পাকিস্তানকে উড়িয়ে এশিয়া কাপের অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন ভারত
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০১:০২ AM , আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০১:১২ AM
মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ের ৪১ বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল ভারত-পাকিস্তান। ধারণা করা হচ্ছিল, জমজমাট এক লড়াই হতে যাচ্ছে। তবে, পাকিস্তান অল্পতে গুটিয়ে সেই গুড়ে বালি দেয়।
জবাবে শুরুতে চাপ পড়লেও গ্রুপ পর্ব ও সুপার ফোরের পর ফাইনালেও পাকিস্তানকে নিয়ে ছেলেখেলায় মাতে ম্যান ইন ব্লুরা। শেষমেশ পাকিস্তানকে ৫ উইকেটের ব্যবধানে উড়িয়ে দিয়ে এশিয়া কাপের অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন ভারত। সুর্যকুমারদের রেকর্ড নবম এশিয়া কাপের শিরোপা এটি।
রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দুবাইতে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ১৯ দশমিক ১ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ১৪৬ রানে থামে পাকিস্তানের ইনিংস। জবাবে ২ বল ও ৫ উইকেট হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে নোঙ্গর করে ভারত।
লক্ষ্য তাড়ায় নেমে শুরুতেই বিপাকে পড়ে ভারত। দুর্দান্ত ফর্মে থাকা অভিষেক শর্মা যেন ফাইনালে নিজেকে চিনতেই পারেননি না, ফাহিমকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে হারিসের হাতে ক্যাচ দিয়ে মাত্র ৫ রান করে ফেরেন এই ওপেনার।
পরের ওভারে দ্য গ্রিন ম্যানদের আরও এক আঘাত, এবার সূর্যকুমার যাদব। শাহিন আফ্রিদির স্লোয়ারে তুলে মারতে গিয়ে ঠিকমতো টাইমিং হয়নি। মিড-অফে সামনে ঝাঁপিয়ে অসাধারণ ক্যাচ নেন সালমান আগা।
ভারতীয় ইনিংসে তৃতীয় ধাক্কা দেন ফাহিমই। নিজের দ্বিতীয় ওভারে শুভমান গিলকে (১২) ফিরিয়ে দেন তিনি। মিড-অন পজিশনে ফের ক্যাচ নেন হারিস রউফ। মাত্র ২০ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকে ভারত।
আরও পড়ুন: ইতিহাস গড়ে শিরোপা জিতল ভারত
এরপর সাঞ্জু স্যামসন ও তিলক ভার্মা ৫৭ রানের জুটি গড়ে সেই ধাক্কা সামাল দেন। তবে, ২১ বলে ২৪ রান করে ফেরেন স্যামসন।
পঞ্চম উইকেটে ৬০ রানের জুটি গড়ে দলকে জয়ের প্রান্তে নিয়ে যান তিলক ও দুবে। প্যাভিলিয়নে ফেরার আগে ২২ বলে দুটি করে চার ও ছক্কায় ৩৩ রানের ইনিংস খেলেন দুবে। অন্যপ্রান্তে ৪ ছক্কা আর ৩ চারে ৫৪ বলে ৬৯ রানের হার না মানা ইনিংস খেলেন তিলক।
এর আগে, ফাইনালের চাপ মোকাবিলায় দারুণ শুরু এনে দেন পাকিস্তানের দুই ওপেনার শাহিবজাদা ফারহান ও ফখর জামান। নতুন বলে জাসপ্রিত বুমরাহ কিংবা মাঝের ওভারে কুলদীপ যাদবের মতো চায়নাম্যান স্পিনার—সবাইকেই স্বাচ্ছন্দ্যে খেলেন ফারহান। বড় ম্যাচে মাত্র ৩৫ বলে ফিফটি পূরণ করেন তিনি। তবে হাফ-সেঞ্চুরির পর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি এই ওপেনার। ৩৮ বলে ৫৭ রানে তার বিদায়ে ভাঙে ওপেনিং জুটি।
তিন নম্বরে নামা সাইম আইয়ুবের সঙ্গে জুটি গড়ার চেষ্টা চালান ফখর। তবে, তাকে বেশিক্ষণ সঙ্গ দিতে পারেননি সাইম। আগের ৬ ম্যাচে চারবার ডাক খাওয়া টপ-অর্ডার এই ব্যাটার শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে ১১ বলে ১৪ রানের বেশি করতে পারেননি। কুলদীপকে ব্যাকফুটে খেলতে গিয়ে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে বুমরাহর হাতে ক্যাচ দেন।
এরপর রানের খাতা খোলার আগেই ফেরেন মোহাম্মদ হারিস (২ বলে ০)। অক্ষর প্যাটেলের বলে লং অফে রিংকু সিংয়ের হাতে ধরা পড়েন উইকেটকিপার এই ব্যাটার।
‘মোমেন্টাম’ হারানোর দিনে ফখরও বেশিক্ষণ আর টিকতে পারেননি। বরুণের বলে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ফিফটি পূরণ করতে গিয়ে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে কুলদীপের হাতে ধরা পড়েন।
মুহূর্তেই ১১৩/১ থেকে ১৩৩/৬–এর দলে পরিণত হয় দ্য গ্রিন ম্যানরা। ফখরের পর হুসেইন তালাত ও অধিনায়ক আগা সালমানও বেশিক্ষণ টেকেননি। ২ বলে মাত্র ১ রান করে তালাত, আর ৭ বলে মাত্র ৮ রানে ফেরেন সালমান।
দলীয় ১৩৪ রানে ফেরেন শাহিন আফ্রিদি। কুলদীপের বলে এলবিডব্লুর ফাঁদে পড়ে ৩ বলে ০ রানে ফেরেন তিনি। নিজের শেষ বলেও উইকেট নেন কুলদীপ। আফ্রিদিকে ফেরানোর এক বল পর ফাহিম আশরাফকেও (২ বলে ০) ফেরান।
১৮তম ওভারের বুমরাহর পঞ্চম বলে ফেরেন হারিস রউফ (৪ বলে ৬)। আর ইনিংসের শেষ ওভারের প্রথমে বল মোহাম্মদ নওয়াজকে (৯ বলে ৬) ফেরান বুমরাহ। সবমিলিয়ে পাকিস্তানের প্রথম তিন ব্যাটার ছাড়া আর কেউই দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেননি।
ম্যান ইন ব্লুদের হয়ে ৪ উইকেট নেন কুলদীপ। এছাড়া দুটি করে উইকেট নেন বুমরাহ, অক্ষর প্যাটেল ও বরুণ চক্রবর্তী।