বিদেশে উচ্চশিক্ষা

বিশ্ব সেরা শিক্ষার্থীবান্ধব নগরী সিউল হতে পারে আপনার পছন্দের একটি গন্তব্য

দক্ষিণ কোরিয়ায় উচ্চশিক্ষা নিতে চাইলে জেনে নিন খুঁটিনাটি নানা বিষয়ে
দক্ষিণ কোরিয়ায় উচ্চশিক্ষা নিতে চাইলে জেনে নিন খুঁটিনাটি নানা বিষয়ে  © সংগৃহীত

উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে যাওয়া অনেক শিক্ষার্থীর স্বপ্ন। মানসম্মত শিক্ষা, আধুনিক গবেষণা সুযোগ ও বৈচিত্র্যময় সাংস্কৃতিক অভিজ্ঞতা অনেক শিক্ষার্থীকে আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে টেনে নিচ্ছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিদেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের জন্য বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় বাছাইয়ের পাশাপাশি কোন শহরে পড়বেন, সেটি জানাও সমান গুরুত্বপূর্ণ।

সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের শিক্ষা ও গবেষণা সংস্থা QS (Quacquarelli Symonds) ২০২৬ সালের রিপোর্টে দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলকে বিশ্বের সেরা শিক্ষার্থীনগরী হিসেবে ঘোষণা করেছে। গত বছর যেখানে প্রথম স্থানে ছিল লন্ডন, সেখানে এবার শীর্ষে উঠে এসেছে সিউল।

কেন সিউল হবে সেরা গন্তব্য?

১. চাকরির সম্ভাবনা

সিউল এখন বিশ্বের প্রযুক্তি, ব্যবসা ও উদ্ভাবনের অন্যতম একটি কেন্দ্র। গ্যাংনাম ও ডিজিটাল মিডিয়া সিটির মতো গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় বিশ্বের বড় প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো অবস্থিত। শহরের বাণিজ্য বাজারগুলো ব্যবসা, খুচরা ও রপ্তানি খাতেও সুযোগ তৈরি করে।

২. পড়াশোনার খরচ

কিউএস সেরা বিশ্ববিদ্যালয় ওয়েবসাইট অনুযায়ী, সিউলে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের বার্ষিক গড় টিউশন ফি প্রায় ৬ হাজার ৩০০ মার্কিন ডলার। জীবনযাপনের খরচ জীবনধারার ওপর নির্ভর করে ভিন্ন হতে পারে। তবে সাশ্রয়ী ছাত্রাবাস ও খণ্ডকালীন (পার্ট-টাইম) চাকরির সুযোগ খরচ সামলানো সহজ করে তোলে।

আরও পড়ুন: জেনে রাখুন বিশ্বসেরা ২৯ স্কলারশিপের অফিশিয়াল ওয়েবসাইট

৩. ২৪ ঘণ্টার শহর

সিউল প্রাণবন্ত ও কখনো না ঘুমানোর শহর। রাত জেগে পড়াশোনা, খাবারের বাজার বা বিনোদনকেন্দ্র—যে কোনো সময়ে কিছু না কিছু করার মতো জায়গা এখানে সব সময় আছে।

৪. আধ্যাত্মিক সংযোগ

মানসিক শান্তি খুঁজছেন, এমন শিক্ষার্থীদের জন্য শহরে রয়েছে শান্তিপূর্ণ বৌদ্ধমন্দির, যেখানে ব্যস্ত সূচির মধ্যেই ধ্যান, বিশ্রাম ও পুনরুজ্জীবিত হওয়ার সুযোগ মেলে।

সিউলের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো (কিউএস বিশ্ববিদ্যালয় র‍্যাঙ্কিং অনুযায়ী)

*সিউল ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি;

*ইয়নসেই ইউনিভার্সিটি;

*কোরিয়া ইউনিভার্সিটি;

*সুংকিয়ঙ্কওয়ান ইউনিভার্সিটি;

*হ্যানিয়াং ইউনিভার্সিটি;

*কিয়ং হি ইউনিভার্সিটি;

*সিজং ইউনিভার্সিটি;

*চুয়াং-অ্যাং ইউনিভার্সিটি;

*অ্যাওহা ওমেনস ইউনিভার্সিটি;

*সোজাং ইউনিভার্সিটি;

*ডংগুক ইউনিভার্সিটি;

*কনকুক ইউনিভার্সিটি;

*হানকুক ইউনিভার্সিটি অব ফরেন স্টাডিজ;

*ইউনিভার্সিটি অব সিউল;

আরও পড়ুন: বিদেশে উচ্চশিক্ষা: জেনে নিন যুক্তরাষ্ট্রের ফুল-ফ্রি ১৬ স্কলারশিপ সম্পর্কে

আবেদন প্রক্রিয়া

১️. পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট থেকে প্রোগ্রাম, যোগ্যতা ও ফি সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন;

২️. নথি প্রস্তুত করুন—অ্যাকাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট, পাসপোর্ট, ইংরেজি (IELTS) বা কোরিয়ান ভাষা (TOPIK) দক্ষতার প্রমাণপত্র;

৩️. বিশ্ববিদ্যালয়ের অনলাইন পোর্টালে আবেদন করুন;

৪️. নির্ধারিত আবেদন ফি পরিশোধ করুন;

৫️. কিছু বিশ্ববিদ্যালয় অনলাইনে/সরাসরি সাক্ষাৎকার নিতে পারে;

৬️. অফার লেটার পাওয়ার পর দক্ষিণ কোরিয়ার দূতাবাস থেকে D-2 স্টুডেন্ট ভিসার জন্য আবেদন করুন;

৭️. কোরিয়ায় যাওয়ার আগে ডরমিটরি বা শেয়ারড অ্যাপার্টমেন্টে থাকার ব্যবস্থা ও আর্থিক পরিকল্পনা চূড়ান্ত করুন;

আরও পড়ুন: বিদেশে পড়তে যাওয়ার আগে করণীয় ১৫টি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তুতি, জেনে রাখুন

শেষকথা

বিশ্বমানের শিক্ষা, প্রাণবন্ত নগরজীবন, নিরাপদ পরিবেশ ও সমৃদ্ধ চাকরির বাজার—সব মিলিয়ে সিউল এখন শিক্ষার্থীদের জন্য অনন্য গন্তব্য। যারা পড়াশোনার পাশাপাশি বৈশ্বিক ক্যারিয়ার গড়তে চান, তাদের কাছে দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী হতে পারে এক অনন্য সুযোগের শহর।


সর্বশেষ সংবাদ