অর্থ পরিশোধ সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণের বিষয়টি তারা যাচাই করেছে এবং তা নিশ্চিত করা হয়েছে। এ নিয়ে মিঠু আরও জানান, বিষয়টি নিয়ে বিসিবির উচ্চপর্যায়ে আলোচনা চলছে এবং টুর্নামেন্টের স্বার্থেই প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

অন্যদিকে বিপিএল শুরুর একেবারে শেষ মুহূর্তে এসে এমন ঘোষণায় স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে চট্টগ্রাম রয়্যালসের ভবিষ্যৎ নিয়ে। তবে বিসিবি সূত্রে জানা গেছে, কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি সরে দাঁড়ালেও টুর্নামেন্ট যাতে বিঘ্নিত না হয়, সে বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে বোর্ড। প্রয়োজনে চট্টগ্রাম দলের দায়িত্ব সাময়িকভাবে বিসিবি নিজেই নেবে—এমন ইঙ্গিতও মিলেছে।

সব মিলিয়ে বিপিএলের দ্বাদশ আসর শুরুর আগে চট্টগ্রাম রয়্যালসকে ঘিরে এই নাটকীয় মোড় নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। এখন দেখার বিষয়, বিসিবি কীভাবে এই সংকট সামাল দিয়ে টুর্নামেন্টকে নির্বিঘ্নে এগিয়ে নেয়।


সর্বশেষ সংবাদ

X
APPLY
NOW!