চবির হলে ছাত্রদল প্যানেলের প্রার্থীর কক্ষে দুই বহিরাগত, এসেছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১২ অক্টোবর ২০২৫, ০৮:৫২ PM
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনকে সামনে রেখে আবাসিক হলগুলোতে তল্লাশি চালিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এ সময় এফ রহমান হলে ছাত্রদল প্যানেলের প্রার্থীর কক্ষ থেকে দুবহিরাগতকে শনাক্ত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরিয়াল বডি। নির্বাচনে সহযোগিতার জন্য তাদেরকে গ্রাম থেকে ডেকে নিয়ে এসেছিলেন ওই প্রার্থী।
শনিবার (১১ অক্টোবর) রাত ১২টার দিকে এ এফ রহমান হলের ১৩২ নম্বর কক্ষে এই তল্লাশি চালানো হয়।
জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরিয়াল বডি, নিরাপত্তা দপ্তর ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর যৌথ মাধ্যমে ছেলেদের সোহরাওয়ার্দী হল, এ এফ রহমান হল ও আলাওল হলে তল্লাশি চালায়। এ সময় হলের বিভিন্ন রুমে বহিরাগত শনাক্ত, অবৈধ সিটধারীদের চিহ্নিতকরণ এবং সন্দেহজনক মনে হলে রুমগুলোতে তল্লাশি চালানো হয়।
তল্লাশিতে সোহরাওয়ার্দী হলের একাধিক শিক্ষার্থীর হল কার্ড পাওয়া যায়নি এমনকি অন্যের সিটে আছেন এমন শিক্ষার্থীর সংখ্যাও অনেক। পাশাপাশি শহীদ ফরহাদ হোসেন হলে আসন বরাদ্দ পেলেও থাকছেন সোহরাওয়ার্দী হলে।
আরও পড়ুন : ক্যাম্পাসে সিসি ক্যামেরা সচলসহ নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট সেবা দাবি ছাত্রশিবিরের
এ সময় এফ রহমান হলে ছাত্রদল মনোনীত প্যানেলের নির্বাহী সদস্য প্রার্থী মিজান মিয়ার কক্ষ থেকে দুইজন বহিরাগতকে শনাক্ত করে প্রক্টরিয়াল বডি। মিজান মিয়া দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী। তার সাথে কথা বলে জানা গেছে, তার সহযোগিতার জন্য তিনি দুইজনকে তার জেলার বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে নিয়ে এসেছেন। মিজান মিয়ার রুমে অবস্থান করা সেই দুইজন হলেন, মো. শফিকুল ইসলাম ও রফিকুল ইসলাম। যারা সম্পর্কে তার চাচাতো ভাই হন বলে জানিয়েছেন তিনি। তারা পড়াশোনার সাথে যুক্ত নন।
মিজান মিয়া বলেন, তারা আমার চাচাত ভাই। আমি তাদেরকে বাড়ি থেকে নিয়ে এসেছি আমাকে সহযোগিতা করার জন্য। তারা আমাকে সহযোগিতা করেছে। আমরা যারা দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী আছি, তারা প্রশাসনকে চারটি দাবি দিয়েছিলাম। তার তিন নম্বর দাবির মধ্যে ছিল প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য আচরণবিধি শিথিল করতে হবে। যেহেতু আমরা প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী তাই আমাদের জন্য প্রত্যেকটা পদক্ষেপ চ্যালেঞ্জিং।
তিনি বলেন, নির্বাচন উপলক্ষে আমি যেন বিভিন্ন জায়গায় চলাচল করতে পারি সেই লক্ষ্যে তাদের দুজনকে আমি বাড়ি থেকে নিয়ে এসেছি। আমার রুমে মাদক বা দেশীয় অস্ত্র কোন কিছুই নেই, এই দুইজন আমাকে শুধু সহযোগিতা করছে।
চলাচলের জন্য প্যানেলের সহযোগিতা পাচ্ছেন কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি আমার প্যানেল থেকে সবসময় সহযোগিতা পেয়েছি।
প্যানেলের সহযোগিতা পেয়েও বহিরাগতদের সহযোগিতা কেন নিচ্ছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, যেহেতু আমাকে বিভিন্ন জায়গায় চলাচল করতে হয় সেহেতু তাৎক্ষণিকভাবে প্যানেল আমাকে সহযোগিতা করতে পারবে না। সকল দিক যেন আমি বজায় রেখে কাজ করতে পারি সেই বিবেচনায় দুজনকে নিয়ে এসেছি।
হলে অবস্থান করা দুইজনের একজন মো. শফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, কয়েকদিন আগে মিজান ভাই আমাদেরকে কল দিয়ে বলেন যে এখানে তিনি এখানে একটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন। তিনি আমাকে বলেছিলেন যে, আমাকে তো নির্বাচন উপলক্ষে বিভিন্ন জায়গায় যেতে হয় তুমি আমাকে সহযোগিতা করার জন্য আসতে পারবা কি-না। উনি যেহেতু দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী তাই উনাকে সহযোগিতার জন্য একজন সহযোগির প্রয়োজন। কোথাও যেতে চাইলে আমি ওনাকে নিয়ে যাই। প্রচার প্রচারণা উনি নিজেই চালায়।
হল তল্লাশির সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর মো. নুরুল হামিদ কানন বলেন, আমরা সোহরাওয়ার্দী, এ এফ রহমান ও আলাওল হলে অভিযান পরিচালনা করেছি। আলাওলে সম্পূর্ণ করতে পারিনি। আমরা কিছু সমস্যা পেয়েছি। যেমন শহীদ ফরহাদ হোসেন হলে এলোটমেন্ট কিন্তু থাকে সোহরাওয়ার্দী হলে। আবার অনেক রুমে দেখা গেছে একজন সিট পেয়েছে থাকছে আরেকজন।
তিনি বলেন, এ তল্লাশির মূল উদ্দেশ্য ছিল হলে অবৈধ বহিরাগত কেউ আছে কি-না দেখা। এ এফ রহমান হলের ১৩২ নাম্বার রুমে আমরা দুইজন বহিরাগত পেয়েছি যারা মিজান মিয়া নামের একজন প্রার্থীর পরিচিত।