শেরেবাংলা নগর থেকে স্মৃতিসৌধ
৩০ কিমি পথ ৫ ঘণ্টায় পৌঁছালেন তারেক রহমান
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:১৩ PM , আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:১৯ PM
রাজধানীর শেরেবাংলা নগর এলাকা থেকে রওনা হয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে ৫ ঘন্টায় পৌঁছালেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আজ শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) বিকেল ৫টার দিকে সাভারের দিকে রওনা হয়ে রাত ১০টা ১১ মিনিটে সেখানে পৌঁছান তিনি। তার সঙ্গে রয়েছেন বিএনপির মহাসচিব ও অন্য সিনিয়র নেতারাসহ অসংখ্য নেতাকর্মী।
এর আগে বিকাল ৪টা ৪৪ মিনিটের দিকে শেরেবাংলা নগরের শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। এরপর দোয়া ও মোনাজাত করেন তারেক রহমান। সেখানে দলের সব নেতাকে সরিয়ে দিয়ে তিনি বাবার কবরের পাশে একান্তে নিরবে দাড়িয়ে থাকেন। তখন তারেক রহমানকে রুমাল দিয়ে চোখ মুছতে দেখা যায়।
এদিকে, জনস্রোতের কারণে সূর্যাস্তের আগে জাতীয় স্মৃতিসৌধে পৌঁছানো সম্ভব না হওয়ায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে দলের নেতারা জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন।
আজ শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় বিএনপির মিডিয়া সেল এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদনের নির্ধারিত সময়সীমা অনুযায়ী সূর্যাস্তের আগে সেখানে উপস্থিত হওয়া সম্ভব না হওয়ায় বিকাল ৫টা ৬ মিনিটে তারেক রহমানের পক্ষে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও ড. আব্দুল মঈন খান। এসময় দলের আরও সিনিয়র নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপির মিডিয়া সেলের পক্ষ থেকে জানানো হয়, মহান জাতীয় স্মৃতিসৌধের বেদীতে নিয়ম অনুযায়ী সূর্যাস্তের আগে পৌঁছানো সম্ভব না হওয়ায় বিকেল ৫টা ৬ মিনিটে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষে মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
আরও পড়ুন : ঢাবির ভর্তি পরীক্ষার জন্য এগিয়ে আনা হল তারেক রহমানের সূচি
আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধসহ ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের গুরুত্ব পয়েন্টে পর্যাপ্তসংখ্যক বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। আর সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ, র্যাব, সোয়াত এবং বিএনপির নিজস্ব নিরাপত্তা টিম সিএসএফের সদস্যদের কড়া নিরাপত্তায় তিনি জাতীয় স্মৃতিসৌধে যাচ্ছেন। কিন্তু সড়কের দুইপাশসহ যাত্রাপথে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী ও উৎসুখ জনতার ভিড় ঠেলে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের শহীদ জিয়ার মাজার থেকে জাতীয় স্মৃতিসৌধের এই প্রায় ত্রিশ কিলোমিটার সড়ক পাড়ি দিতে লাগছে ৬ ঘন্টারও বেশি। এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তারেক রহমানকে বহনকারী গাড়িবহর জাতীয় স্মৃতিসৌধ এলাকায় পৌছাতে পারেনি।
এর আগে, বাদ জুম্মা দুপুর ২টা ৫২ মিনিটে গুলশান এভিনিউর ১৯৬ বাসা থেকে বেরিয়ে উপস্থিত নেতাকর্মীদের হাত তুলে শুভেচ্ছা জানানোর পরে বাসে চড়েন তারেক রহমান। নিরাপত্তা বাহিনীর পাহারায় বাসটি জিয়াউর রহমানের কবর প্রাঙ্গনে এসে পৌঁছাতে আড়াই ঘন্টারও বেশি সময়ে লাগে। গুলশান থেকে বিজয় সারণীর কাছে পৌঁছালে তারেক রহমানের বহনকরা বাস থমকে যায়। নেতা-কর্মীরা সড়কে অবস্থান নেয় এবং তারা শ্লোগান দিতে থাকে ‘তারেক রহমানের আগমন, লাল গোলাপ শুভেচ্ছ’। চারপাশের নিরাপত্তা বেষ্টনীও ভেঙে যায়। বাসের ভেতর থেকে তারেক রহমান হাত নেড়ে শুভেচ্ছার জবাব দেন। ১৫ মিনিট গাড়িবহর থেমে ছিল। পরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা এসে কর্মীদের সারিবদ্ধ করার চেষ্টা করেন। নিরাপত্তা কর্মীরা মাইকে বলতে থাকে সবাই একটু সহযোগিতা করেন, একটু রাস্তা ফাঁকা করে দেন। লাল সবুজ রঙে সাজানো বাসটিতেই চড়েই তিনি বাবার কবর জিয়ারত করতে যান। বৃহস্পতিবার এই বাসেই তিনি বিমানবন্দর থেকে গণসংবর্ধনাস্থলে যান।
এই পর্যায়ে গাড়ি ধীর গতিতে চলতে থাকে। এরোপ্ল্যান মোড় থেকে ক্রিসেন্ট লেকের ব্রিজ পর্যন্ত আধা ঘন্টার বেশি সময় লাগে। জিয়াউর রহমানের কবরে স্থায়ী কমিটির সদস্যদের নিয়ে পুস্পস্তবক অর্পন করেন ৪টা ৪০ মিনিটে।
জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারতের পর বিএনপি নেতা সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে একাত্তরের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। ১৭ বছরের নির্বাসিত জীবনের অবসান ঘটিয়ে বৃহস্পতিবার দেশে ফিরেছেন তারেক রহমান। তাঁর প্রত্যাবর্তনে নেতাকর্মীদের মধ্যে চাঙাভাব বিরাজ করছে। গুলশান-২ গোলচত্বর হয়ে বনানী, সেখান থেকে মহাখালী ফ্লাইওভার, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় এলাকা, বিজয় সরণি ও বিমানচত্বর অতিক্রম করে জিয়া উদ্যানে যান।
এ সময় তারেক রহমানের সঙ্গে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা ড. এ কে এম শামসুল রহমান শামস, উপদেষ্টা ড. মাহদী আমিন, বিএনপি চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এ বি এম আব্দুস ছাত্তার, ‘আমরা বিএনপি পরিবারে’র আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমন, বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মীর মোহাম্মদ হেলাল উপস্থিত ছিলেন।