শাবিপ্রবিতে ভবনে ভবনে তালা, ভিসির পদত্যাগের দাবিতে উত্তাল

ভবনে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা
ভবনে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা  © সংগৃহীত

প্রশাসনিক ও একাডেমিক ভবনে তালা দিয়েছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা উপাচার্যকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন।

আজ সোমবার (১৭ জানুয়ারি) হল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হলেও তা না মেনে ক্যাম্পাসে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। এছাড়া ক্যাম্পাসে ও হল গুলোতে বিক্ষোভ ও অবস্থান করছে শিক্ষার্থীরা। এদিকে ক্যাম্পাসের উত্তল অবস্থার মধ্যেও প্রথম বর্ষের ভর্তি কার্যক্রম চলছে।

আরও পড়ুন: পদত্যাগ চেয়ে ঢাবির ঘৃণা স্তম্ভে অধ্যাপক ফরিদের কুশপুত্তলিকা

শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে সকাল থেকে আন্দোলনে উত্তাল হয়ে উঠে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। আজ সকাল থেকেই উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে ক্যাম্পাসে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।

উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে ‘যেই ভিসি গ্রেনেড ছুড়ে সেই ভিসির পদত্যাগ চাই, যেই ভিসি ছাত্র মারে সেই ভিসি চাই না, যেই ভিসি গুলি ছুড়ে সেই ভিসির পদত্যাগ চাই, শিক্ষার্থীর উপর হামলা কেন প্রশাসন জবাব চাই, সাস্টিয়ান সাস্টিয়ান এক হও এক হও, ক্যাম্পাস কারো বাপের না হল আমরা ছাড়বো না’ ইত্যাদি স্লোগানে ক্যাম্পাস উত্তাল করে তুলে শিক্ষার্থীরা।

আরও পড়ুন: দাবি আদায়ে ‘বুলেটের সামনে ফুল’ নিয়ে শাবিপ্রবির আন্দোলনকারীরা

এদিকে, বিকেলে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে আবারও মুখোমুখি অবস্থানে যায় শিক্ষার্থী এবং পুলিশ। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক দিয়ে আরও পুলিশ এবং জলকামান আসতে চাইলে শিক্ষার্থীরা তা আটকে দেয়।

উপাচার্যের বাসভবনের সামনে পুলিশের অবস্থান থেকে অল্প দূরত্বে ফুল হাতে নিয়ে শ্লোগান দিচ্ছেন তিন শতাধিক শিক্ষার্থী। এদিকে উপাচার্যের ভবনের ফটকের সামনে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অর্ধশতাধিক পুলিশও অবস্থান নিয়েছেন।

আরও পড়ুন: হলের কক্ষে তালা, জয়-লেখক থাকেন বিলাসী ফ্ল্যাটে

এ সময় শিক্ষার্থীদের হাতে হাতে ফুল দেখা যায়। তারা বলছিলেন, আমরা বুলেটের সামনে ফুল নিয়ে আমাদের দাবি আদায়ে এসেছি। আমরা দাবি আদায় না করে হলে ফিরব না। 

আন্দোলনরত এক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের এক দফা দাবি যে উপাচার্য শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালাতে পারে তাকে আমরা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে চাই না। যতক্ষণ না পর্যন্ত উপাচার্য পদত্যাগ করবেন ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাব। শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবে।

গতকাল রবিবার (১৬ জানুয়ারি) দুপুর আড়াইটা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া আইআইসিটি ভবনে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করে রাখেন শিক্ষার্থীরা। ভবনের তিন তলার ৩৩৩ নম্বর কক্ষে কিছু কর্মকর্তা ও শিক্ষকসহ তিনি অবস্থান করেন। বিকাল ৪টায় আইআইসিটি ভবনের সামনে উপাচার্যকে মুক্ত করতে পুলিশ উপস্থিত হয়। এ সময় ‘ক্যাম্পাসে পুলিশ কেন? প্রশাসন জবাব চাই’ স্লোগানে ফেটে পড়েন শিক্ষার্থীরা।

সন্ধ্যায় লাঠিপেটার পাশাপাশি, রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল ছুড়ে পুলিশ ছাত্রদের ছত্রভঙ্গ করে ভিসিকে উদ্ধার করে বাংলোতে পৌঁছে দেন। এতে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। এক শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। 

পরে রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমদ অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে সোমবার (১৭ জানুয়ারি) ১২টার মধ্যে সব শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেন। 


সর্বশেষ সংবাদ