জবি ছাত্রদল নেতা খুন: কোথাও একটা গরমিল দেখছেন সালাউদ্দিন আম্মার

সালাহউদ্দিন আম্মার ও জোবায়েদ হোসেন
সালাহউদ্দিন আম্মার ও জোবায়েদ হোসেন  © টিডিসি সম্পাদিত

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য জোবায়েদ হোসেন হত্যাকাণ্ডে পুলিশের বক্তব্যকে ‘অনেক বেশি সাজানো’ বলে মনে করছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (রাকসু) সাধারণ সম্পাদক (জিএস) সালাহউদ্দিন আম্মার। একই সাথে এর মধ্য দিয়ে বড় কিছু আড়াল করার চেষ্টা হচ্ছে বলেও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন তিনি।

আজ মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) দুপুর ১টা ৫০ মিনিটে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক ফেসবুক পোস্টে এমন কথা লিখেছেন সালাহউদ্দিন আম্মার।

ফেসবুক পোস্টে সালাহউদ্দিন আম্মার লিখেছেন, ‘জুবায়েদ হত্যার গল্পটা যতবার শুনছি, ততবারই মনে হচ্ছে কোথাও যেন কিছু গরমিল আছে। সব কিছু একসাথে মেলানো যাচ্ছে না। কিছু প্রশ্ন একেবারে গলায় কাঁটার মতো আটকে আছে। ধরা যাক বর্ষা আর জুবায়েদের সম্পর্কটা খুব গভীর কিছু ছিল না, তিন-চার মাসের মতো। এমন অবস্থায় চাইলে সে সহজেই সম্পর্কটা শেষ করতে পারত। নানা অজুহাত দেখিয়ে, ধীরে ধীরে দূরে সরে গিয়ে, এই তো স্বাভাবিক পথ। তাহলে এমন ভয়ংকর পরিণতির প্রয়োজনটা কোথায়?’

তিনি লিখেছেন, ‘আবার ভাবুন, মাহিরের সঙ্গে যখন আবার সম্পর্ক জোড়া লাগল, তখনো কেন জুবায়েদকে টিউশন থেকে বাদ দেওয়া হলো না? কেউ কি জোর করে কারো বাড়িতে টিউশন করায়? আরেকটা বিষয় যদি সত্যিই হত্যার পরিকল্পনা করেই থাকে, তাহলে নিজের বাড়ির ভেতরেই এমন কাজ করা? যেখানে প্রথম সন্দেহটা পড়বে তার ওপরই! এটা তো আত্মঘাতী বোকামি ছাড়া কিছু না।’

‘সবচেয়ে অবাক লাগে, মাহির ও বর্ষা দুজনই নাকি সরাসরি হত্যায় অংশ নিয়েছে! এত ঝুঁকি নিয়ে নিজেরাই কেন? চাইলে তো অন্য কারো হাত দিয়েও করানো যেত, কিংবা আরও নিখুঁত কোনো উপায় বেছে নেওয়া যেত। সব মিলিয়ে ঘটনাটা অনেক বেশি সাজানো মনে হয়। মনে হচ্ছে কোনো বড় কিছু আড়াল করার চেষ্টা চলছে, কোনো প্রভাবশালী দিক হয়তো পর্দার আড়ালে রয়ে গেছে।’—যোগ করেন তিনি।

‘এই রহস্যের জাল খুলতে হলে এখন প্রয়োজন নিরপেক্ষ ও নির্ভীক তদন্ত’ উল্লেখ করে সালাহউদ্দিন আম্মার আরও লিখেছেন, ‘কারণ, যদি এটা একটা সাজানো গল্প দিয়ে সত্যকে চাপা দেওয়া হয় তাহলে জুবায়েদের মতো নিরীহ তরুণদের ভবিষ্যৎ বারবার হত্যা করা হবে।’

এর আগে গত রবিবার আনুমানিক বিকেল ৪টার ৪৫ মিনিটের দিকে টিউশন ছাত্রীর বাসার তিন তলায় খুন হন জোবায়েদ। বাসার নিচ তলার সিঁড়ি থেকে তিন তলা পর্যন্ত সিঁড়িতে রক্ত পড়েছিল। তিন তলার সিঁড়িতে উপুড় হয়ে পড়ে থাকতে দেখা যায় তাকে।

মঙ্গলবার সকালে বংশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, দীর্ঘ ৯ বছরের প্রেমের সম্পর্কের ইতি টেনে টিউশন শিক্ষক জোবায়েদ হোসেনকে পছন্দ করেন ওই ছাত্রী বার্জিস শাবনাম বর্ষা। এ বিষয়ে প্রাক্তন প্রেমিক মাহির রহমানকে সরাসরি জানান তিনি। সম্প্রতি জোবায়েদের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন ওই মেয়ে। এরপরই গত ২৫ সেপ্টেম্বর তিনি ও মাহির একসঙ্গে জোবায়েদকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।

ওসি আরও জানান, পরিকল্পনা অনুযায়ী, গত রবিবার সন্ধ্যার আগে টিউশনিতে যাওয়ার সময় আরমানিটোলার নুরবক্স রোডের রৌশান ভিলার নিচে জোবায়েদকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেন মাহির। এ সময় তার সঙ্গে ছিল বন্ধু ফারদিন আহম্মেদ আয়লান। জোবায়েদের অবস্থানসহ সার্বিক বিষয়ে সহযোগিতা করেন ওই ছাত্রী।


সর্বশেষ সংবাদ