রামনাবাদ নদীতে সেতু নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন

এলাকাবাসীর মানববন্ধন
এলাকাবাসীর মানববন্ধন  © টিডিসি

পটুয়াখালী জেলার রামনাবাদ নদীর ওপর গলাচিপা সেতু নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন স্থানীয় লোকজন। আজ মঙ্গলবার (২৭ মে) সকাল ১০টায় গলাচিপা ফেরিঘাটের সামনের সড়কে ‘সর্বস্তরের জনগণ’-এর ব্যানারে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। 

মানববন্ধনে রাজনৈতিক নেতাকর্মী, পেশাজীবী, সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধি ও স্থানীয় লোকজন দল-মতনির্বিশেষে  অংশ নেন। ব্যানার, প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে তারা রামনাবাদ নদীর ওপর দ্রুত সেতু নির্মাণের জোর দাবি জানান।

মানববন্ধনে বক্তব্য দেন জামায়াতে ইসলামীর সিনিয়র নেতা অধ্যাপক মু. শাহ আলম, উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা ডা. মো. জাকির হোসেন, বিএনপির নেতা আব্দুস সোবহান, পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি ও কাউন্সিলর রফিকুল ইসলাম খান, সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়াউর রহমান জিয়া, শ্রমিক অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক মো. আমীর হোসেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের পৌর সভাপতি মো. নাজমুল হুদা রিপন, ইমাম পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা শহিদুল ইসলাম বাদল।

এ ছাড়া বক্তব্য দেন উপজেলা হেফাজতে ইসলামের সভাপতি মাওলানা মো. শফিকুল ইসলাম, মাওলানা মো. ছাইফুর রহমান ছাইদী, ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাব্বির আহমেদ প্রিতম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী শাহ জুবায়ের আবদুল্লাহ, তারিকুল ইসলাম মুন্না প্রমুখ।

আরও পড়ুন: শিক্ষকদের উৎসব ভাতার প্রস্তাব পাঠানো নিয়ে যা জানাল ইএমআইএস সেল

বক্তারা বলেন, রামনাবাদ নদীতে সেতু গলাচিপাসহ গোটা দক্ষিণাঞ্চলের প্রাণের দাবি। এই সেতু বাস্তবায়ন হলে গলাচিপা, দশমিনা, রাঙ্গাবালী, বাউফলসহ আশপাশের ১০ লক্ষাধিক মানুষ উপকৃত হবেন। উন্নত যোগাযোগব্যবস্থার মাধ্যমে চিকিৎসা, শিক্ষা, ব্যবসা ও প্রশাসনিক সেবায় গতি আসবে। ২০২২ সালে একনেক সভায় প্রকল্প অনুমোদন পেলেও দুই বছরেও কাজ শুরু হয়নি। প্রকল্প অনুযায়ী ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে কাজ শুরু ও ২০২৫ সালের ডিসেম্বরে মধ্যে প্রকল্প বাস্তবায়নের কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি নেই।

তারা আরও বলেন, জোয়ারে ফেরিঘাট তলিয়ে যাওয়ায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা বন্ধ থাকে যান চলাচল। অ্যাম্বুলেন্স আটকে থাকে ঘাটে, সেতু না থাকায় পথেই অনেক রোগীর মৃত্যু হয়। গর্ভবতী নারীদের ফেরিঘাটেই সন্তান জন্ম দেওয়ার মতো হৃদয়বিদারক ঘটনাও ঘটেছে। স্কুলগামী শিক্ষার্থী, শিশু ও নারীদের চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হয় সবচেয়ে বেশি। নৌকা পারাপারেও রয়েছে ভোগান্তি, প্রায়ই ঘটে দুর্ঘটনা।

আরও পড়ুন: সাত কলেজের ভর্তি পরীক্ষার তারিখ শিগগিরই, কমতে পারে আসন

উল্লেখ্য, ৮৮২.৮১ মিটার দীর্ঘ ও ১০.২৫ মিটার প্রশস্ত প্রস্তাবিত পিসি গার্ডার সেতুটির প্রাক্কলিত ব্যয় শুরুতে ছিল ২০৪.৩৬ কোটি টাকা, যা পরে বেড়ে দাঁড়ায় ৫২১.২৫ কোটি টাকায়। সেতুটি নির্মাণের দায়িত্বে রয়েছে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সওজ)। কিন্তু প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হতে চললেও এখনো দৃশ্যমাণ কোনো কাজ হয়নি। সেতু না থাকায় স্থানীয় জনগণ চরম দুর্ভোগের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। নদী পারাপারে বর্তমানে একমাত্র ভরসা নৌকা ও জরাজীর্ণ ফেরি, যা বর্ষায় হয়ে ওঠে প্রাণঘাতী।


সর্বশেষ সংবাদ