জাহাজ আটকে ভয়াবহ ভাঙন: কবরস্থানের পর এবার সাগরে বিলীন হওয়ার শঙ্কায় মসজিদ-এতিমখানা

ভয়াবহ ভাঙন
ভয়াবহ ভাঙন  © টিডিসি ফটো

চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের উপকূলে ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। সাম্প্রতিক ঘূর্ণিঝড় ‘শক্তি’র পর সৃষ্ট প্রবল জোয়ার ও স্রোতে বঙ্গোপসাগরে ভাসতে থাকা দুটি জাহাজ উপকূলে এসে আটকে পড়ায় ভাঙন পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। ইতোমধ্যে শতবর্ষী একটি কবরস্থান সাগরে বিলীন হয়ে গেছে। হুমকির মুখে রয়েছে উপকূলবর্তী মসজিদ, এতিমখানা ও হেফজখানা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় ‘শক্তি’র পর ‘মারমেইড-৩’ নামের একটি বার্জ ও ‘নাভিমার-৩’ নামের একটি টাগবোট গহিরা উপকূলের উঠান মাঝির ঘাটে এসে আটকে পড়ে। প্রায় দেড় মাস অতিক্রম হলেও জাহাজ দুটি অপসারণে এখনো কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেয়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। ফলে জোয়ারের প্রবল ধাক্কায় উপকূলীয় মাটি ভেঙে পড়ছে, ধসে যাচ্ছে প্রতিরক্ষামূলক জিও ব্যাগও।

মসজিদ কমিটির সদস্য নুরুল আলম বলেন, “জাহাজ দুটি আটকে পড়ার পর থেকেই এলাকাবাসী আতঙ্কে রয়েছে। মসজিদ, এতিমখানা ও হেফজখানার অস্তিত্ব এখন সাগরের চোয়ালে। জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা না নিলে সবকিছু সাগরে বিলীন হয়ে যাবে।”

জানা গেছে, জাহাজ দুটি বহুদিন ধরে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের জব্দ তালিকাভুক্ত। দীর্ঘ সময় ধরে সেগুলো বঙ্গোপসাগরের বিভিন্ন এলাকায় ভাসমান অবস্থায় ছিল। ঘূর্ণিঝড় ‘শক্তি’র আঘাতে তা রায়পুর উপকূলে এসে আটকে পড়ে। বর্তমানে কোস্টগার্ড ও বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্যরা পাহারায় থাকলেও অপসারণে দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি হয়নি।

একটি হেফজখানার পরিচালক আজগর আলী বলেন, “৯১ সালের প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড়েও এই মসজিদ ও কবরস্থান টিকে ছিল। এবার দুইটি পরিত্যক্ত জাহাজের কারণে শতবর্ষের স্মৃতিগুলো হারিয়ে যাচ্ছে। পানির স্রোতে দু’টি পুরোনো কবর উন্মুক্ত হয়ে কঙ্কাল ভেসে ওঠে, পরে তা অন্য কবরস্থানে দাফন করতে হয়েছে।”

এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড চট্টগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী শওকত ইবনে শাহীদ বলেন, “জাহাজ দুটির অবস্থানের কারণে ভাঙন দ্রুত বেড়ে যাচ্ছে। জিও ব্যাগ দিয়ে রক্ষা দেওয়ার চেষ্টা করছি এবং চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষকে বারবার অনুরোধ করছি যেন দ্রুত জাহাজ দুটি অপসারণ করা হয়।”

স্থানীয়রা বলছেন, অবিলম্বে ব্যবস্থা না নিলে শুধু ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান নয়, উপকূলীয় শতাধিক পরিবারও হারাবে তাদের ঘরবাড়ি ও বসতভিটা।


সর্বশেষ সংবাদ