ভাঙা প্রাচীন বাড়িটি সত্যজিৎ রায়ের পূর্ব পুরুষের নয়: ডিসি
- ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১৭ জুলাই ২০২৫, ১২:১২ PM , আপডেট: ১৯ জুলাই ২০২৫, ০৬:৩৯ AM
ময়মনসিংহ নগরীর হরিকিশোর রায় রোডে ভেঙে ফেলা একটি প্রাচীন বাড়ি নিয়ে নানা ধরনের আলোচনা চলছে। তবে পুরোনো প্রাচীন বাড়িটি সত্যজিৎ রায়ের পূর্ব পুরুষদের নয় বলে সভা করে জানিয়েছেন ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক (ডিসি)।
বুধবার (১৬ জুলাই) বিকেলে সভায় জেলা প্রশাসক (ডিসি) মুফিদুল আলম বলেন, ‘যে জমি বা বাড়ি সত্যজিৎ রায় বা তাঁর পূর্ব পুরুষের দাবি করা হচ্ছে, সরকারি রেকর্ড ও নথিপত্র যাচাই-বাছাই করে কোথাও তাঁদের কারও নাম পাওয়া যায়নি। আরএস রেকর্ডে এটি বাংলাদেশ সরকারের নামে লিপিবদ্ধ।’
জেলা প্রশাসক বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে এটি সত্যজিৎ রায় বা তাঁর পূর্বপুরুষের বাড়ি নয়। তাঁরা কখনো এখানে ছিলেন না। আশা করছি, এর মাধ্যমে সবাই সত্যটা জানতে পারবে।’
ময়মনসিংহ নগরে থাকা শশীলজের পেছনের সড়কের নাম হরিকিশোর রায় রোড। হরিকিশোর রায় ছিলেন কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার মসূয়া জমিদারবাড়ির জমিদার। তিনি বাংলা শিশুসাহিত্যের অন্যতম পথিকৃৎ উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী, সুকুমার রায় ও সত্যজিৎ রায়ের পূর্বপুরুষ।
এ সড়কে প্রাচীন একতলা একটি ভবন ১৯৮৯ সাল থেকে বাংলাদেশ শিশু একাডেমি ব্যবহার করা শুরু করে। ২০০৭ সালের পর থেকে ঝুঁকি বিবেচনায় সেটিতে আর কার্যক্রম চলছিল না। সম্প্রতি নিজস্ব স্থাপনা নির্মাণের জ্যন্য প্রাচীন বাড়িটি ভাঙা শুরু করে শিশু একাডেমি। গত সোমবার প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের শশীলজ জাদুঘরের মাঠ কর্মকর্তা সাবিনা ইয়াসমিন বাড়িটি ভাঙা সম্পর্কে তথ্য চেয়ে জেলা শিশুবিষয়ক কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদন করেন।
আরও পড়ুন: নিয়োগে রাজনৈতিক পরিচয় জিজ্ঞেস করা হবে না
সাবিনা ইয়াসমিন বলেছিলেন, ‘রায় পরিবারের ঐতিহাসিক বাড়ি এটি। প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন হিসেবে বাড়িটি এখনো তালিকাভুক্ত না হলেও সত্যজিৎ রায়ের বংশধরের বাড়ি হিসেবে শতবর্ষ প্রাচীন বাড়িটি ছিল। আমাদের জরিপে এসব স্থাপনা প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন হিসেবে তালিকাভুক্ত হতে পারে।’
বিষয়টি নিয়ে সমালোচনাও হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ডিসি কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে সভার আয়োজন করা হয়। এতে লেখক, গবেষক, সচেতন নাগরিক, প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ ও শিশু একাডেমির কর্মকর্তাসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা অংশ নেন।
আলোচনা শেষে ডিসি মুফিদুল আলম বলেন, ২০০৮ সালে এটি মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ শিশু একাডেমির নামে বন্দোবস্ত করা হয়েছে। তাদের নামে দলিল সম্পাদিত হয়েছে। তারা যথাযথ প্রক্রিয়ায় মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন সাপেক্ষে ভবনটি ভাঙার কার্যক্রম শুরু করে। নিয়মের কোনো ব্যত্যয় ঘটেনি।