মায়ের পথে মেডিকেলে দ্বিতীয় হওয়া নাবিহা, বললেন— ‘আমার কোনো ফেসবুক অ্যাকাউন্ট নেই’

তাসনিয়া তৌফিক নাবিহা
তাসনিয়া তৌফিক নাবিহা  © টিডিসি ছবি

২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষের মেডিকেল ও ডেন্টাল ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করেছে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর। এতে জাতীয় মেধায় দ্বিতীয় হয়েছেন রাজধানীর হলি ক্রস কলেজের শিক্ষার্থী তাসনিয়া তৌফিক নাবিহা। রাজধানীর হলিক্রস স্কুল এবং হলিক্রস কলেজ থেকে এসএসসি ও এইচএসসি পাস করেছেন তিনি। বড় হয়েছেন ঢাকাতেই, তবে গ্রামের বাড়ি উত্তরের জেলা রাজশাহীতে। বাবা সরকারি চাকরি করেন এবং মা চিকিৎসক। তিনি একটি মেডিকেল কলেজের বায়োকেমিস্ট্রি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক। নাবিহা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে খুব একটা সক্রিয় নন। নেই কোনো ফেসবুক অ্যাকাউন্ট। ইনস্টাগ্রামে একটি অ্যাকাউন্ট থাকলেও সেভাবে সক্রিয় থাকেন না। নিজের সাফল্য নিয়ে দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসের সঙ্গে কথা বলেছেন তাসনিয়া তৌফিক নাবিহা, সাক্ষাৎকার নিয়েছেন নবাব আব্দুর রহিম

আপনার সাফল্যের পেছনের গল্প শুনতে চাই
আমি এবার প্রথম মেডিকেল পরীক্ষা দিয়েছি। এজন্য অনেক পড়তে হয়েছে। আমি সব সময় বইয়ের প্রতি অনেক বেশি ফোকাস করতাম। এদিক থেকে আমি বেশি ভালো ছিলাম। মূলত আগে থেকেই বইয়ের প্রতি আমার ভালোবাসা ছিল। এজন্য মূল বইভিত্তিক পড়াশোনা বেশি করেছি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে খুব একটা সক্রিয় নই। ফেসবুকেও কোনো অ্যাকাউন্ট নেই। ইনস্টাগ্রামে একটি অ্যাকাউন্ট থাকলেও সেভাবে সক্রিয় ছিলাম না। 

আপনার পড়াশোনার রুটিন কেমন ছিল?
আমি পরীক্ষা দেওয়া বা ক্লাসকে কখনো পড়াশোনার মধ্যে ধরতাম না। পরীক্ষা বা ক্লাসের বাইরেও পাঁচ থেকে সাত ঘণ্টা পড়াশোনা হত। আর যদি পরীক্ষাসহ ধরি, সেক্ষেত্রে ১০-১১ ঘণ্টা হয়ে যায়।

মাধ্যমিক-উচ্চ মাধ্যমিকে কেমন ফলাফল ছিল?
আমি এসএসসি-এইচএসসি দুইটার জন্যই ভালোই পড়াশোনা করেছি। অনেক ফাঁকিবাজিও করেছি, পড়াশুনাও করেছি। এক্টিভিটিজও ছিল ভালোই। তবে এসএসসি-এইচএসসিতে আমার রেজাল্ট একদম আহামরি অনেক ভালো হয়েছে, তা আমি বলব না। এসএসসিতে ভালো হয়েছিল, এইচএসসিতে একটু কম ভালো হয়েছে। কারণ আমার হাতের লেখাটা ভালো না। অনেক বড় সমস্যা এটা। এজন্য আমি ভালোই সাফার করেছি লাইফে। এখন যেহেতু সময় পাচ্ছি, চেষ্টা করব হাতের লেখাটা ভালো করার জন্য। এ ছাড়া আরও কিছু ঘাটতি তো ছিলই। তবে এভারেজে চিন্তা করলে রেজাল্ট ভালোই হয়েছে, তবে তা মনঃপূত হয়নি।

পড়তে হবে, পড়া লাগবে। নিজের যত্ন নিতে হবে। এটা একটা বড় বিষয়। আবার নিজের মন কি চায়, এটার পিছনে একটু টাইম দিয়ে ভাবতে হবে— আমি আদৌ ডাক্তার হতে চাই কিনা।-নাবিহা

চিকিৎসা পেশায় আগ্রহ কীভাবে?
মা ছাড়াও আমার আত্মীয়-স্বজনদের মধ্যেও বেশ কয়েকজন চিকিৎসক। ফলে ছোট থেকেই এই পেশাটা পরিচিত। এ ছাড়া, এই চিন্তাটা আমার মা-বাবা ছোটবেলা থেকেই আমার মাথায় ঢোকানোর চেষ্টা করেছিল। প্রথমে আমার তেমন একটা ইন্টারেস্ট ছিল না। তবে বড় হতে হতে আমি বুঝতে পারি, ডাক্তার হওয়াটা আমার জন্য সবচেয়ে বেস্ট। কারণ ছোটবেলা থেকেই খুব ইচ্ছা ছিল যে মানুষের সেবা করব। এ জন্য আমার কাছে মনে হয়েছে সবচেয়ে ভালো প্রফেশন হবে ডাক্তার হওয়া। চিকিৎসক হতে পারলে যেমন রেসপেক্টফুলি যে জিনিসটা আমার ইচ্ছা সে কাজটা আমি করতে পারব, একই সাথে ভালো রেপ্যুটেশন হবে, ইনকাম হবে। সবকছু মিলে ভালোই হয় যদি ডাক্তার হওয়া যায়।

পরবর্তীতে মেডিকেলের কোন স্পেশালিটিতে যাওয়ার ইচ্ছা?
যদিও স্পেশালিটি পরবর্তী পড়াশোনার ওপর ডিপেন্ড করে। তবে আমার সাইকিয়াট্রিতে পড়ার ইচ্ছা আছে। 

প্রস্তুতির জন্য কোনো কোচিংয়ে ভর্তি হয়েছিলেন?
মেডিকেল ভর্তি কোচিং উন্মেষে ক্লাস-পরীক্ষা দিয়েছি। আর রেটিনায় অনলাইন ব্যাচে ভর্তি ছিলাম। সেখানে নিয়মিত পরীক্ষাগুলো দিয়েছি। আর মেডিকোতে মডেল টেস্ট ব্যাচে ভর্তি ছিলাম। এর বাইরে আর কোনো কোচিংয়ে আমি ছিলাম না।

পরবর্তীতে যারা মেডিকেলে ভর্তি হতে চায়, তাদের জন্য কী পরামর্শ দেবেন?
পড়তে হবে, পড়া লাগবে। নিজের যত্ন নিতে হবে। এটা একটা বড় বিষয়। আবার নিজের মন কি চায়, এটার পিছনে একটু টাইম দিয়ে ভাবতে হবে— আমি আদৌ ডাক্তার হতে চাই কিনা। আমার যদি লক্ষ্য থাকে আমি ডাক্তার হব, সেক্ষেত্রে স্বতঃস্ফূর্তভাবেই আমার মধ্যে একটা ইচ্ছা জাগবে যে আরও বেশি ভালো করা উচিত। তার সাথে এটা ঠিক করে নিতে হবে ‘ড্রিম’ কার? আমার স্বপ্ন কি আমারই, নাকি আমার বাবা-মার চাপিয়ে দেওয়া?

পড়াশোনা অবশ্যই অনেক করতে হবে। এটা কোন মাফ নাই। তবে সেটা করতে গিয়ে নিজেকে ভুলে গেলে চলবে না। নিজেকে নিজে যত্ন নিতে হবে।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence