প্রাথমিক সহকারী শিক্ষকদের ফের কর্মসূচি ঘোষণা
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ০৩:৩৭ PM
কাঙ্ক্ষিত গ্রেড বাস্তবায়নের নিশ্চয়তা না পাওয়ায় আবারও আন্দোলনে নামছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা। ‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ’ নামে একটি মোর্চা গঠন করে আগামী ৮ নভেম্বর থেকে ঢাকা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনগুলো।
বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদের পাঠানো এক বিবৃতিতে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হয়। এতে জনানো হয়, দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের এই আন্দোলনে রয়েছে- বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি (কাশেম-শাহিন), বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতি, বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি (শাহিন-লিপি), সহকারী শিক্ষক ১০ম গ্রেড বাস্তবায়ন পরিষদসহ আরও বেশ কয়েকটি প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠন।
বিবৃতিতে সহকারী শিক্ষকদের তিন দফা দাবি জানানো হয়। সেগুলো হল- ১০ম গ্রেডে বেতন নির্ধারণ, ১০ বছর ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড সমস্যার সমাধান এবং শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতি।
জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা ১০ম গ্রেডের দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন। তাদের কয়েক দফা আন্দোলনের পর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় আপাতত ১১তম গ্রেড বাস্তবায়নের আশ্বাস দেয় এবং সে অনুযায়ী গত ৭ আগস্ট ৩৬৪ নং স্মারকে অর্থ মন্ত্রণালয়ে ১১তম গ্রেডের প্রস্তাবনা পাঠায়। কিন্তু অর্থ মন্ত্রণালয় তা বাস্তবায়ন না করে নবগঠিত পে-কমিশনে পাঠায়। দুই মাস পার হলেও দাবি বাস্তবায়ন না হওয়ায় শিক্ষকরা পে-কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করেন।
বৈঠকে পে-কমিশন জানায়, শিক্ষকদের গ্রেড পরিবর্তনের বিষয়টি পে-কমিশনের এখতিয়ারভুক্ত নয়; এটি সার্ভিস কমিশনের কাজ। পূর্বে পে-স্কেলের জন্য গঠিত কমিশন ছিল যৌথভাবে পে-কমিশন ও সার্ভিস কমিশন নিয়ে, কিন্তু এবারের কমিশন শুধুমাত্র পে-কমিশন।
আরও পড়ুন: বেসরকারি প্রাথমিকের শিক্ষার্থীরাও বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে : হাইকোর্ট
পে-কমিশনের অপারগতার পর শিক্ষকরা আবারও তাদের পূর্বের দাবি—১০ম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে ফিরে যান এবং তা বাস্তবায়নে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে জোটের নতুন কর্মসূচির বিষয়ে বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম বলেন, বারবার আশ্বাস দিয়েও কর্তৃপক্ষ আমাদের দাবি বাস্তবায়ন করছেন না। তাই আমরা আবারও আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়েছি।
বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ বলেন, প্রাথমিকের ডিজি, সচিব ও উপদেষ্টা সহকারী শিক্ষকদের দাবি বাস্তবায়নে আন্তরিক হলেও অর্থ মন্ত্রণালয় কোনো কারণ ছাড়াই কালক্ষেপণ করছে। শিক্ষকরা এবার আন্দোলনের মাধ্যমেই দাবি আদায় করবেন।
বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খাইরুন নাহার লিপি বলেন, শিক্ষকরা তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারির অভিশাপ থেকে মুক্তি পেতে চান। ৮ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচির মাধ্যমে দাবি বাস্তবায়নের পাশাপাশি শিক্ষকরা শ্রেণি বৈষম্য থেকেও মুক্তি পাবেন।
সহকারী শিক্ষক ১০ম গ্রেড বাস্তবায়ন পরিষদের সমন্বয়ক মুহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বলেন, নিয়োগের যোগ্যতা অনুযায়ীই আমরা সহকারী শিক্ষকদের ১০ম গ্রেড দাবি করছি। বারবার আমরা মন্ত্রণালয়ে এর যৌক্তিকতাও প্রমাণ করেছি। কিন্তু সহকারী শিক্ষকদের দাবি বাস্তবায়নের কথা উঠলেই অর্থ মন্ত্রণালয়ের খাজাঞ্চিতে টান পড়ে।
১০ম গ্রেড বাস্তবায়ন আন্দোলনের আরেক সমন্বয়ক মোহাম্মদ আনোয়ার উল্যা বলেন, বারবার প্রতারিত হওয়ায় শিক্ষকরা এখন রাজপথকেই বেছে নিয়েছেন। আশা করি, কর্তৃপক্ষ শিক্ষকদের স্পন্দন বুঝবেন।