র্যাবের নিপীড়নে ৯ বছর আগে নিহত শিবির নেতার বাবাকে সাথে নিয়ে মনোনয়ন জমা দিলেন বুলবুল
- চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৭:৫৩ PM
চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ (সদর) আসনে সংসদ সদস্য মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমির ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী পর্ষদের সদস্য নূরুল ইসলাম বুলবুল। আজ সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) দুপুরে জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন মাসুদের কাছে এই মনোনয়নপত্র জমা দেন তিনি। এর আগে ৯ বছর আগে র্যাবের নিপীড়নে নিহত শিবির নেতা আসাদুল্লাহ তুহিনের বাবার দোয়া নেন বুলবুল।
মনোনয়নপত্র জমা শেষে রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় থেকে বের হয়ে উপস্থিত সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করতে সর্বস্তরে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড সৃষ্টি করা জরুরি। এ ক্ষেত্রে প্রশাসনকে নিরপেক্ষতা ও সক্ষমতার প্রমাণ দিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, জুলাই বিপ্লব পরবর্তী নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই। যারা জুলাই চেতনা ধারণ করে ন্যায় ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠায় অঙ্গীকারবদ্ধ, জনগণ তাদেরই নির্বাচিত করবে। এ সময় জাতীয় নির্বাচনের দিনেই জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি প্রদানের লক্ষ্যে যে গণভোট অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, সেখানে জনগণকে ‘হ্যাঁ’ ভোট দেওয়ার জন্য তিনি আহ্বান জানান।
মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন আসাদুল্লাহ তুহিনের বাবা মো. ইমামুল হক, চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র ও সাবেক জেলা আমির অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম, সাবেক জেলা আমির অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির লতিফুর রহমান, জেলা আমির মাওলানা আবু জার গিফারী, সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোখলেশুর রহমান প্রমুখ।
এর আগে আসাদুল্লাহ তুহিনের বাবা ইমামুল হকের সঙ্গে আলিঙ্গন করে তার দোয়া নেন বুলবুল। তুহিন ছাত্রশিবিরের সিটি কলেজ শাখার সভাপতি ছিলেন। ২০১৫ সালের ২৬ জানুয়ারি দুপুরে ভাত খেতে বসার সময় আসাদুল্লাহ তুহিনকে জেলা শহরের চরমোহনপুর চকপাড়া মহল্লার নিজ বাড়ি থেকে চোখ বেঁধে নিয়ে যায় র্যাব সদস্যরা। আটকের সময় মায়ের সামনেই বেধড়ক মারধর করা হয় তাকে। পরদিন তার লাশ পাঠানো হয় সদর হাসপাতালে। তার শরীরে নিপীড়নের চিহ্ন ছিল। তবে তিনি পালাতে গিয়ে ট্রাক চাপায় নিহত হয়েছিলেন বলে ওই সময়ে দাবি করেছিল র্যাব।
ওই সময়ে তুহিনের কয়েকজন সহপাঠী ও বন্ধুকেও আটক করে নিয়ে গিয়েছিলেন র্যাব সদস্যরা। তবে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। ওই সময়ে তারা জানিয়েছিলেন, র্যাব সদস্যরা রাতভর তুহিনকে নির্যাতন করেছিলেন। আটকের পর ছাত্রশিবিরের রাজনীতি ছেড়ে দিতেও চাপ দেওয়া হয়েছিল তাকে। তবে তিনি তাতে রাজি হননি। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তার উপর নিপীড়নের মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছিলেন র্যাব সদস্যরা।
২০১৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর গত ৯ নভেম্বর এ ঘটনায় সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, র্যাবের সাবেক ডিজি, সাবেক এমপি, র্যাব ও পুলিশের কয়েকজন কর্মকর্তা এবং আওয়ামী লীগের নেতাসহ ২৮ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন আসাদুল্লাহ তুহিনের মামা মো. কবিরুল ইসলাম।