বেনাপোল দিয়ে ঢুকছে টনকে টন ভারতীয় চাল, স্বস্তি মিললেও বাজারে কমেনি দাম
- হুমায়ন কবির মিরাজ, বেনাপোল প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৯:৫০ AM
যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ফের পুরোদমে শুরু হয়েছে ভারতীয় চাল আমদানি। মাত্র দুই সপ্তাহের ব্যবধানে ৭১টি ট্রাকে করে ২ হাজার ৪৮৫ টন চাল দেশে প্রবেশ করেছে। সরকারের সাময়িক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার পর আমদানি শুরু হওয়ায় বন্দরে ফিরে এসেছে পুরনো কর্মচাঞ্চল্য। তবে এতো চাল এলেও বাজারে এখনো প্রত্যাশিতভাবে কমেনি দাম, পারেনি ভোক্তাদের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি।
বন্দর সূত্র জানায়, দেশে ইরি-বোরো মৌসুম শেষ হওয়ার পর চালের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়তে থাকে। এই পরিস্থিতিতে দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে সরকার গত ১২ আগস্ট আমদানিকারকদের বরাদ্দ ইস্যু করে। এরপর ২১ আগস্ট থেকে ভারতীয় ট্রাক বেনাপোল দিয়ে চাল আনতে শুরু করে। বর্তমানে বেনাপোল দিয়ে চাল আমদানি করছে মেসার্স উষা ট্রেডিং, মৌসুমী ট্রেডার্স, হাজী মুছা করিম অ্যান্ড সন্স, গণী এন্টারপ্রাইজ এবং প্রিয়ম এন্টারপ্রাইজ।
চাল আমদানিকারক গণী এন্টারপ্রাইজের আব্দুস সামাদ বলেন, ভারত থেকে চাল আসার ফলে বাজারে ইতোমধ্যে কিছুটা প্রভাব পড়েছে। সরবরাহ অব্যাহত থাকলে দাম আরও কমবে বলে আশা করা যায়। তবে অন্য এক আমদানিকারক শামীম আহমেদ জানান, ভারতে আগেই দাম বাড়ায় তারা খুব একটা লাভবান হতে পারছেন না। বর্তমানে সম্পা কাটারি চাল কেজি ৭০–৭১ টাকা, স্বর্ণা ৫২–৫৩ টাকা এবং আঠাশ চাল ৫৫–৫৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
খুচরা বাজারেও অল্প পরিমাণে পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। নাভারন বাজারের ব্যবসায়ী সুবহান আলী জানান, এক সপ্তাহ আগেও সম্পা কাটারি বিক্রি হয়েছে ৭২ টাকা কেজিতে, এখন তা নেমে এসেছে ৭১ টাকায়। বাগআঁচড়া বাজারের দিনমজুর শহিদুল ইসলাম বলেন, চালের দাম কেজিতে দেড় টাকা পর্যন্ত কমেছে, তবে সাধারণ মানুষের আশা ছিল আরও বেশি কমবে।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএন্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান বলেন, চার মাস পর চাল আমদানি শুরু হওয়ায় বন্দরে আবারও গতি ফিরেছে। বন্দর কর্তৃপক্ষও আমদানিকৃত চাল দ্রুত খালাসের নির্দেশনা দিয়েছে। বন্দরের উপ-পরিচালক মামুন কবীর তরফদার জানান, ২১ আগস্ট থেকে ৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রতিদিন চালবাহী ট্রাক প্রবেশ করেছে এবং এই সময়ের মধ্যে দ্রুত ছাড় করানোর প্রক্রিয়া চলেছে। চলতি বছরের ১৫ এপ্রিলের পর এই প্রথম বেনাপোল দিয়ে চাল আমদানি হলো।
যদিও ভারত থেকে চাল আমদানির ফলে সরবরাহ কিছুটা বেড়েছে এবং বাজারে সামান্য স্বস্তি এসেছে, তবে এখনও দাম প্রত্যাশিতভাবে কমেনি বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, আমদানি অব্যাহত থাকলে বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে এবং সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে থাকবে নিত্যপ্রয়োজনীয় এই পণ্য।