‘রক্ষণশীল সমাজে’ নারীশিক্ষা প্রসারে প্রয়োজন বিশেষায়িত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান: ইডেনের সেমিনারে বক্তারা

সেমিনারে অতিথিরা
সেমিনারে অতিথিরা  © সংগৃহীত

রক্ষণশীল পারিবারিক ধারার কারণে অনেকেই ছেলে-মেয়ের সমন্বিত বা সহশিক্ষা পছন্দ করেন না। তাই নারীশিক্ষার প্রসার ঘটাতে নারীর জন্য বিশেষায়িত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংরক্ষণের প্রয়োজন। এতে নারীর শিক্ষার প্রসার ঘটবে, একই সঙ্গে বাড়বে নারীর ক্ষমতায়ন। আজ রবিবার (১৪ ডিসেম্বর) রাজধানীর ইডেন মহিলা কলেজে ‘নারীর ক্ষমতায়ন ও বাস্তবতা’ শীর্ষক সেমিনারে আলোচকদের বক্তব্যে এসব কথা উঠে এসেছে।

ইডেন মহিলা কলেজের সংগঠন ‘নারী অভিযাত্রা’ আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ড. আ ন ম এহছানুল হক মিলন, ইডেন মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. শামছুন নাহার, অর্থনীতি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক শামীম আরা বেগম ও সমাজকর্ম বিভাগের প্রধান ড. আফরোজা বেগম।

এছাড়া অনুষ্ঠানে আলোচনা করেন ইডেন মহিলা কলেজের গনিত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সঞ্চিতা নাসরিন, সমাজকর্ম বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোস্তারি সালেহীন ও বাংলা বিভাগের সহযোগী শামীমা নাসরিন। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নারী অভিযাত্রার উপদেষ্টা কাজী নাসরিন সিদ্দিকা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইডেন মহিলা কলেজ নারী অভিযাত্রার সভাপতি তৈয়বা ত্বাহা।

সেমিনারে বক্তারা বলেন, দেশে মহিলা কলেজ থাকাতে অনেক নারী উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন দেখছে এবং পড়াশোনা করতে পারছে। নারীদের জন্য আরও বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান প্রয়োজন। নারীরা সব জায়গায় অবদান রাখেন। পরিবার থেকে সমাজ, সমাজ থেকে রাষ্ট্র; সব জায়গায় নারীদেরকে এগিয়ে নিতে হবে।

তারা বলেন, চারিদিকে নারীর ক্ষমতায়নের কথা বলা হয়। কিন্তু বাস্তবিক অর্থে নারীকে ক্ষমতা দেওয়া হচ্ছে না। নারীকে বলা হয়, তুমি পারো না এবং দুর্বল। বলা হয়, নারী নেতৃত্বের জন্য অনুপযোগী। প্রত্যেকটি সিদ্ধান্তগ্রহণের জায়গায় নারীকে রাখতে হবে বলেও উল্লেখ করেন বক্তারা।

ইডেন মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. শামছুন নাহার বলেন, শিক্ষায় ছেলেদের পাশাপাশি মেয়েরাও এগিয়ে যাচ্ছে। তবে গ্রাম পর্যায়ে মেয়েরা পিছিয়ে আছে। রাজনৈতিক ক্ষেত্রে নারীরা পিছিয়ে আছে, সিদ্ধান্তগ্রহণের জায়গায় নারীকে সংকোচিত করা হয়েছে।

ড. আ ন ম এহছানুল হক মিলন বলেন, নারীরা কর্মক্ষেত্রে কাজে অভ্যস্ত এবং আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করেন। নারীরা নানা অজুহাত কম দেন। নারীরা পিছিয়ে নয়, আরো এগিয়ে যেতে হবে। নারীরা যত এগিয়ে যাবে, আমরা জাতি হিসেবে তত বেশি এগিয়ে যাবো। নারীদের খাটো করা যাবে না, যথাযথ মর্যাদা দিতে হবে।

ইডেন মহিলা কলেজ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ইডেন মহিলা কলেজ থাকতে হবে। এই প্রতিষ্টানকে ক্ষতিগ্রস্ত করা যাবে না। নারী শিক্ষায় এই প্রতিষ্ঠানের অবদান অপরিসীম। ইডেন কলেজেকে মৃত করা করে আবার জীবিত করা; এর কোনো মানে হয় না। ইডেনের প্রসার ঘটাতে হবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান বলেন, ইডেন কলেজ থেকে আমার শিক্ষা নেয়া। নারীদেরকে শিক্ষিত করে তোলার জন্য এই কলেজের অবদান ব্যাপক, নারী শিক্ষায় আরো এগিয়েছে যাবে এই কলেজ। সরকারকে আরো বেশি পৃষ্ঠপোষকতা করতে হবে ইডেন মহিলা কলেজকে এগিয়ে নেয়ার জন্য।

তিনি আরও বলেন, মেয়েরা পারে, অনেক কিছু পারে। মেধার দিক থেকেও এগিয়ে যাচ্ছে মেয়েরা। মেয়েরা সব জায়গায় কাজ করছে। তবে প্রান্তিক এলাকায় পিছিয়ে আছে। নারীর ক্ষমতায়ন শুধু কথায় নয়, কাজে প্রমাণ করতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে তৈয়বা ত্বাহা বলেন, নারীশিক্ষার আতুড়ঘর ইডেন মহিলা কলেজ। এই কলেজ থেকে পড়াশোনা করে নারীরা দেশের জন্য কাজ করছে এবং অবদান রাখছে। বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে হলে নারীর ব্যাপক প্রসার ঘটাতে হবে। মা শিক্ষিত হলে জাতি হিসেবে আমরা শিক্ষিত হবো।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence