‘শত শত হুমকি পাচ্ছেন’ রাকসু জিএস সালাহউদ্দিন আম্মার
- রাবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৬:২৬ PM , আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৭:০৬ PM
জুলাই বিপ্লব-পরবর্তী সময়ে বিপ্লবীদের নানাভাবে হুমকি ও প্রাণনাশের চেষ্টা করা হয়েছে। তবে নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে দুষ্কৃতকারীরা তত বেশি সরব হচ্ছে। ১১ নভেম্বর এক আওয়ামী লীগারের একটি ফেসবুক পোস্টে জুলাই বিপ্লবীদের কিছু মানুষকে যেন তাদের পাওনা বুঝিয়ে দেওয়া হয় বলে উসকানি প্রদান করা হয়। ওই পোস্টে ওসমান হাদির পর সালাহউদ্দিন আম্মারের নাম উল্লেখ ছিল। ইতোমধ্যে হাদির ওপর ভয়াবহ হত্যা চেষ্টা করা হয়েছে। তবে কি কিলিং মিশনের নেক্সট টার্গেট জুলাইয়ের অন্যতম যোদ্ধা ও রাকসুর সাধারণ সম্পাদক (জিএস) সালাহউদ্দিন আম্মার?
এদিকে দেশি-বিদেশি নানা জায়গা থেকে নানা মাধ্যমে অনবরত হত্যার হুমকি পাচ্ছেন আম্মার। ফলে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন তিনি। এর আগেও জুলাইয়ে আন্দোলন চলাকালে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার এবং সাবেক রাসিক মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ১০ কোটি টাকা দিয়ে সার্ফ স্যুটার আনেন বলে জানা যায়।
শত শত হুমকি পাচ্ছেন নিশ্চিত করে সালাহউদ্দিন আম্মার বলেন, ‘প্রতিদিন হত্যার হুমকি দিয়ে শত শত মেসেজ, শতশত কল পাচ্ছি। মেসেজ দিয়ে আব্বু-আম্মুর ছবি পাঠায়। এতে আমি চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি কিন্তু আমি বিন্দু পরিমাণ ভীত নয়। এখনো আমার নম্বরটাও পরিবর্তন করিনি। শত শত হুমকির মধ্যে হাজার হাজার মানুষ যে আমাকে নিয়ে শঙ্কিত, এটাই আমার জীবনের পাওয়া।’
রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে লড়াই জারি থাকবে জানিয়ে রাকসু জিএস বলেন, ‘আমরা লড়ব ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে। আমরা লড়ব ইনসাফের পক্ষে। আমরা লড়ব, না হয় মরব, পিছনে ফেরার বিন্দুমাত্র সুযোগ নেই। আমি এভাবেই নিজের জীবন পার করব যত দিন বাঁচব। আমাদের লড়াই জারি থাকবে, আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে আমার সদা জাগ্রত। আল্লাহর জান আল্লাহ নেবে আজ হোক বা কাল। আমি আমার জীবন নিয়ে বিন্দুমাত্র ভীত নই। আমার কিছু হলে আব্বু-আম্মুকে দেখে রাখবেন আপনারা। হাদি ভাইয়ের তো ১০ মাসের সন্তান আর আমার দুটি বৃদ্ধ সন্তান আমি রেখে যাব।’
আরও পড়ুন: আগামীকাল দুপুরের পর মেডিকেল-ডেন্টাল ভর্তি পরীক্ষার ফল
নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক আসাদুলা-হিল-গালিব গতকাল ফেসবুকে লিখেছেন, ‘দয়া করে আমার ক্যাম্পাসের টাকে (সালাহউদ্দিন আম্মারকে) কেউ কিছু করবেন না, অনুরোধ রইলো। ওইটা শুধু আমার আর আমার ভাই মোস্তাফিজুর রহমান বাবুর (রাবি শাখা সভাপতি) ভাগ। ছোট ভাই প্রটেকশন বাড়াও। ৮০ সিসি বাইক নিয়ে একা একা ঘুরাঘুরি করো না। আর তোমার আব্বার সাদিক কায়েম (ডাকসুর ভিপি) হেলিকপ্টারে যাতায়াত করে তুমি অন্তত প্লেনে ঢাকা যাবা তা না হলে যমুনার আগে ও পরে একটা কিছু হলেও হতে পারে। আমি চাই তুমি বেঁচে থাকো, অনেক হিসাব আছে।’
ড্যাল্টন সৌভত হীরা নামের ফেসবুক আইডির ৯ নভেম্বর দেওয়া উসকানিমূলক ওই পোস্টে লেখা হয়, ‘১৩ তারিখের মধ্যে কিছু মানুষের পাওনাটুকু যেন বুঝিয়ে দেয়া হয় যদি তারা সাহস করে বের হয়– হাদি একজন, সালাহউদ্দিন আম্মার একটা, এনসিপির টোকাইগুলো কয়েকটা, ৩২ ভাঙার যাবতীয় উসকানি দেয়া হাসান রোবায়েত, হুজাইফা, মাহদূহ, হিযু বাহিনীর একেকটা।’
ফ্যাসিস্টবিরোধী আন্দোলনের বিপ্লবীদের নিরাপত্তা জোরদার করা জরুরি উল্লেখ করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. মো. ফজলুল হক বলেন, বিপ্লব পরবর্তী সময়ে বিপ্লবীরা নানাভাবে হুমকি ও আক্রমণের শিকার হচ্ছে। তাদের নিরাপত্তা জোরদার করতে সরকারের জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। নতুবা নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও ভেঙে পড়বে এবং জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ওপর এর প্রভাব পড়তে পারে।