শৈশবের কোরবানির ঈদ: ফিরে দেখা সোনালি দিনের গল্প

০৭ জুন ২০২৫, ০৯:৩২ AM , আপডেট: ০৯ জুন ২০২৫, ০১:০২ AM
ড. মোহাম্মদ মাসুম বিল্লাহ

ড. মোহাম্মদ মাসুম বিল্লাহ © টিডিসি

শৈশবের ঈদ মানেই ছিল সারল্য, আনন্দ, আর ভালোবাসায় ভরা দিন। কোরবানির ঈদ ঘিরে সেই স্মৃতিময় দিনগুলোর কথা উঠে এলো ড. মোহাম্মদ মাসুম বিল্লাহ–এর কণ্ঠে। তিনি বর্তমানে সরকারি মাদ্রাসা-ই-আলিয়াতে আল-কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কর্মরত।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের সঙ্গে এক বিশেষ আলাপচারিতায় তিনি ফিরে তাকান শৈশবের সেই ঈদ আনন্দের দিকে, যেখানে কোরবানি শুধু ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা নয়, ছিল সমাজ ও সম্প্রীতির এক বিশাল উৎসব।

“আমার গ্রামের বাড়ি পাবনা জেলার আটঘরিয়া উপজেলায়,” শুরু করলেন ড. মাসুম বিল্লাহ। “ঈদের সকালে সবাই স্নান করে আতর-সুরমা মেখে, নতুন জামা পরে হেঁটে হেঁটে যেতাম ভবানীপুর গ্রামের ঈদগাহে। দূরত্ব ছিল দেড়-দুই কিলোমিটার, কিন্তু হাঁটার সেই আনন্দই ছিল ঈদের শুরু।”

তিনি আরও জানান, “আমার দাদার সঙ্গে চাচাতো ভাইদের নিয়ে যখন হাঁটতাম, তখন রাস্তার পাশে বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হতো, হাসি-ঠাট্টা করতাম। এখনো চোখে ভাসে সেই মুহূর্তগুলো।”

“ছোট বয়সে নামাজে ঠিকভাবে দাঁড়াতে পারতাম না,” হেসে বলেন তিনি। “আমরা ভাইবোনেরা মাঠের এক পাশে দাঁড়িয়ে অন্য শিশুদের বদল খেলা, কাচের গুটি খেলা দেখতাম। নামাজ শেষে কোলাকুলি, কেউ বকশিস দিতেন, কেউ জিলাপি বা চানাচুর কিনে দিতেন—সেগুলো পেয়ে আমাদের আনন্দ যেন দ্বিগুণ হয়ে যেত।”

এক মজার স্মৃতি তুলে ধরে তিনি বলেন, “একবার আব্বা আতর কিনে দিয়েছিলেন। আমি সেটা এত বেশি করে মুখে-নাকে মেখেছিলাম যে চোখ দিয়ে পানি পড়তে শুরু করল। সেই ঘটনার কথা মনে হলে এখনো হেসে ফেলি।”

ঈদের দিন কোরবানির আয়োজনের বর্ণনা দিতে গিয়ে ড. মাসুম বলেন, “আমার চার চাচা মিলে একসঙ্গে কোরবানি করতেন। কোরবানির গোশত এক জায়গায়, ‘পরমানিকের বাড়ি’তে, সমাজের সব পরিবারের পক্ষ থেকে জমা হতো।

সেখানে বিকেলের দিকে বাচ্চারা খেলত, বড়রা খাতা-কলম নিয়ে বসে হিসাব করতেন—কার কত গোশত জমা হয়েছে, কীভাবে বিতরণ হবে। গোটা গ্রাম যেন ছিল এক বড় পরিবার।”

তিনি যোগ করেন, “আমরা ছোটরা তখন খেলতাম, জিলাপি-মুড়ি খেতাম। রাত পর্যন্ত বিলি-বণ্টনের কাজ চলত। জ্যোৎস্না রাত ছিল ঈদের আরেকটা সৌন্দর্য।”

“গরুর একাংশের পর্দা দিয়ে তৈরি হতো ঢোল,” স্মৃতির পাতা উল্টে বললেন তিনি। “আমার চাচারা তা বানিয়ে দিতেন, আমরা শুকিয়ে নিয়ে সারা গ্রামে বাজাতাম। ওটাই ছিল আমাদের সাউন্ড সিস্টেম!”

শৈশবের সেই দিনগুলোর সঙ্গে আজকের পার্থক্য নিয়ে কিছুটা আফসোস করে ড. মাসুম বলেন, “এখন দেখি প্রতিটি গ্রামে আলাদা আলাদা ঈদগাহ, দুই-তিনটা করে পর্যন্ত। একসময় গোটা গ্রামের কোরবানির গোশত একত্রে ভাগ হতো, এখন সবকিছু বিচ্ছিন্ন—একেক পরিবারে একেক বণ্টন। সমাজের যে ঐক্যবদ্ধ রূপটা ছিল, সেটা আজ অনেকটাই ফিকে হয়ে গেছে।”

“শৈশবের ঈদ মানে ছিল আন্তরিকতা, মিলেমিশে থাকার আনন্দ। ঈদের সেই সরলতা আর মিলনের আনন্দটাই ছিল আসল সৌন্দর্য। আজও সেই দিনগুলো বড় বেশি মনে পড়ে।”

বছরের শেষ দিনে কমল সোনার দাম
  • ০১ জানুয়ারি ২০২৬
রিজার্ভ ছাড়াল ৩৩ বিলিয়ন ডলার
  • ০১ জানুয়ারি ২০২৬
কমল জ্বালানি তেলের দাম
  • ০১ জানুয়ারি ২০২৬
খিলগাঁও ফ্লাইওভারে কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় পুলিশ সদস্য নিহত
  • ০১ জানুয়ারি ২০২৬
‘দুর্ভাগ্যজনকভাবে দেখলাম, এবারও পটকার শব্দে কেঁপে উঠছে চারপ…
  • ০১ জানুয়ারি ২০২৬
নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে আতশবাজি, রাজধানীতে ভবনে আগুন
  • ০১ জানুয়ারি ২০২৬