‘অফিস কক্ষে রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে মিটিং করছিলেন রেজিস্ট্রার’, ঘটনার বর্ণনায় যা বললেন আম্মার
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১০ নভেম্বর ২০২৫, ০৮:১৭ AM
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ইফতিখারুল আলম মাসউদের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডার ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন রাকসুর সাধারণ সম্পাদক (জিএস) সালাহউদ্দিন আম্মারের। রবিবার (৯ নভেম্বর) রাতে সামাজিক মাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে ওইদিন রেজিস্ট্রারের কক্ষে ঘটে যাওয়া ঘটনার বর্ণনা দেন তিনি।
সালাহউদ্দিন আম্মারের দেওয়া পোস্টটি দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসের পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে দেওয়া হলো-
‘আজকে (রবিবার) ঘটে যাওয়া ঘটনাটা সামনে নিয়ে আসতে চাইনি, এজন্য দুপুর ২টার ঘটনা এই রাতে পোস্ট হচ্ছে হয়তো!! এখন ক্লিয়ার করার প্রয়োজন মনে করছি কারণ সাংবাদিক ভাইয়েরা কল দিচ্ছেন বারবার।’
ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অপসারণের আন্দোলন চলছে প্রায় ২৩ দিন। তাদের ক্লাস পরীক্ষা সবকিছুই বন্ধ, শিক্ষার্থী প্রতিনিধি হিসেবে এর থেকে বড় পেরেশানি আমার কাছে আর কিছুই হতে পারে না বা হওয়া উচিতও নয়। আমি ভিসি মহোদয়কে বারবার অনুরোধ করেছি মঙ্গলবারে যেন স্যার এটার সমাধান করেন। পরে স্যার বৃহস্পতিবার তাদের বিভাগের চেয়ারম্যানকে অপসারণের কাগজে স্বাক্ষর করেন বেলা ২.৩০ মিনিটের দিকে। স্বাক্ষর করে স্যার রেজিস্ট্রার মহোদয় বরাবর প্রেরণ করেন এই কাগজ, এখন শুধু একটাই কাজ সেটা হলো রেজিস্ট্রার ফর্মালিটিস গুলো মেইন্টেইন করে বিভাগে ইস্যু করবেন। এটা চাইলে বৃহস্পতিবার করা যেতো কিন্তু একটা জিনিস ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগের সবাই, সচেতন, শিক্ষার্থীরা সবাই জানে যে বিভাগের চেয়ারম্যান রেজিস্ট্রার মহোদয়ের প্রত্যক্ষ সমর্থনে সভাপতি হয়েছিলেন।
সেই কাগজটা রবিবার বেলা ২টা পর্যন্ত আটকে রাখা হলো, তার মানে ২৪তম দিনের মতো ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগে তালা মারা। পরে ভিসি মহোদয়ের সচিবকে কল দিলে উনি বললেন, রেজিস্টারের তো এটা অনেক আগে ইস্যু করার কথা। তখন আমি রেজিস্ট্রার স্যারকে কল দিলে উনি ধরেননি।
এরপর বাধ্য হয়ে আমি রেজিস্ট্রার দপ্তরে যাই ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগের শিক্ষার্থী ভাইবোনদের নিয়ে। দপ্তরে ঢুলে রেজিস্ট্রার দপ্তরের সম্ভবত একান্ত সচিব জানালেন- ভিতরে মহানগর বিএনপির সাথে স্যার একটা প্রোগ্রাম করতেছেন, আপনাকে পরে আসতে বলছে!!
এটা শুনে আপনাদের কার কি মনে হবে জানি না তবে আমার ১১৫০০+ ভোটের আমানতের কথা চিন্তা করে মাথায় রক্ত উঠে গেলো। রেজিস্ট্রার দপ্তরে রাজনৈতিক প্রোগ্রাম করবেন সেটার জন্য এতো গুরুত্বপূর্ণ একটা ইস্যু সাইড হয়ে থাকবে?
আমি আবার ওনাকে বললাম- স্যারকে বলেন! রাজনৈতিক প্রোগ্রাম করবে করুক কিন্তু এটা আর্জেন্ট। উনি ফিরে এসে একই কথাই বললেন- আমাকে পরে আসতে বলেছে। আমি তখন নিজেই ঢুকে গেলাম, স্যারকে জিজ্ঞাসা করলাম যে চিঠি আজ ইস্যু হবে কিনা তখন উনি চড়াও হওয়া শুরু করলেন যার পুরোটাই ভিডিওতে দেখবেন। আর শেষে ভিডিও কেটে গেছে সম্ভবত যিনি ভিডিও করছিলেন তার দিকে স্যার তেড়ে আসেন, উনি ভয়ে কেটে দেয় ভিডিও।
সেখান থেকে বেরিয়ে আসি শিক্ষার্থীদের নিয়ে কারণ আমার কাছে সমাধান বেশী জরুরি। আমি এটা ইস্যু করলে অন্যদিকে যাবে, ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগের চিঠির ইস্যু আবার পিছাবে। কিন্তু সন্ধ্যা হতে হতে মুখে মুখে চলে যায় এবং ভিডিও কয়েকজনের কাছে ছড়িয়ে যায়।
ব্যাক্তি সালাহউদ্দিন আম্মার এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছুই না কিন্তু যে পদে আমি আছি সেটার সম্মান আজ ক্ষুণ্ন হয়েছে। আমি শিক্ষার্থীদের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক এবং সিনেট সদস্য।
আর একটা বিষয় ক্লিয়ার করি! রেজিস্টার মূলত একটি অফিসার পদ, ওখানে যিনি বসবেন তিনি অফিসার, কোন সুবিধা নেওয়ার জন্য উনি শিক্ষকের থেকে ৭ স্তর নিচে গিয়ে রেজিস্টার হলেন আমার জানা নেই। তবে যে কয়টা দিন জিএস আছি, ইনশাআল্লাহ কোনো দপ্তর কাজ আটকাইয়া রাখলে বলবেন!
শিক্ষার্থীদের সাথে বিন্দু পরিমাণ প্রহসন চলবেনা, আপনি রাজনীতি করেন আর যাই করেন অফিস টাইমে দায়িত্ব পালন করেন। আমি সালাহউদ্দিন আম্মার সকাল ৮টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত রাবিয়ানদের জন্য রাকসু ভবনের ২০২ নম্বর রুমে বসে থাকি, আসবেন।’