সাবেক মিল্লাতিয়ান ইবি শিক্ষার্থী সাজিদ হত্যার বিচারসহ ৬ দফা দাবি

সাজিদ হত্যার বিচারের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মানববন্ধন
সাজিদ হত্যার বিচারের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মানববন্ধন  © টিডিসি

গত ১৭ জুলাই সম্প্রতি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) এক পুকুরে আল কোরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাজিদ আবদুল্লাহর লাশ পাওয়া গেছে। এ ঘটনাকে তার পরিবার ও সহপাঠীরা হত্যাকাণ্ড হিসেবে বিবেচিত করছে। ফরেনসিক রিপোর্টের তথ্যানুযায়ীও তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা পানিতে ফেলার ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। সাজিদকে হত্যা বা তার এই অকাল মৃত্যুর রহস্য উদঘাটন করে জড়িতদের বিচার নিশ্চিতসহ ৬ দফা দাবি জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ভিত্তিক তা’মীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসার সাবেক শিক্ষার্থীদের সংগঠন ঢাকা ইউনিভার্সিটি মিল্লাতিয়ান অ্যাসোসিয়েশন।

সোমবার (৪ আগস্ট) বেলা ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির রাজু ভাষ্কর্যের পাদদেশে আয়োজিত এক মানববন্ধন থেকে এসব দাবি জানানো হয়। ঢাকা ইউনিভার্সিটি মিল্লাতিয়ান এসোসিয়েশনের সদস্যসচিব হোসাইন আহমাদ জুবায়েরের সঞ্চালনা ও আহ্বায়ক আব্দুলাহ আল মিনহাজের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যয়নরত মিল্লাতিয়ান শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে বক্তব্য রাখেন নাসরুল্লাহ নাঈম, নাহিদুল ইসলাম, শেরশাহ আলী খান, মুজাহিদুল ইসলাম, সগীর ইবনে ইসমাইল, সালমান সাইফ সিদ্দিকী প্রমুখ।

মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ আজিজুল হক হলের সামনে পুকুর থেকে ভেসে ওঠা লাশটি ছিল ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক মেধাবী ছাত্র সাজিদ আবদুল্লাহর। তিনি তা’মীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসার সাবেক শিক্ষার্থী। তদন্ত প্রতিবেদনে জানা গেছে, গত ১৬ জুলাই রাত ৩টায় তাকে শ্বাসরোধ করে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। লাশ পাওয়া যায় ১৭ জুলাই বিকাল ৬টায়। অথচ লাশ পাওয়ার পর প্রশাসনের নিরব ভূমিকা এবং গলায় ও কপালে আঘাতের চিহ্ন থাকা সত্ত্বেও ঘটনাটি দুর্ঘটনা হিসেবে চালিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টা আমাদের ক্ষুব্ধ করেছে।

তারা আরও বলেন, ঘটনাস্থল বিশ্ববিদ্যালয়ের হলসংলগ্ন হলেও সেখানে ছিল না কোনো সিসিটিভি ক্যামেরা বা পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্হা। এ থেকেই প্রমাণ হয়, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের গাফিলতি ছিল চূড়ান্ত পর্যায়ের। এই হত্যাকাণ্ডকে ঘিরে যে ন্যায়বিচারের লড়াই শুরু হয়েছে, তা সফল না হওয়া পর্যন্ত ইবির শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের সাথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে আমরা একাত্ম পোষণ করছি।

সাজিদের পরিবারের ন্যায়বিচার এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীর নিরাপত্তার স্বার্থে মানববন্ধন থেকে ছয় দফা দাবি জানানো হয়। সেগুলো হল: পিবিআই/ সিআইডি/ বিচার বিভাগীয় কমিটির মাধ্যমে নিরপেক্ষ তদন্ত নিশ্চিত করতে হবে; হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত কারণ ও জড়িতদের চিহ্নিত করে দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার নিশ্চিত করতে হবে; বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের গাফিলতির তদন্ত করে দায়ীদের জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে; সাজিদের পরিবারকে নিরাপত্তা ও আইনি সহায়তা দিতে হবে; বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা, আলোর ব্যবস্হা ও নজরদারি নিশ্চিত করতে হবে; আন্দোলনকারীদের হয়রানি বন্ধ ও সকল রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠন ও শিক্ষার্থীদের কণ্ঠস্বর রক্ষা করতে হবে।

সাজিদের ক্যাম্পাসের সহপাঠী ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের ল অ্যান্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী নাহিদা সুলতানা উর্মি মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন।

 

 

 


সর্বশেষ সংবাদ