ভোর ৪টায় হলে ঢুকে সাড়ে ৬টায় ১০ তলা থেকে লাফ দেন সঞ্জু

ঢাবি শিক্ষার্থী সঞ্জু বাড়ই ও ঢাবি লোগো
ঢাবি শিক্ষার্থী সঞ্জু বাড়ই ও ঢাবি লোগো  © সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) জগন্নাথ হলের সঞ্জু বাড়ই নামে এক শিক্ষার্থীর হলের ছাদ থেকে লাফ দিয়ে আত্মহত্যা করার ঘটনা ঘটেছে। আজ সোমবার (১৪ জুলাই) ভোর সাড়ে ৫টার দিকে হলটির নবনির্মিত রবীন্দ্র ভবনে এ ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের ২০২০-২১ সেশনের এ শিক্ষার্থী গত দুইদিন ধরে হলে ছিলেন না, ছিলেন ঢাকার বকশিবাজারে এক বন্ধুর বাসায়। গতকাল (রবিবার) রাতেও তিনি হলে ছিলেন না। হলে আসেন আজ (সোমবার) ভোর ৪টা ১ মিনিটে। তারপর যান নিজ কক্ষে। এরপর সকাল সাড়ে ৬টার দিকে রবীন্দ্র ভবনের ১০ তলার উপর থেকে লাফ দেন। এসময় বিষয়টি হলের পরিচ্ছন্নকর্মীদের নজরে আসলে কর্তৃপক্ষ জানতে পারে এবং হাসপাতালে নিলে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

তাছাড়া, আত্মহত্যার ৫ ঘণ্টা আগে একটি ফেসবুক স্ট্যাটাস দেন তিনি। এতে তিনি লেখেন, আমি আমার ভুল বুঝতে পেরেছি, আমি দিনের পর দিন কাউকে ডিস্টার্ব করে গেছি, উল্টো মানুষকে দোষারোপ করা আমার একদম ঠিক হয় নি, আমি সকলের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। আমি দিনের পর দিন অন্যায় করেছি, নিজের দোষ ঢেকে অপরজনকে দোষ দেয়া আমার ঠিক হয় নি। আমি সকলের কাছে ক্ষমা চাচ্ছি, আমার কারণে কারো কোনো ক্ষতি হলে সে দায় একান্তই আমার, আমি ক্ষমা চাচ্ছি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জগন্নাথ হলের প্রভোস্ট দেবাশীষ পাল দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আনুমানিক ৫টা ৩৬ মিনিটে একজন ক্লিনার তার কাজ করতে গিয়ে তাকে (সঞ্জু) লাফ দিতে দেখে। পরবর্তীতে তা দারোয়ানকে জানালে সে আমাকে অবগত করে এবং অন্যান্যদের সহায়তায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আমি ও হলের হাউজ টিউটরাও মেডিকেলে চলে যাই। তখন ডাক্তাররা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

তিনি বলেন, আমরা প্রথমে তার পরিচয় শনাক্ত করতে পারছিলাম না। পরবর্তীতে শাহবাগ থানা থেকে পুলিশ এসে তার পকেট থেকে একটা নৃবিজ্ঞান বিভাগের প্রশ্ন পায়। তারপর আমরা তার বিভাগের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের কাছ থেকে তার পরিচয় জানতে পারি সে ওই বিভাগের শিক্ষার্থী।

আত্মহত্যার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, সঞ্জুর সহপাঠীদের কাছ থেকে জানা যায়, তার একটি অ্যাফেয়ার (প্রেমের সম্পর্ক) ছিল। সেটা নিয়ে সমস্যার কারণে কিছুদিন ধরে মানসিক সমস্যায় ভুগছিল। তার বন্ধুদের সাথে কথা বলে জানতে পারি গত দুইদিন ধরে সে হলে থাকে না। তার এক বাল্যবন্ধুর বাসায় থাকতো। সেখান থেকে এসে আজ হলের ছাদ থেকে সে লাফ দেয়।

প্রাধ্যক্ষ দেবাশীষ পাল আরও বলেন, ঘটনার পর আমরা সঞ্জুর রুমমেটদের ডেকে কথা বলেছি। তারা জানায়, আজ সে রুমে ছিল না। গত দুইদিন ধরে হলে আসেনা। তখন তাদেরকে বললাম, আমাদের জানাওনি কেন? তখন তারা বলে, ‘আমরা সঞ্জুর খোঁজ নিয়েছি, সে বলেছিল বকশিবাজারে তার বন্ধুর বাসায় রয়েছে। আজ ভোরে রুমে আসার পর সকালে আমরা দরজা খোলা পাই।’

তিনি বলেন, হলে অনেক সিসি ক্যামেরা আছে। সিসি ক্যামেরা ফুটেজে দেখেছি যে, সঞ্জু ভোর ৪টায় হলের পূর্ব পাশের গেট দিয়ে হলে ঢুকে। পরে রবীন্দ্র ভবনের লিফটে উঠে ১০ তলার যায়। এরপর সাড়ে ৬টার দিকে লাফ দিয়ে নিচে পড়ার একটা অস্পষ্ট ভিডিও আমাদের কাছে। 

 


সর্বশেষ সংবাদ