বর্ষার আগেই কুড়িগ্রামে নদী ভাঙন শুরু, দিশেহারা কৃষকরা

ব্রহ্মপুত্র, ধরলা ও তিস্তা নদীতে বাড়ছে ও ইনসেটে তলিয়ে যাওয়া ফসল নিয়ে বাড়ি ফিরছেন কৃষক
ব্রহ্মপুত্র, ধরলা ও তিস্তা নদীতে বাড়ছে ও ইনসেটে তলিয়ে যাওয়া ফসল নিয়ে বাড়ি ফিরছেন কৃষক  © টিডিসি ফটো

কুড়িগ্রামে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধিতে শুরু হয়েছে ব্রহ্মপুত্র, ধরলা ও তিস্তা নদী তীরবর্তী এলাকায় ভাঙন শুরু হয়েছে। অপর দিকে বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে কৃষকের ফসল। সবমিলিয়ে দিশেহারা কুড়িগ্রামের কৃষকেরা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বর্ষা শুরুর আগেই ব্রহ্মপুত্র, ধরলা ও তিস্তার ভাঙনে বিলীন হচ্ছে উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের মোল্লার হাট, রসুলপুর, কড্ডার মোড় এলাকাসহ কুড়িগ্রাম সদর, চিলমারী,রাজারহাট, রৌমারী ও রাজিপপুর উপজেলার বেশ কিছু এলাকা।

গত কয়েক দিনে এসব এলাকায় নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে শতাধিক বাড়ি ঘর, আবাদি জমিসহ গাছপালা। ভাঙ্গনে হুমকির মুখে পড়েছে রাস্তাঘাট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ-মাদরাসা কমিউনিটি ক্লিনিকসহ বিভিন্ন স্থাপনা। 

আরও পড়ুন: জলাবদ্ধতা নিরসনে শতকোটি টাকার প্রকল্প, বাধা সরু ব্রিজ-কালভার্ট

এসব ভাঙন থেকে নদীর পাড় রক্ষা করা গেলে মানুষের সম্পদের ক্ষতি যেমন কমবে, তেমনি সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনাও রক্ষা পাবে। এমন কাথাই বলছেন, নদী পাড়ের মানুষজন।

অন্যদিকে কুড়িগ্রামে গত একসপ্তাহ ধরে থেমে থেমে বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। ফলে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে নদী তীরবর্তী এলাকায়। যার কারণে নিম্নাঞ্চলের অনেক ফসল পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। কৃষি বিভাগ জানিয়েছে বৃষ্টির পানিতে প্রায় ৩শ হেক্টর জমির বিভিন্ন ফসল পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে।

উলিপুর উপজেলার গড়াই পিয়ার এলাকার তিস্তার অববাহিকার কৃষক খালেক বলেন, আমার তিন বিঘা জমির বাদাম পানিতে তলিয়ে গেছে। লোকজন নিয়ে পানির নিজ থেকে বাদাম তুলছি। হঠাৎ পানি বাড়ার কারণে আমার অনেক ক্ষতি হয়ে গেলো।

উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের নুর আলম বলেন, এখানকার ভাঙনকবলিত মানুষজন তাদের ঘরবাড়ি সরিয়ে নিচ্ছে। অনেকের জায়গা না থাকায় অন্যের বাড়িতে কিংবা খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। ভাঙন আতঙ্কে থাকা মানুষজন মানববন্ধন সভা-সমাবেশ করেও কোনো প্রতিকার মিলছে না।

বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের (ইউপি) চেয়ারম্যান বাবলু মিয়া বলেন, বন্যার আগেই ভাঙন প্রতিরোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া না হলে, বন্যার ক্ষতির পাশাপাশি ভাঙনের কারণে নিঃস্ব হয়ে পড়বে এখানকার মানুষ। এ ছাড়াও গত ১৫ বছর ধরে ভাঙতে ভাঙতে আমার ইউনিয়নের ৮০ ভাগ নদীতে বিলীন হয়েছে। 

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান বলেন, কুড়িগ্রামের ১০-১২টি পয়েন্টে নদ-নদীর ভাঙন রয়েছে। ভাঙন কবলিত এলাকায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।


সর্বশেষ সংবাদ