বিএনপির দু’পক্ষের সংঘর্ষে পাল্টাপাল্টি মামলায় আসামি আ’লীগ নেতাকর্মীরাও

বিএনপির দু’পক্ষের সংঘর্ষ
বিএনপির দু’পক্ষের সংঘর্ষ  © সংগৃহীত

ভোলার চরফ্যাশনের দক্ষিণ আইচা থানা বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় পাল্টাপাল্টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। শুক্রবার ও বৃহস্পতিবার রাতে সাবেক সংসদ সদস্য নাজিম উদ্দিন আলম অনুসারী বিএনপি নেতা আনোয়ারুল ইসলাম চুট্টেু বাদী হয়ে ৬৬ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। অপর দিকে কেন্দ্রীয় যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়নের অনুসারী কেন্দ্রীয় যুবদলের সদস্য সিরাজুল ইসলাম সবুজ খান বাদী হয়ে ৭৩ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন বলে গতকাল শনিবার দুপুরে দক্ষিণ আইচা থানার ওসি এরশাদুল হক ভূইয়া এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। গত মঙ্গলবার রাতে দক্ষিণ আইচা থানার আইচা সদর বাজারে এসংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

মামলার তথ্য বিবরণে জানা যায়, বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা হলেও ওই মামলায় আসামি করা হয়েছে শিক্ষক, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, শ্রমিকলীগ ও আওয়ামীলীগসহ অঙ্গ সংগঠনের ১৯ নেতাকর্মীকে। দেখা দিয়েছে বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। আলম অনুসারীদের দায়ের করা মামলার বিবরণে জানা যায়,পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী তাদের প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিলে নয়ন অনুসারী দলীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা হামলা চালিয়ে ১৮ জন নেতাকর্মীকে আহত করেন। এঘটনায় আলম অনুসারী বিএনপি নেতা আনোয়ারুল ইসলাম ছুট্টেু বাদী হয়ে নয়ন অনুসারী বিএনপির দক্ষিণ আইচা থানার সভাপতি রেজাউল করিম খন্দকারসহ ৬৬ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। 

নেতাকর্মীরা হলেন, চর মানিকা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ইসমাইল ফকির, চর মানিকা পশ্চিম শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. রিপন ফকির, ছাত্রলীগের সহ-সাংগঠনিক মো. ইলিয়াছ, চর মানিকা ইউনিয়য়নের পশ্চিম শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. মনির হোসেন, চর মানিকা পূর্ব শাখার শ্রমিক লীগের সাংগঠনিক মো. শাজাহান, চরমানিকা ইউনিয়নে ছাত্রলীগের পশ্চিম শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবুল কালম, দক্ষিণ আইচা থানা যুবলীগের সদস্য মো. মহসিন শাল, চর মনিকা ইউনিয়নের শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. ইউসুব ফকির, থানা ছাত্রলীগের সহ-সাংগঠনিক তৈয়বুর রহমনা তুহিন, থানা  শ্রমিক লীগের সদস্য মো.শাহাজান, চর মানিকা যুবলীগের সাংগঠনিক মনির হোসেন, চর মানিকা ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক মো. জসিম , দক্ষিণ আইচা থানা যুবলীগের সদস্য প্রভাষক মো. ফিরোজ, দক্ষিণ আইচা থানা মৎস্যজীবিরীগের যুগ্ম আহবায়ক মো. কামাল, যুবলীগের সদস্য মো. সোহেল মাতাব্বর, দক্ষিণ আইচা থানা যুবলীগের সদস্য প্রভাষক ফরাদ হোসেন, হোসেন, দক্ষিণ আইচা থানা যুবলীগের সদস্য ইউপি সদস্য ফারুক ফরাজী। 

অপর দিকে কেন্দ্রীয় যুবদলের সদস্য সিরাজুল ইসলামের সবুজ খানের দায়ের করা মামলার বিবরণে জানা যায়, গত মঙ্গলবার রাতে আলম অনুসারী নেতাকর্মীরা তাদের প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশ হামলা চালিয়ে তাদের পক্ষের ২৮ নেতা কর্মীকে আহত করেছেন। ওই এঘটানায় ৭৩ জনকে আসামি করা হলেও ওই মামলায় আওয়ামী লীগের ২ নেতাকে আসামি করা হয়েছে। মামলার আসামি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা হলেন, দক্ষিণ আইচা থানা যুবলীগের সদস্য নীলিমা জ্যাকব মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক মো. নাসির উদ্দিন আরিফ, থানা যুবলীগের সদস্য মো. সারোয়ার। 

দক্ষিণ আইচা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সোহাগ আখন বলেন, বিএনপি নেতাকর্মীদের হয়রানির শিকার হয়ে তাদের অনেক নেতাকর্মীরা এলাকায় নেই। বাড়ি ছাড়া হয়ে আছেন অনেকে। এবং কেউ প্রবাসে রয়েছেন। কিন্তু বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে এতে আওয়ামী লীগের তাদের দুই পক্ষের দায়ের করা মামলায় আওয়ামী লীগের ১৯ নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। এমন মিথ্যা মামলার তীব্র নিন্দা জানান তিনি।

নয়ন অনুসারী দক্ষিণ আইচা থানা বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম খন্দকার মামলার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে নয়ন অনুসারী পক্ষের মামলার বাদী কেন্দ্রীয় যুবদলের সদস্য সিরাজুল ইসলাম জানান, ঘটনার সাথে জড়িত মূল অভিযুক্তদের জড়িয়ে আমাদের মামলাটি করা হয়েছে। যে দুজনকে আওয়ামী লীগ নেতা দাবি করা হচ্ছে মূলত তার বিএনপি কর্মী।

আলম অনুসারী দক্ষিণ আইচা থানার বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফারুক মাস্টার জানান, আওয়ামী লীগের এসব নেতা কর্মীর মধ্যে আমার জানা মতে তিনজন সংঘর্ষের সময় ছিলেন না। তবে অপর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ছিলেন বলে মামলার বাদী জানিয়ে এজাহার দাখিল করেছেন।  

দক্ষিণ আইচা থানার ওসি এরশাদুল হক ভূইয়া জানান, সংঘর্ষের ঘটনায় বাদীদের দেয়া এজাহার মতে দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি মামলা নেয়া হয়েছে। তবে মামলা দুটো তদন্তাধীন রয়েছে। সংঘর্ষে যারা জড়িত নয়। যাচাই করে পরবর্তীতে মামলা থেকে তাদেরকে অব্যাহতি দেয়া হবে।


সর্বশেষ সংবাদ