আবরার ফাহাদের সেই পোস্টে পৌনে পাঁচ লাখ প্রতিক্রিয়া, দেড় লাখের বেশি মন্তব্য-শেয়ার

আবরার ফাহাদ ও তার শেষ স্ট্যাটাস
আবরার ফাহাদ ও তার শেষ স্ট্যাটাস  © সংগৃহীত

‘অনন্ত মহাকালে মোর যাত্রা অসীম মহাকাশের অন্তে’ বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদ তার নিজের ফেসবুক আইডির ইন্ট্রোতে এই লাইনটি দিয়ে নিজেকে ব্যাখ্যা করেছিলেন। তিনি দেশ ও দেশের বাইরের চলমান ইস্যুগুলো নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে মাঝেমধ্যে পোস্ট দিতেন। ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর দিনগত রাতে নিহতের একদিন আগে ফেসবুকে দেয়া তার একটি পোস্টে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে তৎকালীন কয়েকটি চুক্তির সমালোচনা করেছিলেন।

ওই পোস্টের জেরে বুয়েটের শেরেবাংলা হলে নৃশংসভাবে তাকে পিটিয়ে হত্যা করে ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মী। ৫ম মৃত্যুবার্ষিকীতে আগামীকাল সোমাবার (৭ অক্টোবর) তার কবর জিয়ারতসহ বিভিন্ন সংগঠন স্মরণসভাসহ নানা আয়োজন করেছে।

ফাহাদ নিহত হওয়ার পর তার সর্বশেষ ফেসবুক পোস্টটি এখন পর্যন্ত দেড় লাখের বেশি মন্তব্য-শেয়ারের পাশাপাশি পৌনে পাঁচ লাখ প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। আবরার ফাহাদ তার পোস্টে লিখেছিলেন, ১.৪৭ এ দেশভাগের পর দেশের পশ্চিমাংশেে কোন সমুদ্রবন্দর ছিল না।নতৎকালীন সরকার ৬ মাসের জন্য কলকাতা বন্দর ব্যবহারের জন্য ভারতের কাছে অনুরোধ করল। কিন্তু দাদারা নিজেদের রাস্তা নিজেদের মাপার পরামর্শ দিছিলো। বাধ্য হয়ে দুর্ভিক্ষ দমনে উদ্বোধনের আগেই মংলা বন্দর খুলে দেওয়া হয়েছিল। ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে আজ ইন্ডিয়াকে সে মংলা বন্দর ব্যবহারের জন্য হাত পাততে হচ্ছে।

২. কাবেরি নদীর পানি ছাড়াছাড়ি নিয়ে কানাড়ি আর তামিলদের কামড়াকামড়ি কয়েকবছর আগে শিরোনাম হয়েছিল। যে দেশের এক রাজ্যই অন্যকে পানি দিতে চাই না সেখানে আমরা বিনিময় ছাড়া দিনে দেড়লাখ কিউবিক মিটার পানি দিব।

৩. কয়েকবছর আগে নিজেদের সম্পদ রক্ষার দোহাই দিয়ে উত্তরভারত কয়লা-পাথর রপ্তানি বন্ধ করেছে অথচ আমরা তাদের গ্যাস দিব। যেখানে গ্যাসের অভাবে নিজেদের কারখানা বন্ধ করা লাগে সেখানে নিজের সম্পদ দিয়ে বন্ধুর বাতি জ্বালাব।

হয়তো এ সুখের খোঁজেই কবি লিখেছেন-

‘পরের কারণে স্বার্থ দিয়া বলি
এ জীবন মন সকলি দাও,
তার মত সুখ কোথাও কি আছে
আপনার কথা ভুলিয়া যাও।’

৫ম মৃত্যুবার্ষিকীর আগের দিন আজ রবিবার (৬ অক্টোবর) পর্যন্ত তাই এই পোস্টে ৪ লাখ ৭৯ হাজার প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। পাশাপাশি সেই পোস্টটি ৭৩ হাজার বার শেয়ার এবং ৯২ হাজার মন্তব্য দেখা গেছে।

উল্লেখ্য, আবরারের মৃত্যুর দুইদিন পর আইডি ‘রিমেম্বারিং’ করেছে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। সাধারণত কেউ মারা গেলে মৃত ব্যক্তির আইডি মুছে না দিয়ে স্মৃতি সংরক্ষণের জন্য আইডিটি রিমেম্বারিং করে রাখে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ।

অন্যদের মতো আবরারের ফেসবুক আইডিকেও তাই করা হয়েছে। তার শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি ফেসবুকের বার্তা– ‘আমরা আশা করি, যারা অবরারকে ভালোবাসেন তারা আবরারের স্মৃতি ও জীবন স্মরণে এ আইডি পরিদর্শনে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবেন।’


সর্বশেষ সংবাদ