রাকসুর জিএস কে এই আম্মার

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচন
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচন  © সংগৃহীত

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে বিজয়ী হয়েছেন ‘আধিপত্যবিরোধী ঐক্য’ প্যানেলের প্রার্থী সালাহউদ্দিন আম্মার। ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট’-এর ব্যাপক প্রভাব থাকা সত্ত্বেও তার এই জয় এখন পুরো ক্যাম্পাসে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু।

ঘোষিত ফল অনুযায়ী, আম্মার পেয়েছেন ১১ হাজার ৪৯৭ ভোট, যেখানে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রশিবির সমর্থিত প্রার্থী ফজলে রাব্বি মো. ফাহিম রেজা পেয়েছেন ৫ হাজার ৭২৭ ভোট। প্রায় ৫ হাজার ৮০০ ভোটের ব্যবধানে এই জয় রাকসু নির্বাচনের সবচেয়ে অপ্রত্যাশিত কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণ ফলাফল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। কারণ, কেন্দ্রীয় সংসদের ২৩টি পদের মধ্যে ২০টি পদেই বিপুল ব্যবধানে জয় পেয়েছে ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট’। কিন্তু জিএস পদটি তারা হারিয়েছে সালাহউদ্দিন আম্মারের কাছে।

সালাহউদ্দিন আম্মার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০২১–২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। বয়সে তরুণ হলেও বিশ্ববিদ্যালয় রাজনীতিতে তিনি ইতোমধ্যেই পরিচিত মুখ। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় থেকেই তার নেতৃত্বগুণ ও সাহসী অবস্থান শিক্ষার্থীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। সেই আন্দোলনে তিনি ছিলেন অন্যতম সমন্বয়ক, আর সহপাঠীদের কাছে তিনি পরিচিত ‘স্লোগান মাস্টার’ নামে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময়ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি ছিলেন অন্যতম সংগঠক ও সক্রিয় অংশগ্রহণকারী।

আম্মার মূলত রাজনীতি শুরু করেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমেই। এর আগে তিনি চলচ্চিত্র ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত ছিলেন, তবে আন্দোলনের মধ্য দিয়েই তার রাজনৈতিক চেতনা বিকশিত হয়। ক্যাম্পাসে তিনি ছিলেন প্যালেস্টাইন সংহতি কর্মসূচি, মানবাধিকার, ও প্রশাসনিক সংস্কারের দাবিসহ নানা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ইস্যুতে সরব। পরে তিনি একটি চাকরিতে যোগ দেন, তবে জুলাই আন্দোলনের সময় চাকরি ছেড়ে পুরোপুরি রাজপথে নেমে আসেন। এরপর থেকে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে কাজ করে চলেছেন।

‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন’-এর সাবেক সমন্বয়ক হিসেবে আম্মারকে সহপাঠীরা দেখেছেন একজন নির্ভীক কণ্ঠস্বর হিসেবে। লিয়াজু বা তোষণ রাজনীতির বাইরে থেকে তিনি শিক্ষার্থীদের অধিকার নিয়ে কথা বলেছেন, এবং সিনিয়র রাজনৈতিক নেতাদের সমালোচনার মুখেও নিজের অবস্থান থেকে সরে আসেননি। অনেকের চোখে তিনি ‘অতি সোজাসাপ্টা’ হলেও, সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছে তিনি হয়ে উঠেছেন সাহসী প্রতিবাদের প্রতীক।


সর্বশেষ সংবাদ

X
APPLY
NOW!